হাইড্রোজেন পার অক্সাইডে শুল্কারোপ : ডব্লিউটিও-তে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘নালিশ’ জানাবে এই দেশ

খায়রুল আলম (ঢাকা) : বাংলাদেশ থেকে রফতানিকৃত হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের ওপর অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্কারোপ করেছে পাকিস্তান, যেটিকে অন্যায্য বলে মনে করছে সরকার। এখন বিষয়টি নিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও)-তে নালিশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। পাকিস্তানের অভিযোগ, বাংলাদেশের রফতানিকারকরা উৎপাদন মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে দেশটিতে পণ্য রফতানি করছে। এ কারণে তাদের (পাকিস্তান) অভ্যন্তরীণ শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সূত্রের খবর, পাকিস্তানের হাইড্রোজেন পার অক্সাইড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের আবেদনে পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির ন্যাশনাল ট্যারিফ কমিশন ২০১৬ সালে বাংলাদেশ থেকে রফতানিকৃত পণ্যটির ওপর এই শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নেয়। তাৎক্ষণিকভাবে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। এ ধরনের এন্টি ডাম্পিং শুল্কারোপের বিষয়টি যে অন্যায্য সেটি উল্লেখ করে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য পাকিস্তান সরকারকে চিঠিও দেওয়া হয়। জানা গেছে, চিঠি চালাচালি ও দ্বিপক্ষীয় আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি রিভিউর সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান সরকার। তারা বাংলাদেশ থেকে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রফতানি করে এমন ৩টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে তাদের কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর চায়। এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের দুটি প্রতিষ্ঠান সেই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর জমা দেয়। এরপরও দেশটির সরকার গত ২৬ আগস্ট রিভিউ তদন্তের চূড়ান্ত নোটিস জারি করে বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের ওপর এন্টি ডাম্পিং শুল্কারোপ করে।

জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের শুল্কারোপের বিষয়টি নিয়ে গত ১৩ অক্টোবর একটি সভা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই সভায় বাংলাদেশ থেকে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানি করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ডিজিএম জানান, পাকিস্তানের আপিল ট্রাইব্যুনাল বাংলাদেশি রফতানিকারকদের পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে রিভিউ কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে। বিক্রয়মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এমন সময় বেছে নিয়েছে যখন বাংলাদেশে পণ্যটির বিক্রয়মূল্য কম ছিল; আবার এমন একটি সময়ে উৎপাদন মূল্য নিয়েছে যখন বাংলাদেশে পণ্যটির উৎপাদন খরচ বেশি। ফলে তারা এটি দেখাতে পেরেছে যে বাংলাদেশের রফতানিকারকরা উৎপাদন মূল্যের চেয়ে কম মূল্যে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রফতানি করছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক হাফিজুর রহমান জানান, পাকিস্তানের এন্টি ডাম্পিং আরোপের সিদ্ধান্তটি আমাদের কাছে যৌক্তিক মনে হয়নি। এখন আমাদের রফতানিকারকরা আবেদন করলে বিষয়টি ডব্লিউটিও-এর ডিসপুইট সেটেলম্যান্ট বডিতে উপস্থাপন করা হবে। আমরা যদি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে বোঝাতে পারি যে তাদের সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক নয়, তবে ডব্লিউটিও এটি বাতিল করে দিতে পারে।

আরও পড়ুন-বঙ্গবন্ধুর জীবনী আলোচনার জন্য সংসদে প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব