জন্মদিনের উপহার, ক্লাস সেভেনের সিদ্ধার্থ পেল ‘দত্তক বাঘ’

জন্মদিনে তো কত লোকে কত রকম উপহার দেন, বই, পেন, পেন্সিল বক্স, জামা-জুতো, খেলনা আরও কত কি!
কিন্তু কেউ যদি আপনাকে জন্মদিনে বাঘের বাচ্চা উপহার দেয় কিংবা ছোট হাতি তাহলে?
এবার জন্মদিনে এমনই একটা অভিনব উপহার পেল হায়দরাবাদের ক্লাস সেভেনের সিদ্ধার্থ। বাঘ তার বড় পছন্দের। বিশাল একখানা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারই এবার সে পেল জন্মদিনে। না-না খেলনা বাঘ নয়, একেবারে জ্যান্ত!

আসলে জন্মদিনে পরিবারের তরফ থেকে উপহার হিসেবে বাঘ পেয়েছে সিদ্ধার্থ। তার বাবার উত্সাহে তিন মাসের জন্য দত্তক নিয়েছে বাঘ। হায়দারাবাদের নেহেরু জুলজিক্যাল পার্কে এসে ‘সংকল্প’ নামের একটি বাঘকে দত্তক নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি।

কী ভাবছেন! বাড়ি বাঘ নিয়ে বাড়ি যাবে সিদ্ধার্থ? তা কিন্তু নয়। বিষয়টা একটু আলাদা। তিন মাসের জন্য নেহরু জুলজিক্যাল পার্কের বাঘ ‘সংকল্প’ এর ভরণপোষণ চালাবে সিদ্ধার্থ। এ জন্য ছেলের হাত দিয়ে তার বাবা জুলজিক্যাল পার্ক এর ডেপুটি কিউরেটর এ নাগমণির হাতে ২৫ হাজার টাকার চেক তুলে দেন।
আরও বেশ কয়েকটি ছোট ছোট পাখি ও প্রাণী ৫০০০ টাকা দিয়ে দত্তক নিয়েছে বেশ কয়েকটি বাচ্চা।
অতুল, প্রেখা, হাবিশারা পাখি, বন্যপ্রাণী দত্তক নিয়ে ভীষণ খুশি। খুশি সিদ্ধার্থও।

আরও খবর : লাদাখে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল পাতছে চিনা সেনা!

মার্চ মাস থেকে করোনার জেরে বন্ধ জুলজিক্যাল পার্ক। দর্শক আসা বন্ধ হওয়ায় টিকিট বিক্রি নেই। প্রাণীদের দেখভালের জন্য খরচ জোগানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন চিড়িয়াখানায় বন্যপ্রাণী দত্তকের বিষয়টি চালু করা হয়েছে সাধারণ মানুষের সঙ্গে বন্যপ্রাণীদের সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করার জন্য।

গত কয়েক মাসে করোনা আবহে লকডাউন-এর জেরে জুলজিক্যাল পার্ক বন্ধ থাকায় ৬ কোটির বেশি লোকসান হয়েছে নেহেরু জুলজিক্যাল পার্কে।এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষ চাইছে আরও বেশি সংখ্যক মানুষ এগিয়ে এসে বিভিন্ন প্রাণী দত্তক নিক। দায়িত্ব নিক এইসব প্রাণীদের ভরণপোষণের। নির্দিষ্ট প্রাণীর খাওয়া খরচ বাবদ নির্দিষ্ট অংক রয়েছে। যেমন বাঘের খরচ একরকম, আবার শিম্পাঞ্জির খরচ আর একরকম। ময়ূর থেকে নীলগাই তাদের খরচ আলাদা। কোনও প্রাণীর জন্য কত খরচ মাসে, তার ওপর নির্ভর করে দত্তকের অঙ্ক।
বিভিন্ন জায়গাতে তাই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ চাইছে বর্তমান পরিস্থিতিতে সেলিব্রিটি থেকে সাধারণ মানুষ বন্য প্রাণীদের দত্তক নিক।

সাধারণত সিনে তারকা, ক্রিকেটাররা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রাণী দত্তক নেন। যেমন টলিউড অভিনেতা রামচরনের স্ত্রী ও সুপারস্টার কে চিরঞ্জীবীর বউমা উপাসনা কামিনী এক বছরের জন্য হাতি দত্তক নিয়েছিলেন। দত্তক নিতে মাঝেমধ্যেই এগিয়ে আসে কোন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে বিভিন্ন সংস্থা।

বন্যপ্রাণী দত্তক নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করতে হয়। কোন প্রাণীকে দত্তক নিতে চাইছেন তা জানিয়ে নির্দিষ্ট টাকা দিতে হয়। তার জন্য বিশেষ কিছু সুবিধাও পান যিনি দত্তক নিচ্ছেন তিনি। তিনি চাইলে সেই প্রাণীটির এনক্লোজারের সামনে তাঁর সংস্থার নাম দিতে পারেন। প্রাণীটির ছবি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করতে পারে। প্রাণীটির জন্মদিন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পালন করতে পারে।তবে সমস্ত ক্ষেত্রেই তাঁকে চিড়িয়াখানার নিয়ম মানতে হবে।

তাহলে কী ভাবছেন জন্মদিনে কি একটা বাচ্চা হাতি কিংবা ময়ূর দত্তক নেবেন? আপনার বাচ্চাকে যদি এমন উপহার দেন, তাহলে কিন্তু বন্য প্রাণীর সঙ্গে তার সখ্যতা বাড়বে। কলকাতায় আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকেও কিন্তু আপনি পছন্দের প্রাণী দত্তক নিতে পারেন।

Previous articleলকডাউনের নিয়মবিধি শিকেয় তুলে বারাসতে ফুটবল টুর্নামেন্ট! অভিযোগের তীর বিজেপির দিকে
Next articleBig Breaking: টাকার বিনিময়ে নম্বর বাড়ানোর অভিযোগ, সরানো হলো কাটোয়া কলেজের ৩ অধ্যাপককে