কোরোনিল নাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আদালতের, রামদেবের সংস্থার জরিমানা ১০ লক্ষ টাকা

নভেল কোরোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বাজারে ওষুধ নিয়ে আসে পতঞ্জলি । সেই ওষুধের নাম দেওয়া হয় কোরোনিল ট্যাবলেট । কিন্তু, চেন্নাইয়ের একটি প্রাইভেট লিমিডেট সংস্থা আদালতে অভিযোগ করে, ‘CORONIL-92 B’ নামে তাঁদের একটি উপাদান আছে৷ এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে চেন্নাই আদালত জানিয়ে দিল কোরোনিল নাম ব্যবহার করতে পারবে না পতঞ্জলি । একইসঙ্গে কোরোনিলকে করোনার ওষুধ বলায় পতঞ্জলিকে 10 লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত ।
এখনও বিশ্বের কোথাও করোনার প্রতিষেধক আসেনি ৷ পৃথিবীর তাবড় তাবড় বিজ্ঞানীরা নিরন্তর গবেষণা করে চলেছেন করোনা প্রতিষেধক বের করতে । এই পরিস্থিতিতে যোগগুরু বাবা রামদেবের সংস্থা পতঞ্জলি হঠাৎই ঘোষণা করে দেয়, তাদের আয়ুর্বেদিক ওষুধ কোরোনিল করোনা প্রতিরোধে সক্ষম । পতঞ্জলি থেকে দাবি করা হয়, তাদের তৈরি কোরোনিল সেবন করলে করোনার বিরুদ্ধে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো সম্ভব ৷ শুধু তাই নয়, পতঞ্জলি থেকে দাবি করা হয়, কোরোনা আক্রান্ত ব্যক্তিও এই ওষুধ খেলে মাত্র 7 দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন । কোনও তথ্য প্রমাণ ও মানব শরীরে তার কোনও পরীক্ষা ছাড়াই রামদেবের সংস্থা হঠাৎ এই দাবি করে বসে ৷ এর জেরে আয়ুষ মন্ত্রক পতঞ্জলির কোরোনিলের বিজ্ঞাপন বন্ধের নির্দেশ দেয় । কোনও তথ্য প্রমাণ ছাড়াই পতঞ্জলির এই দাবিতে তাদের বিরুদ্ধে FIRও দায়ের করা হয় ৷ FIR হয় যোগগুরু রামদেবের বিরুদ্ধেও। চাপে পড়ে পতঞ্জলি নিজেদের দাবি থেকে পিছু হটে ৷ পতঞ্জলি থেকে পরে স্বীকার করে নেওয়া হয়, তারা করোনার কোনও ওষুধ বের করেনি। এই ধরনের ভুয়ো দাবি করায় পতঞ্জলিকে ভর্ৎসনা করেন বিচারপতি সি ভি কার্তিকেয়ন । আদালত বলে, মানুষের ভয় ও আতঙ্ককে কাজে লাগিয়ে লাভের পিছনে ছুটছে পতঞ্জলি ৷ যেখানে তাদের ট্যাবলেট শুধু জ্বর, ঠান্ডা থেকে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, সেখানে তারা বলছে এই ট্যাবলেট করোনা প্রতিরোধ করে ।
সাধারণ জ্বর-কাশির ওষুধের লাইসেন্স পেয়েছিল রামদেবের এই সংস্থা ৷ আর সেই লাইসেন্সকে কাজে লাগিয়ে করোনার ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করে বসে পতঞ্জলি ৷ উত্তরাখণ্ড ড্রাগ কন্ট্রোলের পক্ষে এজন্য এই সংস্থাকে নোটিস পাঠানো হয় ৷ নোটিস পেয়েই টনক নড়ে রামদেবের সংস্থার ৷ সঙ্গে সঙ্গে এই সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা করোনার কোনও ওযুধ আবিষ্কার করেনি ৷ করোনা কিট বলেও কোনও ওষুধ বাজারে না আনার কথা ঘোষণা করা হয়। এই সংস্থা থেকে ‘দিব্যা শ্বাসরি ভাতি’, ‘দিব্যা করোনিল ট্যাবলেট’, ‘দিব্যা অণু তেল’ নামে তিনটি প্যাকেটের কথা বলা হয় ৷
বিচারপতি বলেন, ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রি অফিস থেকে কোরোনিল নামে কোনও ট্রেড মার্ক রয়েছে কি না তা অত্যন্ত সহজে যাচাই করা যেত । এই মামলার রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি সিভি কার্তিকেয়ন পতঞ্জলিকে 10 লাখ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা আদিয়ার ক্যানসার রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং অরুম্বক্কমের গভর্নমেন্ট যোগা অ্যান্ড নেচারোপ্যাথি মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এই আদালত ৷

Previous articleরাশভারী মন্ত্রী নন, শ্যামলকাকু ছিলেন স্নেহশীল বন্ধুর বাবা-পাড়ার কাকুর মতো
Next articleঅভিযোগ নিয়ে লালবাজারে কুণাল, জেনে নিন কেন