চিনের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি ১৪টি দেশের, মোদির নীতিতে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা

দীর্ঘ আট বছরের চেষ্টার পর গত ১৫ নভেম্বর কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ বা আরসিইপি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বিশ্বের ১৪ টি দেশ। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবেই এই চুক্তি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে ভারত। ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছিলেন এই চুক্তিতে ভারতের না থাকার সিদ্ধান্তের কথা। তবে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্ত বাণিজ্য থেকে ভারতের সরে আসা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বড়সড় সমস্যা বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কিন্তু কেন সরে আসলো ভারত? ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে এই চুক্তি থেকে সরে আসার কারণ হিসেবে মোদি সরকারের তরফে জানানো হয়েছিল, এই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি ভারতের জন্য উদ্বেগজনক। কারণ হিসেবে জানানো হয়, শুল্কের পার্থক্য কারণে আরসিইপি বাণিজ্য চুক্তি ভারতের জন্য সমস্যাজনক। ফলে বাণিজ্য ঘাটতি এবং পরিষেবা চালুর বিষয়ে ন্যায্য চুক্তির অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তা না হওয়ায় বাধ্য হয়েই সরে আসতে হয় ভারতকে। এর পাশাপাশি জানানো হয়, এই চুক্তির কারণে আমদানি শুল্ক ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ কমে যেত। ফলে প্রচুর আমদানির কারণে দেখা দিত বাণিজ্য ঘাটতি। এর পাশাপাশি ভারত ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’-এর দায়বদ্ধতা না থাকার বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিল। কারণ চুক্তি স্বাক্ষরের পর ভারতকে বন্ধু দেশগুলির সমান সুযোগ-সুবিধা দিতে হতো এই চুক্তিতে অংশগ্রহণকারী দেশ গুলিকে। যা দেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমস্যা বৃদ্ধি করত।

তবে এই চুক্তি স্বাক্ষর না হওয়ার কারণে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ভারতকে যে একাধিক সমস্যাও ভুগতে হবে সেটাও স্পষ্ট করে দিয়েছে অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে ব্যাপক বিনিয়োগ হারাতে হতে পারে ভারতকে। পাশাপাশি আরসিইপি চুক্তির পর ‘আসিয়ান’ দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের বাণিজ্য ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে বর্তমানে বাণিজ্য ক্ষেত্রে ভারতের যে নীতি রয়েছে তা হল ‘অ্যাক্ট ইস্ট নীতি’। সেখান থেকে আসিয়ান দেশগুলি চিন, জাপান, অস্ট্রেলিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী দেশগুলির সঙ্গে নয়া নীতি অনুযায়ী বাণিজ্য করার ফলে ভারতের বাণিজ্য কিছুটা হলেও ধাক্কা খাবে।

আরও পড়ুন:নীতীশকে চাপে রাখতেই সুশীল মোদিকে সরালো বিজেপি

প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর আরসিইপি চুক্তিতে চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, এবং নিউজিল্যান্ড ছাড়াও সাক্ষর করেছে ১০ আসিয়ান সদস্য দেশ। যে গুলি হল, ব্রুনেই, ভিয়েতনাম, লাওস, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড, মায়ানমার, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইন্স।

Previous articleবাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক সাকিবকে হত্যার হুমকি এক যুবকের
Next articleপুরনো বচসার জেরে উৎসবের রাতে চিংড়িহাটায় ধুন্ধুমার