Saturday, November 15, 2025

বিজেপি নেতা মনীশ শুক্লার হত্যার নিন্দা করে একটি ফেস বুক পোস্ট করেছেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ। তাতে এমন এক অকথিত কাহিনি লিখেছেন তিনি, যার গভীরে রয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ইঙ্গিত। মনীশ সম্পর্কে তাঁর যে স্মৃতির কথা লিখেছেন, তা বিতর্কিত।

কুণাল লিখেছেন:

মনীশ শুক্লা ও একটি স্মৃতি

বারাকপুরের মনীশ শুক্লা নিহত। হত্যাকাণ্ড প্রতিবাদযোগ্য। তীব্র নিন্দা করছি। নিহতের আত্মা চিরশান্তিতে থাকুক।

2013/14। আমাকে পরের পর থানায় ঘোরানো হচ্ছে।

( হয়ত কারুর নির্দেশে অর্ণব ঘোষের সেই হুমকি: 500 মামলা দেব। 10 দিন করে PC নেব। আপনার জীবনের 5000 দিন শুধু পুলিশ হেফাজতে রাখব। কার নির্দেশ, সেটা সিবিআইর কাছে অর্ণবের বয়ানে আছে বলে শুনেছি। )

সেই সূত্রেই পরিযায়ী বন্দির মত আমি টিটাগড় থানায়।

অধিকাংশ থানার পুলিশকর্তাদের মত এঁরাও আমার প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক ছিলেন।
আমি বলতাম,” আমাকে জেরা করবেন না?”
ওঁরা বলতেন,” দূর। আপনি যা যা বলবেন, আমরা লিখতে পারব না। আর আপনার মুখে যা যা বলানোর নির্দেশ আছে, আপনি দুঃখ পাবেন। ধরে নিন জেরা হয়ে গেছে। একটা রিপোর্ট লিখে দিচ্ছি।”

অপূর্ব।

ওঁরা জানতেন আমি অপরাধী নই। তাই যাই নির্দেশ থাকুক, ব্যবহার ছিল অতি আন্তরিক।

অধিকাংশ সময় আমাকে লক আপের বাইরে রাখতেন। পিছনে পুলিশ কোয়র্টারে স্নান, খাওয়া। এক মহিলা পুলিশ কর্মী পরম যত্নে যা করে দিতেন। রাতে থানার একটি বড় ঘরে বড় টেবিলে আমাকে শুতে দিতেন। আমার ঘনিষ্ঠরা দেখা করতে এলে আমাকে দেখা করতে দিতেন, আলাদা একটি ঘরে।
আমার মন ভালো রাখতে গল্প করতেন।
যথেষ্ট সাহায্য করতেন।

থানায় বহিরাগতদের যথেচ্ছ অবাধ যাতায়াত ছিল।
আমার পক্ষে তাদের চেনা সম্ভব নয়।

একদিন সন্ধেয় আমি লক আপে নেই। পাশের ঘরে। ঘনিষ্ঠ দুএকজন এসেছে। চা সহ একটু কথা বলছি। কী ঘটছে, কোন্ আইনজীবীকে কী বলতে হবে, এইসব।

হঠাৎ বাইরে শোরগোল।
খবর এলো, মনীশ শুক্লা ( তখন তৃণমূলে) সদলে থানার সামনে। পুলিশ তটস্থ।

একটু পরেই দুই পুলিশকর্তা এসে বললেন,” কুণালবাবু, একটু প্লিজ লক আপে চলুন। মনীশ বলছে কেন আপনাকে বাইরে রাখা হয়েছে। ….অমুক বাবু খবর নিচ্ছেন। তাঁর কাছে নালিশ করা হবে আমাদের নামে।”

আমি লক আপে ফিরে গেলাম।

তখন জীবনে ঝড় চলছে। এই ঘটনাগুলো মনটা তছনছ করে দিত।

পরে পুলিশের কাছ থেকেই শুনলাম, থানায় নজর রাখা হচ্ছিল। এটা কোনো কঠিন কাজ নয়। এরপর অন্য একটি বিষয় সামনে রেখে মনীষ সদলে থানায় আসে। এবং বলে যায় এক শীর্ষনেতা ( অধুনা বিজেপিতে এবং তিনি অর্জুন সিং নন) বলে দিয়েছেন যেন আমার প্রতি কঠোর থাকে পুলিশ। সব খবর তিনি রাখছেন। কোনোরকম ছাড় চলবে না। আমাকে লক আপের বাইরে না রাখা হয়। খুব কড়া করে বলেছিল মনীশ, যাকে হুমকি বলাই ভালো।

এই প্রসঙ্গে মনীশ সম্পর্কে আরও কিছু গল্প করলেন পুলিশকর্মীরা।

( সেই রাতেও অবশ্য তাঁরা আমাকে লক আপ থেকে বার করে অন্য ঘরে শুতে দিয়েছিলেন)।

যাই হোক, গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে মনীশের মৃত্যুর ঘটনায় খুব খারাপ লাগল।

গভীর শোকপ্রকাশ করলাম।

 

Related articles

রাজ্যে আসন্ন WBCS পরীক্ষা: জারি বিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত হল ডব্লুবিসিএস-এর পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি। পশ্চিমবঙ্গ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (PSC, WB) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মার্চ...

পরিবারে SIR আতঙ্কে মৃত্যুর ছায়া, চাকরির আশ্বাস দিয়ে পাশে তৃণমূল

এসআইআর আতঙ্কে আত্মঘাতী বাবা। অসহায় পরিবার। কী করে হবে দিন গুজরান? ভিটেমাটি চলে যাবে না তো? এসব আতঙ্ক...

গণমাধ্যমই সাঁটিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশী তকমা! জবাব দিতে তৈরি বাংলা

পেশায় শ্রমিক। পেটের দায়ে তারা নানা জায়গায় ছোটেন। কাজের তাগিদে অন্যত্র গেলেই একশ্রেণির মিডিয়া চিৎকার করে ওঠে, ওই...

বিহারের ফলাফলে বাংলা নিয়ে মোদির স্বপ্ন ‘সেগুড়ে বালি’: ধুইয়ে দিল তৃণমূল

একদিকে যখন বিহারে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হচ্ছে, তখন বাংলার বিজেপি নেতারা হঠাৎই আবির খেলা, মিষ্টিমুখে মেতে উঠেছেন। ফলাফল...
Exit mobile version