দীর্ঘ দু’ বছর ধরে লড়াই, অনিশ্চয়তা আর সামাজিক উপহাস—সবকিছু কাটিয়ে অবশেষে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার জানিয়ে দিল, কিছু অনিয়ম থাকলেও একযোগে সবার চাকরি বাতিল করার সিদ্ধান্ত সঙ্গত নয়। ফলে বহাল থাকল তাদের চাকরি।
রায়ের পরই আদালত চত্বরে উচ্ছ্বাসের বিস্ফোরণ। ভোর থেকেই হাইকোর্টের বাইরে ভিড় জমিয়েছিলেন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিক্ষক-শিক্ষিকারা। উৎকণ্ঠায় কাটছিল প্রতিটি মুহূর্ত। কিন্তু রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই কেউ আনন্দে চিৎকার করে উঠলেন, কেউ আবার কান্নায় ভেঙে পড়ে সহকর্মীদের জড়িয়ে ধরলেন। অনেকের কথায়, দীর্ঘদিনের অপমান–অস্থিরতার পর এ যেন “সত্যের জয়”।
রায় ঘোষণার পর জেলার পর জেলা রঙে রঙে রঙিন—শিলিগুড়ি থেকে নদিয়া, হুগলি থেকে বর্ধমান—প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকারা অকাল হোলিতে মেতে উঠলেন। আন্দোলনকারীদের কথায়, যে রং জীবনে ফিকে হয়ে গিয়েছিল, আজ তা ফিরে এল।
২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে প্রায় ৪২ হাজার ৫০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল প্রাথমিকে। সময়ের সঙ্গে সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের মে মাসে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকের চাকরি খারিজের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি রাজ্যকে তিন মাসের মধ্যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরুর কথাও বলা হয়। কিন্তু সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে শিক্ষকরা। তাদের যুক্তি ছিল—ব্যক্তিগত দোষ না থাকলেও হাজার হাজার শিক্ষককে শাস্তি দেওয়া ন্যায়সঙ্গত নয়। ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার সেই বক্তব্যই মান্যতা দিল। শিক্ষক মহলের দাবি, এই রায় শুধু চাকরি রক্ষা নয়—এটি সম্মান ফিরে পাওয়ার লড়াইয়ের সফল পরিণতি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তাই আজ একটাই সুর—“দীর্ঘ লড়াইয়ের শেষে সত্যিই সত্যের জয়।”
আরও পড়ুন – ছত্তিশগড়ে মাওবাদী বিরোধী অভিযান: নিহত ১২ জঙ্গি, প্রাণ গেল ৩ জওয়ানের
_
_
_
_
_
_
