‘নিউ নর্মাল’ জমানায় কাল থেকে কী কী থাকছে সংসদের অধিবেশনে?

মহামারির আবহে ‘নিউ নর্মাল’ জমানায় ভোল বদলে যাচ্ছে সংসদের। আগামীকাল ১৪ সেপ্টেম্বর, সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। মহামারি পরিস্থিতিতে এবারের অধিবেশনে সম্পূর্ণ পরিবর্তিত চেহারায় দেখা যাবে সংসদকে। অনেকেই বলছেন, করোনা সংক্রমণ রুখতে যেরকম বড় মাপের ব্যবস্থাপনা ও আঙ্গিকের পরিবর্তন হচ্ছে, তা ১৯৫২ সালের পরে ভারতীয় সংসদের ইতিহাসে এই প্রথম। কোভিড মহামারির পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের গাইডলাইন মেনে গোটা সংসদ চত্বরকে ‘সেফ জোন’ বানিয়েছে লোকসভা ও রাজ্যসভার সচিবালয়। ভারতে মহামারির প্রকোপ শুরু হওয়ার আগে ২৩ মার্চ মুলতুবি হয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। নিয়মমত, ছমাসের মধ্যে অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বরের আগে শুরু করতেই হত পরবর্তী অধিবেশন। বর্তমানে ভারতে করোনা সংক্রমণ প্রবলভাবে উর্ধমুখী। এই অবস্থায় চূড়ান্ত সতর্কতা ও সবরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে অধিবেশন পরিচালনা করাটাই চ্যালেঞ্জ। এই মুহূর্তে তারই প্রস্তুতি নিয়ে তৈরি ভারতের সংসদ। এই অধিবেশনে সতর্কতামূলক কী কী ব্যবস্থা থাকছে, একনজরে দেখে নেওয়া যাক।

১) প্রথমদিনই রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন। এবার প্রতিদিন লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন আলাদা দুটি অর্ধে বসবে। দিনের প্রথমার্ধে রাজ্যসভা এবং দ্বিতীয়ার্ধে লোকসভার অধিবেশনের কাজ হবে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য দু’টি কক্ষেই সাংসদেরা বসবেন। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জানিয়েছেন, লোকসভার অধিবেশনের সময় ২৫৭ জন লোকসভা কক্ষে বসবেন। ১৭২ জন লোকসভার গ্যালারিতে, ৬০ জন রাজ্যসভায় ও ৫১ জন রাজ্যসভার গ্যালারিতে বসবেন। সেখান থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁরা অধিবেশনে যোগ দেবেন। একইভাবে দূরত্ব বিধি মেনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসার ব্যবস্থা থাকবে রাজ্যসভাতেও।

২) লোকসভা ও রাজ্যসভা দুই সচিবালয়েই সীমিত সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ চলবে।

৩) সংক্রমণ ঠেকাতে কাগজের ব্যবহার যথাসম্ভব কম করা হবে।

৪) সংসদে ঢোকা, বেরনো ও যাতায়াতের পথে একাধিক জায়গায় থাকবে স্যানিটাইজেশন ও স্ক্রিনিং বুথ। প্রত্যেক সদস্য ও কর্মীকে তার ভিতর দিয়েই যাতায়াত করতে হবে।

৫) পলিকার্বনেট শিট বসিয়ে গ্যালারি ও চেম্বার আলাদা করা হচ্ছে।

৬) বাতানুকূল যন্ত্র থেকে যাতে জীবাণু না ছড়ায় সেজন্য বিশেষ জীবাণু প্রতিরোধক যন্ত্র বসানো হবে।

৭) সুরক্ষাবিধির স্বার্থে এবার সর্বদলীয় বৈঠক হচ্ছে না। লোকসভা ও রাজ্যসভার অধিবেশন চলাকালীন সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন জায়গায় বসার ব্যবস্থা করা হবে।

৮) প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের জন্য আলাদা আলাদা বসার জায়গা চিহ্নিত থাকবে।

৯) সভার সদস্যরা আলাদা আলাদা জায়গায় বসবেন বলে সর্বত্রই বাড়তি স্ক্রিনের মাধ্যমে যোগাযোগের ব্যবস্থা রাখা হবে।

১০) সভার কাজ মুলতুবি না হওয়া পর্যন্ত সদস্যরা বাইরে বেরোতে পারবেন না।

১১) সব সদস্যকে আরোগ্য সেতু অ্যাপ বাধ্যতামূলকভাবে ডাউনলোড করতে হবে।

১২) সভার কাজ কভার করার জন্য কোভিড সুরক্ষাবিধি মেনে মিডিয়ার গতিবিধিও নিয়ন্ত্রিত হবে।

১৩) এবারের অধিবেশনে ভিজিটরদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।

১৪) সময় বাঁচাতে প্রশ্নোত্তর পর্ব বাদ দেওয়া হবে এবারের অধিবেশনে। তবে জিরো আওয়ারে বিশেষ বিষয়ে প্রশ্ন ও আলোচনার সুযোগ থাকছে।

আরও পড়ুন-চিকিৎসার জন্য বিদেশ গেলেন সোনিয়া গান্ধী, সঙ্গে রাহুল

 

Previous articleসেলিমের শুভেচ্ছা বার্তা পেয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক অধীরের
Next articleফের প্রতিষেধকের ট্রায়াল শুরু অক্সফোর্ডে