Friday, December 19, 2025

মৃত্যুর আগে শীর্ষ নেতৃত্বকে “গোপন” চিঠি সোমেনের! প্রকাশ্যে আনলেন পুত্র রোহন

Date:

Share post:

তৃতীয়বার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার আগে সে খবর নিজেই জানতেন না সদ্য প্রয়াত সোমেন মিত্র। গত ৩০ জুলাই তাঁর মৃত্যুর পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে সোমেনবাবুর উত্তরসূরির খোঁজ কাজ চলছে। কিন্তু অনেক আগেই হাইকম্যান্ডকে নতুন প্রদেশ সভাপতি খোঁজার প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্বয়ং সোমেন মিত্র! অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঠিক আগেই শীর্ষ নেতৃত্বকে তাঁর অসুস্থতার বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠি লিখেছিলেন সোমেন মিত্র। এবং এই মহামারি পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে আর রাস্তায় নেমে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না ভগ্ন শরীর নিয়ে। সে কারণে তাঁকে যেন পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়, চিঠিতে এআইসিসি-এর কাছে এমনই আর্জি রেখেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। পার্টির প্যাডে “গোপন” সেই চিঠি তিনি লিখেছিলেন পশ্চিমবঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক গৌরব গগৈকে।

এআইসিসি-র তরফে বাংলার ভারপ্রাপ্ত নেতা গৌরব গগৈকে গত ১৬ জুলাই সেই চিঠি পাঠিয়েছিলেন সদ্য প্রয়াত সোমেন মিত্র। আজ, সোমবার লোয়ার রডন স্ট্রিটে সোমেনবাবুর বাসভবনে তাঁর স্মরণ সভার দিন এমনটাই জানালেন তাঁর পুত্র রোহন মিত্র।

সেই চিঠি প্রকাশ্যে এনে রোহন আরও জানান, গতবছর
লোকসভা ভোটে গোটা দেশে দলের খারাপ ফলাফলের পর রাহুল গান্ধী কংগ্রেস সভাপতি পদ ছেড়ে দেওয়ায় সোমেনবাবুও প্রদেশ সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। তখন এআইসিসি ও দলের অন্য নেতারা সেই প্রস্তাব মানেননি। তাঁকেই দায়িত্বে বহাল রাখা হয়েছিল। কারণ, কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব একুশে বাংলার বিধাসভা নির্বাচন পর্যন্ত সোমেন মিত্রকে দায়িত্বে রাখতে চেয়েছিলেন। রাজ্যে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য বাম-কংগ্রেস একটা ধর্ম নিরপেক্ষ জোট গড়ে তোলার চেষ্টায় ছিল। যে জোট গড়ার জন্য অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন সোমেন মিত্র।

গৌরব গগৈকে পাঠানো চিঠিতে সোমেনবাবু লিখেছিলেন, “আমার বয়স এবং শরীরে অতীতে কী কী সমস্যা হয়েছে, আপনারা তা জানেন। স্পষ্ট করে বলতে চাই, যে দল আমাকে সব দিয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই আমি সেই দলের কাছে বোঝা হয়ে থাকতে চাই না। রাহুল গান্ধী এবং আপনার কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ ২০১৮ সালে আমার উপরে আস্থা দেখানোর জন্য। এই জীবনে আমার জন্য যদি আর কিছু বাকি থেকে থাকে, তখনই সেটা হয়ে গিয়েছে”।

চিঠির শেষে সোমেন মিত্র আরও লেখেন “সামনেই আমাদের রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। গত বছর আমার ইস্তফা এআইসিসি স্বীকার করেনি। এই পরিস্থিতিতে দলীয় নেতৃত্বের যদি কোনও সংশয় থাকে বা তাঁদের যদি আরও ভাল ও সক্রিয় ভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে প্রত্যাশা থাকে, আমি তা হলে খুশি মনেই সরে দাঁড়াতে রাজি আছি”।

এই চিঠি লেখার কয়েক দিনের মধ্যেই শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সোমেনবাবু। আর তাঁর বাড়ি ফেরা হয়নি। গত ৩০ জুলাই ভোররাতে মৃত্যু হয় তাঁর।

spot_img

Related articles

হিজাব বিতর্কে নয়া মোড় ,সরকারি চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন না মহিলা চিকিৎসক!

বিহারের সরকারি অনুষ্ঠানে মহিলা চিকিত্‍সকের মুখ থেকে হিজাব টেনে নামিয়ে দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ...

কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো-র সংবাদপত্রের দফতরে হামলা! 

বাংলা দৈনিক প্রথম আলো-র দফতরে হামলা! বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে একদল অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সংবাদপত্রটির দফতরে ঢুকে একাধিক তলায় ব্যাপক...

জলপাইগুড়ির আকাশে ভিনগ্রহীদের যান! রহস্যময় আলো ঘিরে বাড়ছে জল্পনা

বৃহস্পতিবার রাতের আকাশে হঠাৎ রহস্যময় আলো ঘিরে চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি জেলায় (Jalpaiguri District)। কেউ বলছেন উল্কা কেউ বলছেন ইউএফও...

এসআইআর প্রক্রিয়ায় নজির! প্রথমবার ভোটারকে শো-কজ কমিশনের

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (এসআইআর) প্রক্রিয়ায় এই প্রথম কোনও ভোটারকে শো-কজ নোটিশ পাঠাল নির্বাচন কমিশন। অভিযোগ, এক...