Sunday, November 9, 2025

পোড়া মাটির ঘট থেকে সপ্ততরী, বিভিন্ন রূপে ধরা দেন কোজাগরী লক্ষ্মী

Date:

“নমামি সর্বভূতানাং বরদাসি হরিপ্রিয়ে যা গতিস্ত্বৎপ্রপন্নানাং সা মে ভূয়াৎ ত্বদর্চনাৎ।” অর্থাৎ “হে হরিপ্রিয়ে, তুমি সকল প্রাণীকে বরদান করিয়া থাক, তোমাকে প্রণাম করি। যাহারা তোমার শরণাগত হয়, তাহাদের যে গতি, তোমার পূজার ফলে আমারও যেন সেই গতি হয়।”

আজ কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো।

বাংলায় শারদীয়া দুর্গোৎসবের পর আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজার আরাধনা করা হয়। বাঙালি হিন্দুর ঘরে ঘরে এক চিরন্তন প্রার্থনা। প্রায় প্রতি ঘরে ঘরেই দেবী লক্ষ্মীর পূজা হয়ে থাকে। লক্ষ্মী হলেন ধন সম্পত্তির দেবী। ধন সম্পদের আশায় ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মী পূজা হয়ে থাকে।

তবে দেবী লক্ষ্মীকে বিভিন্ন রূপে কল্পনা করে তাঁর পুজো বা আরাধনা হয়।

মূর্তি

মাটির দিয়ে তৈরি ছাঁচে বা কাঠামো তৈরি করে তাতে দেবী মূর্তি তৈরি করে পূজা করা হয়। এটাই সাধারণ নিয়ম।

আড়ি লক্ষ্মী

বেতের ছোট চুপড়ি বা ঝুড়িতে ধান ভর্তি করে তার ওপর দুটি কাঠের লম্বা সিঁদুর কৌটো লালচেলি দিয়ে মুড়ে দেবীর রূপ দেওয়া হত। একে বলা হত ‘আড়ি লক্ষ্মী’।

কলার বের

কলার বের দিয়ে দেবী লক্ষ্মী কল্পনা করা হয়। কলার বাকলকে গোল করে নারকেলের নতুন কাঠি দিয়ে আটকানো হয়। তাতে সিঁদুর দিয়ে বাঙালি স্বস্তিকা চিহ্ন আঁকা হয়। কলার বাকল দিয়ে তৈরি এই চোঙাকৃতি ভিতরে নিচুনি রাখা হয়। কাঠের আসনের উপরে লক্ষ্মীর পা অঙ্কিত আলপনার উপরে ৯টি চোঙা রাখা হয়। এই ৯টি বাকলের মধ্যে পঞ্চশস্য দেওয়া হয় সর্বশেষে শীষযুক্ত নারকেল রেখে লাল চেলি দিয়ে ঢেকে বউ সাজিয়ে লক্ষ্মী কল্পনা করা হয়।

সপ্ততরী

নবপত্রিকা বা কলার পেটোর তৈরি নৌকা এই পূজার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই নৌকা এখনও বহু গৃহস্থেই তৈরি হয়ে থাকে। তবে বাজারেও এখন কিনতে পাওয়া যায় কলার পেটো। একে সপ্ততরী বলা হয়। এই তরীকে বাণিজ্যের নৌকা হিসাবে ধরা হয়। তাতে অনকেই টাকা -পয়সা, চাল, ডাল, হরিতকি, কড়ি, হলুদ সাজিয়ে রাখেন।

পোড়া মাটির ঘট

লক্ষ্মীর মুখ সমন্বিত পোড়া মাটির ঘটে চাল বা কখনও কখনও জল ভরে সেটিকে লক্ষ্মী কল্পনা করে পূজা করা হয়।

সরায় পটচিত্র

অনেক বাড়িতেই পূর্ববঙ্গীয় রীতি মেনে সরার পটচিত্রে পূজা করা হয়। এই সরাতে লক্ষ্মী, জয়া-বিজয়া সহ কয়েকটি বিশেষ পুতুলকে চিত্রায়িত করা হয়। লক্ষ্মী সরাও হয় নানা রকম, যেমন ঢাকাই সরা, ফরিদপুরি সরা, সুরেশ্বরী সরা এবং শান্তিপুরী সরা। নদিয়া জেলার তাহেরপুর, নবদ্বীপ এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন স্থানে লক্ষ্মীসরা আঁকা হয়। তবে অঞ্চল ভেদে লক্ষ্মী সরায় তিন, পাঁচ, সাত পুতুল আঁকা হয়। এতে থাকে লক্ষ্মী, জয়া বিজয়া সহ লক্ষ্মী, রাধাকৃষ্ণ, সপরিবার দুর্গা ইত্যাদি। ফরিদপুরের সরায় দেবদেবীরা সাধারণত একটি চৌখুপির মধ্যে থাকেন। আবার সুরেশ্বরী সরায় উপরের অংশে মহিষমর্দিনী আঁকা হয় আর নিচের দিকে থাকেন সবাহন লক্ষ্মী।

আরও পড়ুন-লক্ষ্মী পুজোয় মন্দা বাজার, নেই বিক্রি-বাটা, মাথায় হাত দোকানিদের

Related articles

বেঁচে থাকলে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত! পুরুলিয়ার সভা থেকে বিজেপিকে আক্রমণ দেবাংশুর

ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বেঁচে নেই। নইলে বিজেপি রবীন্দ্রনাথকে রোহিঙ্গা ও নজরুলকে অনুপ্রবেশকারী বলে দাগিয়ে দিত। শনিবার পুরুলিয়া শহরের...

টাকা পেয়েও কাজে দেরি! ‘বাংলার বাড়ি’ নিয়ে কড়া প্রশাসন, রিপোর্ট চাইল নবান্ন

প্রথম দফায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা পাওয়ার পরও বহু উপভোক্তা এখনও ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের কাজ শুরু করেননি।...

ঝুলনের চোখে বাংলার সেরা ক্রিকেটার রিচা, মহিলা ক্রিকেটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সৌরভ

বাংলার বিশ্বকাপ জয়ী একমাত্র ক্রিকেট তারকা রিচা ঘোষের (Richa Ghosh) সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে শনিবার ইডেন গার্ডেন্সে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন...

সৌরভ ছাড়া অন্য কারও ICC সভাপতি থাকার কথা নয়: বললেন ‘ঠোঁটকাটা’ মমতা

ছিল বিশ্বজয়ী ক্রিকেটার রিচা ঘোষের (Richa Ghosh) সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। শনিবার ইডেনে সেই অনুষ্ঠানে বোমা ফাটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের...
Exit mobile version