‘ভয়াবহ সেই স্মৃতি ভুলব না’, অর্ণব গ্রেফতারে পুলিশকে ধন্যবাদ মৃত অনভয়ের স্ত্রীর

বুধবার সকালে রিপাবলিক টিভির প্রধান সম্পাদক অর্ণব গোস্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ২০১৮ সালে ৫৩ বছর বয়সি ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অনভয় নায়েক ও তাঁর মা কুমুদ নায়েক আত্মহত্যার মামলায় অর্ণবের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচন দেওয়ার অভিযোগে এই গ্রেফতার বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনার পর এদিন মুম্বই পুলিশকে ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি সেদিনের মর্মান্তিক ঘটনার কথা স্মরণ করে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয় বিবৃতি দিলেন অনভয় নায়েকের স্ত্রী।

বুধবার অনভয় নায়েকের স্ত্রী বলেন, ‘২০১৮ সাল আমি কখনও ভুলব না। আমার স্বামী তাঁর সুইসাইড নোটে তিনটি নাম উল্লেখ করেছিলেন। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমার স্বামীর মৃত্যুর কারণ অর্ণব গোস্বামী। মহারাষ্ট্র পুলিশের এই পদক্ষেপ আমাদের জন্য ন্যায়।’ এর পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অনভয় নায়েকের কন্যা অনন্যা নায়েক বলেন, ‘অর্ণব আমার বাবাকে হুমকি দিয়েছিলেন। আমাকে বলা হয়েছিল ওনার কেরিয়ার খারাপ করে দেওয়া হবে। আমার বাবার সমস্ত ক্লায়েন্ট সহ সবাইকে অর্ণব জানিয়েছিল বাবাকে কাজ না দেওয়ার জন্য।’

অনভয় নায়েকের লেখা সেই সুইসাইড নোট

পুলিশ আধিকারিকদের তরফে জানা গিয়েছে, ২০১৮ সালে ওই ইন্টিরিয়র ডিজাইনার ও তার মায়ের বকেয়া টাকা দেয়নি রিপাবলিক টিভি। যার জেরে আত্মহত্যা করেন তারা। তৎকালীন সময়ে অনেক অনুরোধের পর এফআইআর দায়ের হলেও রায়গর জেলার থানার পুলিশ এই মামলার তদন্ত করেননি বলে অভিযোগ তোলা হয় ওই পরিবারের তরফে। এর পরই চলতি বছরের মে মাসে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অনিল দেশমুখ অনভয় নায়েকের মৃত্যু মামলায় নতুন করে তদন্ত নির্দেশ দেন। নতুন করে দায়ের হয় এফআইআর। এই সময় মৃত নায়েকের স্ত্রীর একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ্যে আসে যেখানে স্বামীর মৃত্যুর ন্যায় পাওয়ার দাবিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় আবেদন জানান তিনি। পাশাপাশি মুম্বই পুলিশের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায় তাকে।

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে আত্মঘাতী হন ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অনভয় নায়েক ও তাঁর মা কুমুদ নায়েক। মৃত্যুর আগে অনভয় অভিযোগ করেন, রিপাবলিক টিভি চ্যানেল সংস্থার ইন্টিরিয়র ডিজাইনিং এর কাজ করার জন্য চুক্তি অনুযায়ী তাঁর যে টাকা প্রাপ্য তা তাঁকে দেননি অর্ণব গোস্বামী। এরপর এই আত্মহত্যা নিয়ে আলিবাগ থানায় অর্ণবের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় আত্মঘাতী মা- ছেলের পরিবার। পরবর্তী সময়ে পরিবারের পক্ষ থেকে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের কাছে অভিযোগ জানানো হয় যে অভিযুক্ত অত্যন্ত প্রভাবশালী বলেই ঠিকভাবে তদন্ত চালাচ্ছে না পুলিশ। এরপর মহারাষ্ট্র পুলিশের তদন্তের ভিত্তিতে বুধবার সকালে নিজের বাড়ি থেকে অর্ণব গোস্বামীকে আটক ও গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে মামলার তদন্তের জন্য তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আলিবাগে।

Previous articleবিহারে পদ্ম ঝরলে বঙ্গের দলবদলও বিশ বাঁও জলে, কণাদ দাশগুপ্তর কলম
Next articleবিজেপির মিছিলকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার সেন্ট্রাল এভিনিউ