বই- বিতর্কে সাসপেন্ড হওয়া প্রধান শিক্ষিকা জিতে গেলেন হাইকোর্টে

মাস কয়েক আগে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস জুনিয়র বেসিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী মল্লিককে সাসপেন্ড করা হয়েছিলো বই-বিতর্কে ৷
ইংরেজি শব্দ ‘আগলি’র আভিধানিক অর্থ ‘কুৎসিত’। এই কুৎসিতের উদাহরণ দিতে গিয়ে আলোচ্য বইতে দেওয়া হয়েছে এক কালো চামড়ার মানুষের ছবি। আর সেই বইকেই স্কুলে পাঠ্যের জন্য নির্বাচন করায় সাসপেন্ড হয়েছিলেন প্রধান শিক্ষিকা সর্বাণী মল্লিক। অভিযোগ ছিলো, কেন তিনি রাজ্য সরকারের অনুমোদন না নিয়ে এমন বই নির্বাচন করেছেন৷ ঠিক এই অভিযোগেই সাসপেন্ড করা হয়েছিল তাঁকে।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহা সরকারি এই সিদ্ধান্তকে ভিত্তিহীন বলে সাসপেন্ডের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছেন।
এই বছরের ১১ জুন তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়। ‘চাইল্ড স্টাডি’ নামক বইয়ে ওই ছবি ও তার বর্ণনা ছাপা হয়েছে। সেই পড়ুয়াদের জন্য বই নির্বাচন করায় ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সরকারি অনুমোদন না নেওয়া ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়েছে। শিক্ষিকার তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও উদয়শঙ্কর চট্টোপাধ্যায় আদালতে বলেন, স্কুলের দুই সহকারি শিক্ষকের সুপারিশেই এই বইটি নির্বাচন করা হয়েছিল। সেই প্রমাণও আদালতে পেশ করা হয়েছে। বলা হয়, এই ঘটনাকে বর্ণবিদ্বেষের সঙ্গে তুলনা করা হলেও, এই কারণে কাউকে সাসপেন্ড করার বিধি মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের বিধিতে নেই। সরকারি আইনজীবী এই বিতর্কে না ঢুকে শৃঙ্খলাভঙ্গের উপরই বেশি জোর দিয়েছেন। ‘প্রি-প্রাইমারি সেকশনে’ বই নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা আছে কি না, বিচারপতি তা জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেননি সরকারি কৌসুলি। বিচারপতি বলেন, কর্তৃপক্ষ অসদাচরণের অভিযোগে কাউকে সাসপেন্ড করতে পারে, কিন্তু এই ক্ষেত্রে কীসের ভিত্তিতে অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে, তার কোনও ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। এরপরই সাসপেন্ডের নির্দেশ খারিজ করে দেন তিনি।