এপ্রিলেই রাজ্যে ভোট, শাহের মন্তব্যে এমনই অর্থবহ ইঙ্গিত

একুশের ভোট মার্চ-এপ্রিলেই ?

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এক মন্তব্য ঘিরে এমন জল্পনাই তৈরি হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে৷

রাজ্য বিধানসভার মেয়াদ আগামী মে পর্যন্ত৷ সেই হিসাবে মে মাসেও ভোট হতে পারে৷ কিন্তু অমিত শাহ রাজ্য সফরে এসে ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছেন, বাংলায় ভোট হতে পারে তার আগেই৷

রাজ্য সরকার ফেলে ৩৫৬ ধারা জারি সংক্রান্ত ইস্যুতে শাহকে নানা প্রশ্নের সামনেই পড়তে হয়েছিলো৷ এসব প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুঝিয়েছেন, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারির ব্যাপারে তিনি আগ্রহী নন৷ বঙ্গ-বিজেপির উৎসাহী নেতাদের এ ধরনের উৎসাহেও শাহ জল ঢেলে দেন৷ সাংবাদিক বৈঠকেও এই একই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে অনেকটাই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করে শাহ বলেন, ‘‘রাজ্যে এপ্রিল মাসে তো এমনিতেই সরকার বদলে যাবে। আর এর হয়তো ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের দরকারই পড়বে না।’’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ কোনও বিষয়ে নেহাতই কথার কথা বলবেন, এমন সাধারনত হয়না৷ নির্দিষ্ট ভাবেই তিনি বলেছেন, “এপ্রিল মাসে তো এমনিতেই সরকার বদলে যাবে”৷ বিজেপির শীর্ষনেতা হিসাবে এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার দাবি তিনি করতেই পারেন৷ কিন্তু নির্দিষ্ট কবে সরকার বদল হবে, সেই ইঙ্গিত কোনও রাজনৈতিক নেতা দিতে পারেন না, তা বলতে পারেন দেশের দ্বিতীয় ক্ষমতাবান মন্ত্রী৷ আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সেই অর্থবহ ইঙ্গিতটাই দিয়েছেন অমিত শাহ৷ অর্থাৎ এ রাজ্যে মার্চ-এপ্রিলেই হতে পারে বিধানসভার নির্বাচন ৷ রাজনৈতিক মহল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্যের মধ্যে এমন ইঙ্গিতই পেয়েছেন৷

৩৫৬ অর্থাৎ রাষ্ট্রপতি শাসন জারি নিয়ে বিজেপির বিভিন্ন মহল থেকে দিল্লিতে দরবার শুরু হয়েছে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও রাজ্যে আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে বলে ক্রমাগত অভিযোগ জানাচ্ছেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নে শাহ বলেন, ‘‘এটা সাংবাদিকদের কাছে বলার বিষয় নয়। সাংবিধানিক বিষয়। রাজ্যপালের রিপোর্টের উপর এটা নির্ভর করবে।’’ তাঁর সংযোজন, রাজ্যে এমনিতেই সরকার বদল আসন্ন। তবে রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্যপাল ধারাবাহিক ভাবে যে সব অভিযোগ করে যাচ্ছেন, তাকেই সমর্থন করে শাহের অভিযোগ, ‘‘রাজ্য তিন রকম আইন চলছে। একটি ভাইপোর জন্য, একটি ভোটব্যাঙ্কের (সংখ্যালঘু) জন্য আর একটি সাধারণ মানুষের জন্য।’’ এ ছাড়া, আইনশৃঙ্খলা থেকে নারী নির্যাতন, প্রশাসনের রাজনীতিকরণ, রাজনৈতিক খুন, দুর্বৃত্তায়ন ইত্যাদি অভিযোগেও রাজ্যে নির্বাচনে হিংসার আশঙ্কা সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নে শাহ বলেন, ‘‘তা নির্ভর করবে তৃণমূলের উপর। বিজেপি প্রতি বুথে পৌঁছে গিয়েছে। মানুষ যাতে ঠিক মতো ভোট দিতে পারেন তা বিজেপি কর্মীরা নিশ্চিত করবেন। নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু এবং অবাধ ভোট করবে।’’ এ দিন শাহর কাছে ব্যারাকপুরের নিহত বিজেপি নেতা মণীশ শুক্লর বাবা ছেলের মৃত্যুর সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।

এ দিন দক্ষিণেশ্বরে ভবতারিণী মন্দিরে পুজো দেওয়ার পরে শাহ যান দক্ষিণ কলকাতায় উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী অজয় চক্রবর্তীর বাড়িতে। সেখানে গান-বাজনাও হয়। অজয়বাবুর বক্তব্য, ‘‘আমার একটাই পার্টি। মিউজ়িক পার্টি। ’’

আরও পড়ুন-দলবিরোধী ও অসামাজিক কাজের অভিযোগ, শাস্তি সত্যরঞ্জনকে

Previous articleবেহালাবাসীর জন্য সুখবর, এই মাসের মধ্যেই চালু হতে পারে মাঝেরহাট ব্রিজ
Next articleহেমন্তেই শীতের আমেজ, আরও জাঁকিয়ে পড়বে ঠান্ডা