Saturday, August 23, 2025

করোনা-কালে দার্জিলিঙের মন জয় করছে এইচএমআই-এর অ্যাম্বু ব্যাগ

Date:

কিশোর সাহা

করোনা-কালে শ্বাসকষ্ট মানেই দুশ্চিন্তা কযেকগুণ বেড়ে যায়। তার উপরে দার্জিলিঙের পাহাড়ি গ্রামে তেমন সমস্যা হলে তো দুশ্চিন্তা আরও বেশি। এমন একটা সময়ে কয়েক মাস ধরে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার জন্য অ্যাম্বু ব্যাগ বানিয়ে গ্রামবাসীদের সরবরাহ করছে হিমালয়ান মাউন্টেরিয়াং ইন্সটিটিউট (এইচএমআই)। যাতে অনেকটা ভেন্টিলেটরের মতো কাজও হচ্ছে। সে দিয়েই পাহাড়বাসীর মন জয় করছে এইচএমআই। মাত্র সাড়ে ৪ হাজার টাকায় ওই অটোমেটেড অ্যাম্বু ব্যাগ মিলছে। যাতে প্রবল শ্বাসকষ্ট হলে ওই অ্যাম্বু ব্যাগ অক্সিজেন সরবরাহ করে আরাম দেবে রোগীকে। যা কি না ব্যাটারিতেও চলে। ওই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে প্রশাসনও। এমনকী, যাঁর উদ্যোগে এই কর্মযজ্ঞ চলছে, এইচএমআইয়ের প্রিন্সিপাল গ্রুপ ক্যাপ্টেন জয় কিসান তাই যেন পাহাড়বাসীর নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন।

এই ঘটনায় সরকারি মহলও এইচএমআইয়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। কারণ, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় অনেকেরই শ্বাসকষ্টের উপসর্গ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ভেন্টিলেটর প্রয়োজন থাকলেও তা হাসপাতালে পর্যাপ্ত নেই। তাই সস্তার অ্যাম্বু ব্যাগে সাময়িক ভাবে সমস্যার সমাধান হচ্ছে বলেই স্বস্তিতে পাহাড়বাসী।

ঘটনা হল, এই অ্যাম্বু ব্যাগ মূলত পাহাড়ে চড়ার সময়ে পর্বতারোহীদের শ্বাসকষ্ট হলে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। করোনার সময়ে হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এইচএমআিয়ের অধ্যক্ষের উদ্যোগে এই অ্যাম্বু ব্যাগ তৈরির কাজে নামেন কর্মীরা। তৈরি করতে যা খরচ হচ্ছে, শুধু মাত্র সেই টাকাটাই নিয়ে বিলি করা হচ্ছে নানা এলাকায়। তাতে সাড়াও মিলেছে। এইচএমআইয়ের অধ্যক্ষ অবশ্য মনে করেন,. এটা তাঁদের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে। তিনি জানান, অতিমারির সময়ে মানুষের পাশে সবসময় থাকতে পারাটাই মনুষ্যত্বের বড় প্রমাণ।

এইচএমআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমান অধ্যক্ষ জয় কিসান বরাবরই মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে আসা অভিযাত্রীদের খুঁটিনাটি সমস্যার দিকে নজর রাখেন। সেই সঙ্গে লাগোয়া পাহাড়ি গ্রামের বাসিন্দাদের বিপদে-আপদে দাঁড়াতেও ছুটে যান তিনি। ইতিমধ্যেই পর্বতারোহণ ও অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসে ৩টি বিশ্ব রেকর্ড ও ৬টি জাতীয় রেকর্ড রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। গত ২০০৯ সালে তিনি তেনজিং পুরস্কারও পেয়েছেন।

এমন যাঁর ব্যাকগ্রাউন্ড, তিনি যে করোনা কালেও হাত গুটিয়ে বসে থাকবেন না, তা বোঝাই যায়। গত মার্চ মাসে যখন করোনার প্রকোপে দেশ জুড়ে লকডাউন ঘোষণা হয়, সে সময়ে এইচএমআইয়ের শিক্ষার্থীরা সিকিমের পাহাড়ি এলাকায় ক্যাম্পে ছিলেন। পর্যায়ক্রমে তাঁদের দার্জিলিঙে এনে রাখেন তিনি। সেখানে দীর্ঘদিন রেখে যোগভ্যাস সহ নানা কাজে ব্যস্ত রাখেন। এমনকী, সর্বধর্ম প্রার্থনাও করান প্রত্যেক দিন। পরে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হতে তাঁদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

শুধু তাই নয়, কোভিড ১৯ পরিস্থিতির কারণে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পাহাড়ে পৌঁছলে তাঁদের কোয়ারিনটাইনে রাখার ব্যবস্থাও এইচএমআই ক্যাম্পাসে হয়েছে। ইতিমধ্যেই পাহাড়ি গ্রামে কয়েক হাজার স্যানিটাইজার, মাস্ক বিলি করেছে সংস্থা।

আরও পড়ুন- রাজ্যের কুৎসা করতে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো পোস্ট, সুজনের “চালাকি” ধরে ফেললেন ঋতব্রত

Related articles

ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে তৎপর রাজ্য! জেলাগুলিকে একগুচ্ছ কড়া নির্দেশ মুখ্যসচিবের 

রাজ্যে ডেঙ্গি সংক্রমণ ক্রমশ বাড়তে থাকায় শনিবার নবান্নে জেলাশাসক ও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন মুখ্যসচিব...

দায় বেসরকারিকরণ নীতির! মোদিরাজে পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক কর্মী

মোদি সরকারের আমলে বিগত পাঁচ বছরে চাকরি হারিয়েছেন লক্ষাধিক সরকারি কর্মী। সম্প্রতি লোকসভায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল কেন্দ্র।...

পুজোর আগে প্রায় দ্বিগুণ দুধ উৎপাদনে বাংলার ডেয়ারি 

কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে প্যাকেটজাত দুধের জোগান বাড়াতে রাজ্য সরকারি ব্র্যান্ড বাংলার ডেয়ারি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। পুজোর...

পিছনে দৌড়! স্নাতক স্তরে বৈদিক গণিত আনার চেষ্টা UGC-র

গোটা বিশ্ব গণিতের ক্ষেত্রে যেখানে নতুন উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসছে, সেখানে ভারতের শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছন দিকে হাঁটা শুরু...
Exit mobile version