যোগী থেকে গেহলট, অমানবিক রাজনীতিকদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়ান ভোটাররা, অভিজিৎ ঘোষের কলম

অভিজিৎ ঘোষ

যে ভুলটা আদিত্যনাথ যোগীর প্রশাসন করেছিল, সেই একই ভুল করল রাজস্থানের অশোক গেহলটের সরকার।

হাথরাসের ঘটনার পর সরকার ব্যাপারটা প্রথমে ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করল। ভাইরাল হলো গোটা ঘটনা। তিন দিনের রাখঢাক গুড়গুড়-এর চেষ্টায় যখন মিডিয়াকুল জল ঢেলে দিল, তখন সিবিআই করে মানরক্ষার চেষ্টা।

একইভাবে রাজস্থানের করুলি জেলার বুকনার গ্রামের পুরোহিত বাবুলাল বৈষ্ণবকে পুড়িয়ে মারার নৃশংস ঘটনায় কোনও কংগ্রেস নেতাকে ঘটনাস্থলে দেখা গেল না। যদিও রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের জানা উচিত ছিল বিজেপি হাথরাসের ঘটনা চাপা দিতে রাজস্থানের ঘটনাকে টার্গেট করবে। হলোও তাই। রাস্তায় দেহ রেখে দাবি জানানো শুরু শনিবার বেলার দিক থেকে। দাবি তিনটি। ১. দোষীদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে। ২. পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি দিতে হবে। ৩. ক্ষতিপূরণ হিসাবে দিতে হবে ৫০ লক্ষ টাকা। গতকাল পরিবার দেহ নিয়ে দীর্ঘ ধরণায় বসার পর প্রশাসনের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। অন্তত আর্থিক অনুদানের প্রশ্নে। তারপর শেষকৃত্য হয়।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই ঘটনার পরেও হতভাগ্য পরিবারটিকে রাস্তায় নামতে হলো। সরকারি অপদার্থতা আর কাকে বলে! তবে চাকরি ও টাকা হাতে না পেলে ফের ধরণায় বসার হুমকি দেওয়া হয়েছে। তারচেয়েও বড় কথা, ঘটনা হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখেও কংগ্রেস প্রশাসন একজন মন্ত্রীকেও পাঠানোর প্রয়োজন বোধ করল না পুরোহিতের বাড়িতে। হাথরাস নারকীয় ঘটনা হলে একইভাবে নারকীয় রাজস্থানের ঘটনাও। তাহলে কেন ঘটনা থেকে শিক্ষা নেয় না অশোক গেহ্লোট বা রাহুল গান্ধীর কংগ্রেস। দলটায় চর্বি জমেছে, তা বেশ বুঝিয়ে দিচ্ছে।

রাজস্থানের এই অংশে পুরোহিতদের মন্দির লাগোয়া জমি দেওয়া হয়, যা তাদের আয়ের উৎস। এইসব জমিকে ‘মন্দির মাফি’ বলা হয়। সেখানেই মন্দির লাগোয়া জমিতে বছর ৫০-এর বাবুলাল বাড়ি তৈরি করার পরিকল্পনা করেছিলেন। ৬ মেয়ে আর ছেলেকে নিয়ে মাটির বাড়িতে থাকেন। সেই কারণে পাথর কেটে জমি সমান করেছিলেন। বাজরা এনে লাগিয়েছিলেন। মীন সম্প্রদায় বারবার বাধা দিলেও গ্রামবাসীরা পাশে ছিল। কিন্তু বুধবার একা পেয়ে বাবুলালের গায়ে পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেয় কৈলাশ শঙ্কর নমো সহ ৬ জন। গ্রেফতার মাত্র একজন।

নারকীয় ঘটনার পরেও বৃদ্ধ আশোক গেহ্ললোটের একটি ট্যুইটও নেই। ভাবা যায় না। ভোটারদের উচিত এইসব অমানবিক রাজনীতিকদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে গদি থেকে নামিয়ে দেওয়া।