Tuesday, August 26, 2025

একটি প্রতীকী চিত্রেই ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে ভবিষ্যতের পূর্বাভাস। কৃষি আইনের প্রতিবাদে ২৪ টি বিরোধী দলের কথা বলতে পাঁচ সদস্যের যে টিম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে তার নেতৃত্ব দেন এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার। ওই দলে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তিনি ছিলেন নেহাতই পার্শ্বচরিত্র হিসাবে। প্রকাশ্যে এই প্রতীকী দৃশ্য এবং রাজধানীর অন্দরে কিছু বৈঠকের গতিপ্রকৃতি বলছে, আগামীদিনে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএর ভরকেন্দ্রে আসতে চলেছেন এনসিপি নেতা শারদ পাওয়ার। দেশজুড়ে ক্রমশ দুর্বল হতে চলা কংগ্রেসের কাছে এই বিকল্প মেনে নেওয়া ছাড়া সম্ভবত অন্য উপায়ও নেই। আর এই প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হলে ইউপিএর রাশ যাবে কোনও অকংগ্রেসি বিরোধী দলের হাতে, এতদিন যে দায়িত্ব সামলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী।

রাজনৈতিক মহলের অনুমান, সবকিছু ঠিক থাকলে আর মাসখানেক বাদে কংগ্রেস সভানেত্রীর দায়িত্বের পাশাপাশি ইউপিএ চেয়ারপার্সনের দায়িত্বও ছেড়ে দেবেন সোনিয়া। বয়স এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে এইসব দায়িত্ব নিজের হাতে আর রাখতে চান না তিনি। কংগ্রেসের পরবর্তী সভাপতি পদে রাহুলের পুনর্বহালের সম্ভাবনা জোরালো হলেও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অন্য কোনও মুখও উঠে আসতে পারে। তবু রাহুল যদি কংগ্রেস সভাপতি হনও, সোনিয়ার পরিবর্তে ইউপিএর স্টিয়ারিং তাঁর হাতে রাখতে রাজি হবেন না কংগ্রেস কোনও জোটসঙ্গীই। রাজনীতি ও নেতৃত্বদানে রাহুলের ধারাবাহিকতার অভাব নিয়ে শুধু বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতারাই নন, কয়েকদিন আগে কটাক্ষ করেছিলেন খোদ শারদ পাওয়ার। বিহার নির্বাচনে কংগ্রেসের খারাপ ফলের জন্যই ক্ষমতা হাতছাড়া হয়েছে মহাজোটের। সেজন্য রাহুল সহ কংগ্রেস নেতৃত্বের সিরিয়াসনেসের অভাবকেই দায়ী করেছেন আরজেডি নেতারা। ফলে এটা এখন স্পষ্ট, ইউপিএর শীর্ষপদে রাহুলের কর্তৃত্ব মানবে না এনসিপি, আরজেডি, ডিএমকে সহ কোনও জোটসঙ্গীই। বরং একাধিক কারণে সোনিয়ার পর ইউপিএর চেয়ারপার্সন পদের দাবিদার শারদ পাওয়ার। প্রবীণ রাজনীতিক শারদ পাওয়ার দীর্ঘদিন কংগ্রেস দল করেছেন। মূলত সোনিয়ার সঙ্গে বিরোধের জেরেই কংগ্রেস ছেড়ে এনসিপি তৈরি করেন এবং সেই দলের সর্বভারতীয় পরিচিতিও এসেছে পাওয়ারের সৌজন্যেই। সাংগঠনিক দক্ষতার পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রের কৃষিমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকার সুবাদে তাঁর প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাও প্রচুর। শুধু বিরোধী দলের নেতারাই নন, বিজেপি নেতৃত্ব এবং খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে পাওয়ারের সুসম্পর্ক রয়েছে। সর্বোপরি মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিরোধী তিন দলের সরকার গঠনের মূল কারিগর শারদ পাওয়ারই। তাঁর সৌজন্যেই শিবসেনা ও কংগ্রেসের মত কার্যত দুই মেরুতে থাকা দুটি দল হাত মিলিয়েছে। নিশ্চিতভাবেই মহারাষ্ট্র সরকারে শারদ পাওয়ার ও তাঁর দল এনসিপি এখন মুখ্য নিয়ন্ত্রক। সোনিয়া গান্ধী সরে গেলে পাওয়ারের সমকক্ষ নেতা এই মুহূর্তে আর নেই ইউপিএতে। তাই সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মুখ হিসাবে তাঁকেই এবার গোটা ইউপিএর চালিকাশক্তি হিসাবে দেখা যেতে পারে। যদিও এখনই প্রকাশ্যে এমন সম্ভাবনার কথা স্বীকার করছেন না পাওয়ার বা তাঁর দলের নেতারা।

আরও পড়ুন- বিয়ের পর জামিন পেলেন ধর্ষণ মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি

 

Related articles

ভয় পেয়েই কুকথা শান্তনুর! ফাঁস মতুয়াদের নিয়ে নোংরা রাজনীতি

মতুয়াদের নিয়ে রাজনীতি করতে মাঠে নেমেছিলেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে আধিপত্য কায়েমে বিজেপির নোংরা রাজনীতি দীর্ঘদিনের। ঠাকুরবাড়ির...

নীরবে প্রস্তুতি শামির, দলীপ দিয়েই কামব্যাকের লড়াই

কয়েকদিন আগে এশিয়া কাপের(Asia Cup) দল ঘোষণা হয়েছে। সেখানে সুযোগ পাননি মহম্মদ সামি(Mohammed Shami)। ভারতীয় দলে তিনি ফিরবেন...

রবি ঠাকুরের ‘কঙ্কাল’ থেকে ‘কনকচাপা’: পার্থর নাটক দেখতে ভিড় জিডি বিড়লা সভাঘরে

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য ভাণ্ডার অবলম্বনে একের পর এক নাটক তৈরি হয়েছে— শারদোৎসব, রাজা, ডাকঘর, অচলায়তন, ফাল্গুনী, রক্তকরবী আজও...

২৮ অগাস্ট পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার আর্জি অধ্যক্ষদের, চিঠি মুখ্যমন্ত্রী -শিক্ষামন্ত্রীকেও

তৃণমূল ছাত্রপরিষদের (টিএমসিপি) প্রতিষ্ঠা দিবসকে ঘিরে ফের সরগরম হয়ে উঠল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। আগামী ২৮ অগাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলিতে...
Exit mobile version