ছাত্রকে ডাক্তারি পড়াতে জমি বিক্রি, অনন্য নজির তৈরি শিক্ষকের

দেশের ভবিষ্যত গড়ার কারিগর একজন শিক্ষক। প্রকৃত শিক্ষকের সংজ্ঞা কী? সঠিক শিক্ষাদান মানে কি শুধুই পুঁথিগত বিদ্যাদান? অ্যান্ড্রয়েডের যুগে পদ্ধতি মেনে শিক্ষাদান কতটা সম্ভব? সিলেবাসের চাপে পড়ার বইয়ের বাইরে আদৌ কি কিছু শেখানো যায়? না কি সবটাই ছুটে চলার তাড়া? কেমন হওয়া উচিত ছাত্র- শিক্ষক সম্পর্ক? বিগত কয়েক বছরে এই প্রশ্নগুলি বারবার উঠে এসেছে। তবে এই দেশে এমন শিক্ষকও আছেন, যিনি জমি বিক্রি করেছেন ছাত্রদের পড়ানোর জন্য।

বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন কার্যত অতীত। ব্যাগ বোঝাই করে ছাত্ররা হাজির হয় প্রাইভেট টিউশনে। অনেকের আবার একই বিষয়ে একাধিক শিক্ষকও থাকে। কিন্তু এবার ছাত্রের উচ্চশিক্ষার জন্য নিজের শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করলেন শিক্ষক। ছাত্রের লেখাপড়ার জন্য জমি বিক্রি করলেন তিনি। শিক্ষক মনোহর প্রসাদ মিশ্র নজির তৈরি করলেন। ছাত্রকে ডাক্তারি পড়াতে এই কাজ করেছেন বলে জানান মনোহর।

বিহারের মধুবনি এলাকার একটি গ্রামীণ হাইস্কুলের শিক্ষক মনোহর প্রসাদ মিশ্র। ছাত্র পড়িয়ে বেতন নয়, বরং শিক্ষক হয়ে ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে চেয়েছেন মনোহর। অথচ বাড়িতে কখনও প্রাইভেট টিউশন পড়াননি এই শিক্ষক। তিনি বলেন, “ছাত্রদের পড়িয়ে স্কুল থেকে যেটুকু টাকা পাই সেটাই যথেষ্ট। নিজের সীমিত আয় দিয়েই ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে চাই।”

ছাত্রকে ডাক্তারি পড়াতে বিক্রি করে দিয়েছেন ২ বিঘা জমি। যা চাষের উপযুক্ত। এই ২ বিঘা জমি ছিল শিক্ষকের শেষ সম্বল। এদিকে সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষায় তাঁর ছাত্র ভালো ফল করেছিল। কিন্তু অর্থাভাবই সেই স্বপ্ন পূরণ হাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তখনই এগিয়ে আসেন মনোহর প্রসাদ মিশ্র। বিক্রি করে দেন ওই জমি।

ছাত্রদের শিক্ষিত করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য। মনোহরের কথায়, “ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষকের রক্তের সম্পর্ক থাকে না। কিন্তু থাকে আত্মার সম্পর্ক। যে ছাত্র শিখতে চায়, সেই ছাত্রকে শেখানো একজন শিক্ষকের প্রধান কাজ। ছাত্রের আর্থিক প্রতিকূলতা থাকতেই পারে। কিন্তু তাই বলে সে পড়বে না। এটা হতে পারে না। যদি আরও টাকা, আরও সম্পত্তি থাকত তাহলে আরও ছাত্রদের সাহায্য করতে পারতাম।” স্থানীয়রা জানান, এই প্রথম নয়। ছাত্রদের লেখাপড়ার জন্য এর আগেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মনোহর।

আরও পড়ুন : ভাবাচ্ছে জঙ্গলমহল, উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের নিয়ে বৈঠক ডিজিপির