Tuesday, November 18, 2025

৪ সপ্তাহ পর মুম্বাইয়ের গ্লোবাল হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন কুর্লার বাসিন্দা, ২৪ বছর বয়সী মনিকা মোরে। গত ২৮ অগাস্ট, ১৬ ঘন্টার সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁর হাতে।

২০১৪ সালে মুম্বাইয়ের ঘাটকোপারের একটি ট্রেন দুর্ঘটনায় নিজের দুই হাত খুইয়েছিলেন মনিকা। এরপর থেকে কৃত্তিম হাতের সাহায্যেই দৈনন্দিন জীবনযাপন করতেন তিনি। কিন্তু আর কতদিন? কৃত্তিম হাত দিয়ে তো সব কাজ করা যায়না।

এদিকে, চেন্নাই থেকে ৩২ বছর বয়সী এক যুবকের ব্রেন ডেথ হওয়ার খবর পান চিকিৎসকরা। তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন, অন্যান্য অঙ্গের মত যুবকের হাত দুটিও প্রতিস্থাপনযোগ্য। আর দেরি করেননি চিকিৎসকরা। মধ্যরাতে চেন্নাই থেকে বিমানে হাতদুটি আনার পরে, ডঃ নীলেশ সাতভাইয়ের নেতৃত্বে ২০ জনের একটি দল শুরু করে অস্ত্রোপচার।

এই ব্যাপারটি দুবছর আগেও হতে পারত। কিন্তু শেষ মূহুর্তে বেঁকে বসেন অঙ্গদাতার পরিবার। চেন্নাইয়ের এই যুবকের পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন মনিকা ও তাঁর পরিবার।

মুম্বাইয়ের গ্লোবাল হাসপাতালের পরামর্শক প্লাস্টিক এবং পুনর্গঠনকারী মাইক্রোসার্জন, ডাঃ নীলেশ সাতভাই বলেন, “হাত প্রতিস্থাপন একটি খুব জটিল সার্জারি। হাতের অভাবে গত কয়েক বছর ধরে মনিকার দুটি হাত প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়নি।” ডাঃ সাতভাই আরও বলেন, “ হাত এবং আঙ্গুলের চলাচল ৩-৪ মাস পরে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তার বাহুর পেশী টিস্যু এবং হাড়গুলি ততদিনে সুস্থ হয়ে উঠবে। হাত সম্পূর্ণ ঠিক হতে এখনও এক থেকে দেড় বছর লাগবে। তবে, একবার তার হাতের চলাচল এবং অনুশীলন এবং ফিজিওথেরাপির সাহায্যে তিনি শীঘ্রই আরও স্বাবলম্বী হয়ে উঠবেন।”

অস্ত্রোপচারের পরে, সংক্রমের আশঙ্কা থাকায়, মনিকাকে আলাদা ঘরে রাখা হয়েছে। আপাতত ৪ সপ্তাহ সেখানেই থাকবেন তিনি। পরিবারের সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করার অনুমতি না থাকলেও, তাদের সঙ্গে নিয়মিত ভিডিও কলে কথা হচ্ছে তাঁর। তবে যেহেতু তাঁর দুটি হাতেই ব্যান্ডেজ করা, তাই তার যত্ন নেওয়ার জন্য তার সঙ্গে একজন নার্স রয়েছেন সর্বক্ষণের জন্য।

মনিকা জানিয়েছেন, তাঁর হাত প্রতিস্থাপন হবে, এটা তাঁর বাবার স্বপ্ন ছিল। বাবা মারা গিয়েছেন দেড় বছর আগে। তবে বাবার স্বপ্ন যে সফল হয়েছে, তাতেই খুশি মনিকা। তাঁর কথায়, “এতদিন, হাত না থাকায়, আমি কারও বিয়েতে মেহেন্দি লাগাতে পারিনি। তবে এখন আবার মেহেন্দি লাগাতে পারব। এছাড়াও, আমি নিজের চুল বাঁধতে, স্নান করতে, রান্না করতে পারব। সব কাজ নিজে করতে পারব, এই ভেবেই আনন্দিত লাগছে।”
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মনিকার হাত প্রতিস্থাপনে খরচ হয়েছে মোট ৩৬ লক্ষ টাকা। মনিকাদের একার পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন বহু মানুষ। পাশে দাঁড়িয়েছে হাসপাতালও। প্রতি মাসে মনিকার চিকিৎসা বাবদ খরচ হবে ২০,০০০ টাকা করে। তাই এখনও সাহায্যের প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি, তাঁরা আরও জানিয়েছেন, মনিকার অস্ত্রোপচারের খবর সামনে আসার পর থেকেই তাঁদের কাছে এই ধরণের আরও প্রতিস্থাপনের আবেদন আসছে।

আরও পড়ুন-স্মার্ট মিটার লাগালে তবেই মিলবে বিদ্যুতের কানেকশন, নয়া নিয়ম কেন্দ্রের

 

Related articles

এনুমারেশন ফর্ম পূরণে হেল্পলাইন চালু হাওড়ায়, সপ্তাহভর সাহায্য মিলবে ভোটারদের 

হাওড়া জেলা নির্বাচনী দফতর সোমবার থেকে শুরু করে ভোটারদের এনুমারেশন ফর্ম পূরণে সহায়তার জন্য দুইটি হেল্পলাইন চালু করেছে।...

স্ত্রীর পরকীয়া সন্দেহে প্রতিবেশীকে কাঁচি দিয়ে আঘাত স্বামীর, হাসপাতালে যুবক 

স্ত্রীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক সন্দেহে প্রতিবেশী এক যুবককে কাঁচি দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করল পেশায় দর্জি শেখ শাহরুখ। ঘটনাটি ঘটেছে...

বাগুইআটিতে অ্যাপ ক্যাবে আকস্মিক আগুন, আতঙ্ক এলাকায় 

বাগুইআটি উড়ালপুলের নীচে সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎই আগুন ধরে যায় একটি অ্যাপ ক্যাবে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, মুহূর্তের মধ্যেই আগুন দ্রুত...

শীর্ষ আদালতে এসএসসি–র জনস্বার্থ মামলা শুনানি থেকে সরে দাঁড়ালেন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার 

স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)–র নিয়োগ সংক্রান্ত নতুন জনস্বার্থ মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়...
Exit mobile version