Monday, November 3, 2025

দলে যোগ দেওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিজেপি ছাড়লেন ফুটবলার মেহতাব হোসেন। তিনি বিজেপিতে না থাকার কথা প্রথম জানায় ‘এখন বিশ্ব বাংলা সংবাদ’। কেন বিজেপি ছাড়লেন তা তিনি ব্যাখ্যা করেছেন নিজেই। বিজেপি ছাড়ার কথা পোস্ট করেন নিজের ফেসবুক পেজে।

ফেসবুকে পোস্টে তিনি লিখেছেন, “যে মানুষগুলো আমাকে মেহতাব করে তুলেছিল সেই মানুষগুলোর পাশে থাকার জন্যই আমার রাজনীতিতে প্রবেশ করার ইচ্ছা । মনে হয়েছিল, রাজনীতিতে এলে হয়তো আরও বেশি মানুষের কাছে পৌছতে পারব । সারা পৃথিবীর এই খারাপ সময়ে সামর্থ্য অনুযায়ী বহু মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি , তবুও যেন একা পেরে উঠছিলাম না । চারিদিকে ওই অসহায় মুখগুলো আমার রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। চারপাশের সংখ্যাটা রোজ বাড়ছে ।

তাই হঠাৎ করেই রাজনীতিতে যোগ দিই আমি । তবে তারপর অদ্ভুত একটা উপলব্ধি হয় । যাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমার রাজনীতিতে আসা, তারাই আমাকে অনুরোধ করে, আমি যেন রাজনীতিতে সরাসরি না যাই । মানে, কোথাও গিয়ে তাদের ভাবাবেগ যেন আমাকে রাজনীতিবিদ হিসেবে দেখতে চাইছে না । তাদের কাছে আমি এখনও ফুটবলার , মিডফিল্ড জেনারেল । ওদের ভালবাসাই আমাকে মেহতাব করে তুলেছিল । আমার পরিশ্রম আর স্বপ্নকে ওই মাঠে-ময়দানের মানুষগুলোই বাস্তবে পরিণত করেছিল । তাদের ওদের অনুরোধ আমাকে অনেক কিছু শিখিয়ে গেল । মনে হল , আমি যাদের জন্য রাজনীতিতে এলাম তারাই আমাকে এই বেশে দেখতে চাইছে না । তাহলে কিসের জন্য আমি নিজের সত্ত্বাটা বদলাতে চাইছি? কিসের জন্য নিজেকে এক লহমায় আলাদা করতে চাইলাম?

তাই অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম, রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেব । মাঝেমধ্যে , বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্রতর স্বার্থকে ত্যাগ করতে হয় । আমিও তাই করতে চাই । নিজের রাজনৈতিক পরিচয়ের থেকে আমার কাছে ওই মানুষগুলোর ভালবাসা অনেক বেশি দামী, অনেক বেশি প্রিয় । ওই উন্মুক্ত সবুজ মাঠই আমার জায়গা , ওই গ্যালারির গগনভেদী “মেহতাব-মেহতাব” চিৎকারই আমার পছন্দের শ্লোগান । সেই শ্লোগানে অন্যকিছু মিশুক তা আমি চাই না । আমি চাইনা আমার ভালবাসার ও খুব কাছের লোকগুলো এইভাবে দুরে সরে যাক । ওদের জন্যই তো আমার যাবতীয় লড়াই , ওরাই যখন চাইছে না তখন নিজেকে ‘রাজনীতিবিদ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ব্যর্থ চেষ্টা না করাই ভাল ।

আমি চাই না আমার জীবনটা বদলে যাক । আমার পরিবার মৌমিতা, জিদান, জাভি কেউই সমর্থন করেনি আমার আকস্মিকতা । ঠিক যেভাবে সাধারণ মানুষ কষ্ট পেয়েছে , সেভাবে ওরাও পেয়েছে । সকলকে নিয়েই তো আমার পরিবার। পরিবারের মুখগুলো কষ্ট পেলে আমিও ভেঙে করি, এটাই স্বাভাবিক- এটাই জীবনের নিয়ম। আমার কাছে অন্য কোনও কিছুর থেকে ওই ‘মিডফিল্ড জেনারেল ‘ নামটা অনেক বেশি প্রিয় , অনেক বেশি আপন ।

কারোর প্রতি কোনও ঘৃণা নেই , রাগ নেই । বাইরের কেউ এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্যও করছে না । সম্পূর্ণ নিজের ইচ্ছাতেই সরে যাচ্ছি এই রাজনীতির ময়দান থেকে । যেভাবে মানুষের পাশে থেকেছি সেভাবে ভবিষ্যতেও থাকব ।

আজ থেকে কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমি যুক্ত নই । আমার এই সিদ্ধান্তের জন্য আমার সকল শুভানুধ্যায়ীদের কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থনা করছি।”

Related articles

ঝুলনকে নিয়েই সাফল্যের উদযাপন স্মৃতিদের, বাঙালির গর্ব বিশ্বকাপজয়ী রিচা

পঙ্কজ রায় থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা ঝুলন গোস্বামী, ক্রিকেট বিশ্বের দরবারে বাংলার মুখ অনেকেই। কিন্তু সৌরভ-ঝুলনদের পাশে ছিল...

মায়ানগরীতেই স্বপ্নপূরণ, এক নজরে ব্যাটে বলে ধামাকাদার ম্যাচের স্কোর বোর্ড

মুম্বইকে বলা হয় মায়ানগরী। কত স্বপ্ন এখানে সফল হয়। এই মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ২০১১ সালে ২ এপ্রিল ওয়ানডে...

ক্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের মেয়েরা: শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর ও ক্রীড়ামন্ত্রীর

রবিবারের মধ্যরাতে রচিত হল নতুন ইতিহাস। প্রথমবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের মহিলা ক্রিকেট ব্রিগেড। ইতিহাস রচনা হওয়ার রাতে ভারতীয়...

দীপ্তি-শেফালিদের হাত ধরেই বিশ্ব জয়ের তৃপ্তি, ইতিহাস সৃষ্টি হরমনপ্রীতদের

বিশ্বসেরা ভারত(India)। মহিলাদের একদিনের বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন টিম ইন্ডিয়া। মুম্বই ইতিহাস সৃষ্টি ভারতীয় মহিলা দলের। প্রোটিয়াদের ...
Exit mobile version