Monday, August 25, 2025

প্রভু এসেছিলেন, খেয়েওছিলেন, তবে অভাব ঘোচেনি হাওড়ার জগদীশের

Date:

Share post:

‘ভোজন রাজনীতি’ শুরুটা বঙ্গে চালু করেছে বিজেপি। নকশালবাড়ি থেকে প্রথম শুরু হয় এই রাজনীতির প্রচলন। রাজ্যের কোনও গরীব বা নিম্নবিত্তের বাড়িতে খাবার খেয়ে ওই শ্রেণীর মানুষকে বোঝানোর চেষ্টা ‘আমি তোমাদেরই লোক’। ২০২১-এ বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে ফের শুরু হয়েছে অভিনব পন্থার এই রাজনীতি। কিন্তু যাদের বাড়িতে এসে নেতারা খেয়ে যাচ্ছেন পরবর্তীতে কেমন রয়েছে সেই সমস্ত পরিবার। এর আগে অমিত শাহ খেয়ে গিয়েছিলেন নকশালবাড়ির মাহালি দম্পতির বাড়িতে। সম্প্রতি তার চরম দুর্দশা দেখে তাকে চাকরি দিয়েছে রাজ্য। অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি হাওড়ার আদিবাসী পরিবার জগদীশের বাড়িতেও। ২০১৭ সালে এনার বাড়িতেই মধ্যাহ্নভোজ সেরেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু।

হাওড়ার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গে এসেছিলেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু। কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর জনসংযোগটাও ভালোই করেন তিনি। হতদরিদ্র ট্যান্ডেল বাগানের জগদীশ মল্লিকের বাড়িতে চলে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া। সেই খাওয়া-দাওয়ার আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সুরেশ প্রভু, দিলীপ ঘোষ সহ একাধিক ভিভিআইপি বিজেপি নেতা। নেতাদের সন্তুষ্ট করতে সাধ্যের বাইরে বেরিয়ে ভাত, ডাল, রুটি, সবজি, মিষ্টি সহ প্রচুর আয়োজন করে জগদীশের পরিবার। আশা ছিল কেন্দ্রের এইসব ভিভিআইপি নেতাদের সৌজন্য হয়তো জীবনে আসবে স্বচ্ছলতা। তবে সে ঘোর কাটতে বেশি সময় লাগেনি। বর্তমানে চরম অসহায় অবস্থায় থাকা জগদীশ বলেন, ‘২০১৫ সালের জুন মাসে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছি। আগে যে ভাঙাচোরা কোয়ার্টারে থাকতাম, অবসরের পর সেটাও ছেড়ে দিতে হয়েছে। ভাইপো রেলের অস্থায়ী কর্মী। তাঁর দয়ায় পাশের একটা কোয়ার্টারে আছি।’

সংবাদমাধ্যমকে জগদীশ বলেন, স্ত্রী আর ছোট ছেলে সুজিতকে নিয়ে তিন জনের সংসার তাঁর। সুজিত বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থায় ছোটখাটো চাকরি করে। নিজের সামান্য পেনশন ও সুজিতের রোজগারে কোনওমতে সংসার চলে আমাদের। তবে দিল্লিতে থাকা সুরেশ প্রভু না হয় জগদীশের খোঁজখবর নিতে পারেন না। কিন্তু রাজ্য বিজেপি নেতারা তো নিতে পারেন।

আরও পড়ুন: মাস্টার স্ট্রোক মুখ্যমন্ত্রীর, রাজ্যে ৩৫ লক্ষ কাজের ঘোষণা

জগদীশের অভিযোগ ওই দিনের পর থেকে বাড়িতে আসা তো দূরের কথা ফোনেও কেউ কখনও কোনও খোঁজ নেয়নি। তিনি আরও বলেন, নিজের একটা ঘর পর্যন্ত নেই কোয়াটারে। অন্যের দয়ায় থাকি। বর্ষাকালে এখানে জল জমে। ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া সঙ্গে সারা বছর বাস আমাদের। যদিও ওই পরিবারের পাশে না দাঁড়ানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে উত্তর হাওড়ার বিজেপি নেতা উমেশ রায় বলেন, ‘এ সব তৃণমূলের রটনা। ওই পরিবারের খোঁজখবর আমরা নিয়মিত রাখি। ওঁরা সবাই ভাল আছেন। মন্ত্রীর ওই মধ্যাহ্নভোজনের পরে বিজেপি-র প্রতি তাঁদের আগ্রহও বেড়েছে। ছোট ছেলে তো আমাদের দলের কর্মী। দলিত আদিবাসী পরিবারের পাশে বিজেপি নেতৃত্ব সব সময়েই আছে।’

spot_img

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...