নেতাদের বান্ধবী নই বলে পদ পাব না? ক্ষোভে ফুঁসছেন বিজেপির মহিলাশিবির

শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ধরে রাখার দেউলিয়া তাগিদে বিজেপি নেতাদের বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য কমিটিতে আমন্ত্রিত হিসেবে নিতে হয়েছে।

এতে ক্ষোভে ফুঁসছেন দীর্ঘদিনের সিনিয়র বহু বিজেপি নেত্রী, যাঁরা রাজ্য কমিটিতে আসতে পারেননি। এঁদের মতে, যাঁর কোনো নিজস্ব রাজনৈতিক সত্তা নেই, অভিজ্ঞতা নেই, বিজেপির কোনো উপকার করেননি; স্রেফ এক নেতার বান্ধবী বলে পদপ্রাপ্তি মহিলা কর্মীদের কাছে চূড়ান্ত অপমানের।

ইতিমধ্যেই এবিষয়ে রাজ্য পদাধিকারীদের কাছে ক্ষোভ জমা পড়েছে। তাঁরা বিষয়টিতে গুরুত্ব না দিতে বলেছেন। দিলীপ ঘোষ শিবিরের বক্তব্য, সামনে ভোট। দল চায় না কেউ চলে যাক। শোভনের পিছনে মেয়র বা মন্ত্রীর তকমা আছে। এই অবস্থায় কৈলাসরা চেয়েছেন তাঁকে ধরে রাখতে। আর তাঁর জন্যেই বৈশাখীকে পদ দিতে হচ্ছে। বৈশাখী নিজের সম্মানটা বুঝলে কোনো পদ নিতেন না। এখন সবাই জানেন কে বৈশাখী আর কেন তিনি পদ পাচ্ছেন। এরকম শিক্ষিত, যোগ্য বহু অধ্যাপক আছেন। এখানে স্রেফ শোভনকে রাখতে তাঁর বান্ধবীকে নিতে হবে, এই মাপকাঠিতে পদ পেয়েছেন। এনিয়ে আপাতত ভাবার কিছু নেই। এই বলে ক্ষুব্ধ ও বিরক্ত নেত্রীদের ঠেকিয়ে রাখছেন সভাপতি। এদিকে শুক্রবার বৈশাখী ফেস বুক পোস্টে তাঁকে পদ দেওয়ার জন্য বিজেপি নেতাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এই নিয়ে বিজেপিতেই হাসাহাসি তুঙ্গে। এক নেতা বলেন, ” আরে ওকে নেওয়া হয়নি; শোভনকে রাখা হয়েছে।” অরবিন্দ মেননকে এই নিয়ে ফোন করেছিলেন রাজ্যের এক পদাধিকারী। সূত্রের খবর, মেনন তাঁকে বলেছেন ভোটের মুখে অনেককে এক মঞ্চে রাখার বাধ্যবাধকতা থাকে। সেই সুযোগে কেউ কেউ কিছু পেয়ে যায়। এসব দিকে তাকানোর সময় এটা নয়। বাড়তি মাথা ঘামানোর কিছু নেই। কাজ দিয়ে বিচার হবে। রদবদলে পাঁচ মিনিটও লাগবে না। এক শীর্ষনেতা ক্ষুব্ধ এক নেত্রীকে বলেছেন,” দুএকজনকে সামান্য একটা পদ দিয়ে যদি দুএকটা পরিচিত মুখকে ধরে রাখা যায়, তাহলে ক্ষতি কোথায়?” কৈলাস, মেনন এনিয়ে আলোচনা চান না। বৈশাখীও কাজ করেই নিজেকে প্রমাণ করবেন বলে তাঁদের বিশ্বাস। এদিকে, আগেরবার “ডালভাত” বলে বিতর্কে জড়ালেও এবার দিলীপশিবির সতর্ক। শুধু তাঁদের নেতারা কটাক্ষ ভাসিয়ে দিয়ে বলছেন, এবারের প্যাকেজ হল বাই ওয়ান গেট ওয়ান ফ্রি। বিজেপি মহল আপাতত এই মুচমুচে আলোচনাতেই ব্যস্ত। এই তালিকায় এক মহিলা ডাক্তারকে নিয়েও কথা চলছে। নেতারা দলে এলেই তাঁদের ঘনিষ্ঠ বা ঘনিষ্ঠাদের পদ পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি বিজেপির রাজ্য নেতারা , বিশেষত লড়াই করে আসা নেত্রীরা হজম করতে পারছেন না।

তবে অন্যশিবির বলছে, কে কার ঘনিষ্ঠ বড় কথা নয়। কোয়ালিটি আছে কিনা, সেটা দেখার। যদি তাঁকে দিয়ে বিজেপির উপকার হয়, তাহলে সমস্যা কোথায়? ক্ষুব্ধদের বক্তব্য, এমন কোয়ালিটি নিয়ে দল করলেও সাধারণভাবে উপেক্ষিত থাকতে হচ্ছে। অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে এলেই দলবদলের দরাদরির সুযোগ নিয়ে পদপ্রাপ্তি চলছে। তালিকায় না থাকলেও লবি করে চাপ দিয়ে ঢোকানো হচ্ছে। এই সংস্কৃতি বিজেপির ক্ষতি করা শুরু করল।

আরও পড়ুন- পুজোর আগেই রাজ্যে চালু হতে পারে লোকাল ট্রেন

Previous articleপুজোর আগেই রাজ্যে চালু হতে পারে লোকাল ট্রেন
Next articleপ্রশ্নোত্তর পর্ব নেই, জিরো আওয়ারের সময় অর্ধেক: ক্ষুব্ধ ডেরেক