Monday, August 25, 2025

একটি প্রতীকী চিত্রেই ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ভবিষ্যতের পূর্বাভাস। কৃষি আইনের প্রতিবাদে ২৪ টি বিরোধী দলের কথা বলতে পাঁচ সদস্যের যে টিম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে তার নেতৃত্ব দেন এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার। ওই দলে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তিনি ছিলেন নেহাতই পার্শ্বচরিত্র হিসাবে। প্রকাশ্যে এই প্রতীকী দৃশ্য এবং রাজধানীর অন্দরে কিছু বৈঠকের গতিপ্রকৃতি বলছে, আগামীদিনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএর ভরকেন্দ্রে আসতে চলেছেন এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার। দেশজুড়ে ক্রমশ দুর্বল হতে চলা কংগ্রেসের কাছে এই বিকল্প মেনে নেওয়া ছাড়া সম্ভবত অন্য উপায়ও নেই। আর এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে ইউপিএর রাশ যাবে কোনও অকংগ্রেসি বিরোধী দলের হাতে, এতদিন যে দায়িত্ব সামলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।

রাজনৈতিক মহলের অনুমান, সবকিছু ঠিক থাকলে আর মাসখানেক বাদে কংগ্রেস সভানেত্রীর দায়িত্বের পাশাপাশি ইউপিএ চেয়ারপার্সনের দায়িত্বও ছেড়ে দেবেন সোনিয়া। বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে এইসব দায়িত্ব নিজের হাতে আর রাখতে চান না তিনি। কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি পদে রাহুলের পুনর্বহালের সম্ভাবনা জোরালো হলেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্য কোনও মুখও উঠে আসতে পারে। তবু রাহুল যদি কংগ্রেস সভাপতি হনও, সোনিয়ার পরিবর্তে ইউপিএর স্টিয়ারিং তাঁর হাতে রাখতে রাজি হবেন না কংগ্রেস কোনও জোটসঙ্গীই। রাজনীতি ও নেতৃত্বদানে রাহুলের ধারাবাহিকতার অভাব নিয়ে শুধু বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতারাই নন, কয়েকদিন আগে কটাক্ষ করেছিলেন খোদ শারদ পাওয়ার। বিহার নির্বাচনে কংগ্রেসের খারাপ ফলের জন্যই ক্ষমতা হাতছাড়া হয়েছে মহাজোটের। সেজন্য রাহুল সহ কংগ্রেস নেতৃত্বের সিরিয়াসনেসের অভাবকেই দায়ী করেছেন আরজেডি নেতারা। ফলে এটা এখন স্পষ্ট, ইউপিএর শীর্ষপদে রাহুলের কর্তৃত্ব মানবে না এনসিপি, আরজেডি, ডিএমকে সহ কোনও জোটসঙ্গীই। বরং একাধিক কারণে সোনিয়ার পর ইউপিএর চেয়ারপার্সন পদের দাবিদার শারদ পাওয়ার। প্রবীণ রাজনীতিক শারদ পাওয়ার দীর্ঘদিন কংগ্রেস দল করেছেন। মূলত সোনিয়ার সঙ্গে বিরোধের জেরেই কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি তৈরি করেন এবং সেই দলের সর্বভারতীয় পরিচিতিও এসেছে পাওয়ারের সৌজন্যেই। সাংগঠনিক দক্ষতার পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রের কৃষিমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকার সুবাদে তাঁর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও প্রচুর। শুধু বিরোধী দলের নেতারাই নন, বিজেপি নেতৃত্ব এবং খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পাওয়ারের সুসম্পর্ক রয়েছে। সর্বোপরি মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিরোধী তিন দলের সরকার গঠনের মূল কারিগর শারদ পাওয়ারই। তাঁর সৌজন্যেই শিবসেনা ও কংগ্রেসের মত কার্যত দুই মেরুতে থাকা দুটি দল হাত মিলিয়েছে। নিশ্চিতভাবেই মহারাষ্ট্র সরকারে শারদ পাওয়ার ও তাঁর দল এনসিপি এখন মুখ্য নিয়ন্ত্রক। সোনিয়া গান্ধী সরে গেলে পাওয়ারের সমকক্ষ নেতা এই মুহূর্তে আর নেই ইউপিএতে। তাই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মুখ হিসাবে তাঁকেই এবার গোটা ইউপিএর চালিকাশক্তি হিসাবে দেখা যেতে পারে। যদিও এখনই প্রকাশ্যে এমন সম্ভাবনার কথা স্বীকার করছেন না পাওয়ার বা তাঁর দলের নেতারা।

আরও পড়ুন- বিয়ের পর জামিন পেলেন ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি

 

Related articles

গাজায় সাংবাদিকসহ ১৯ জনের মৃত্যু! নীরব নেতানিয়াহু

দুর্ভিক্ষপীড়িত গাজায় ফের রক্তক্ষয়ী হামলা চালাল ইজরায়েলি সেনা। সোমবার দুপুরে গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও...

শ্রমশ্রী প্রকল্পে ভুয়ো আবেদন রুখতে কড়া নজরদারি রাজ্যের 

ঘরে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত শ্রমশ্রী প্রকল্পে প্রকৃত ও যোগ্য প্রার্থীরাই সুযোগ পান, তা নিশ্চিত করতে বিশেষ...

আদিবাসী উন্নয়ন আরও সুদূর প্রসারি করার বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর, সৌজন্য উড়িয়ে বৈঠকে অনুপস্থিত বিজেপি

আদিবাসী উন্নয়ন নয়, রাজনীতিই যে তাদের লক্ষ্য তা আরও একবার প্রমাণ করল বিজেপি (BJP)। আমন্ত্রণ পেয়েও সৌজন্যের জবাব...

DHFC-র হারের পরই ক্লাব থেকে কর্তাদের ছোট করার চেষ্টা, জবাব দিলেন মানস

ডুরান্ড কাপের(Durand Cup) ফাইনালে পৌঁছে সকলকে চমকে দিয়েছিল ডায়মন্ডহারবার এফসি(DHFC)। বাংলার ফুটবলকে যে দল নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে, তাদের...
Exit mobile version