সবাইকে দল থেকে তাড়ানোর ছক কষছেন ফিরহাদ: জিতেন্দ্র তিওয়ারি

পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim) লেখা বিধায়ক তথা আসানসোল (Asansol) পুরসভার মুখ্য প্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারি’র (Jitendra Tiwari) চিঠি প্রকাশ্যে আসার পরই শুরু হয়েছে জোর তরজা৷ যার জেরে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে তৃণমূল (TMC)৷ আর এই সুযোগে মঞ্চে ঢুকে পড়েছে বিজেপি (BJP)৷

চিঠি প্রকাশ্যে আসার পর টানা বাকযুদ্ধ চলছে ফিরহাদ ও জিতেন্দ্রর৷ জিতেন্দ্র তিওয়ারি এদিন জোরের সঙ্গে দাবি করেছেন, চিঠি ফাঁস করেছেন ফিরহাদ হাকিম। এর পরই কার্যত বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাঁর চাঞ্চল্যকর দাবি, “সবাইকে দল থেকে তাড়িয়ে একা রাজত্ব করার মতলবে রয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।”

এদিন জিতেন্দ্র তিওয়ারির চিঠি প্রকাশ্যে আসতেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “চিঠি লেখার আগে জিতেন্দ্র তিওয়ারির উচিত ছিলো আমার সঙ্গে কথা বলা৷” একই সঙ্গে ফিরহাদ জানান, “কেউ বিজেপিতে যেতে চাইলে দরজা খোলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়( Mama ta Banerjee) কাউকে আটকাতে বারণ করেছেন”।

ফিরহাদের এই মন্তব্যেই কার্যত ক্ষিপ্ত হয়ে যান জিতেন্দ্র তিওয়ারি৷ পুরমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে সংবাদমাধ্যমকে জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, “আসানসোলের কথা বললেই যদি উনি বলেন বিজেপির এজেন্ট, দল থেকে বেরিয়ে যান, এতখানি সরলীকরণ ঠিক নয়। আমরা আসানসোলে থাকি, এখানকার মানুষকে আমাদের জবাবদিহি করতে হয়”।

এরপরই পুরমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে জিতেন্দ্র বলেন, “উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যতটা ভালবাসেন, আমরা তার থেকে কম ভালবাসি না। বিজেপি ওনার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে ময়দানে আমি লড়াইটা লড়ি। আমাকে এসব জ্ঞান দিতে হবে না”।

আরও পড়ুন:লাদাখ নিয়ে শত্রুর মোকাবিলায় সম্পূর্ণ তৈরি ভারত, কলকাতায় এসে জানালেন বিপিন রাওয়াত

চিঠি ফাঁস তিনি করেননি দাবি করে জিতেন্দ্র তিওয়ারি এরপর বলেছেন, “আমি তো আমার মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। বাইরে কাউকে জানাইনি। এর আগেও ৬-৭ বার মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে আমার মতামত জানিয়েছি। মন্ত্রী আমাকে ডেকে কথা বললেই তো মিটে যেত। উনি সংবাদমাধ্যমের সামনে এসব নিয়ে কথা বলতে গেলেন কেন? আর এবারের চিঠি প্রকাশ্যে এল কী করে? সব বুঝি, ফিরহাদ হাকিম চাইছেন একা উনি শুধু দলে থাকবেন, আর কেউ থাকবে না”।

দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দিকে তোপ দেগে জিতেনবাবু বলেছেন,
“তৃণমূলের লোকেরাই বিজেপিকে সুযোগ করে দিচ্ছে৷ এই সুযোগ তো আমাদের লোকেরাই করে দিলো। চিঠি বাইরে না এলে তো বিজেপি এত কথা বলার সুযোগ পেত না। আমাদের লোকেরাই যদি বাইরের লোকেদের সব কথা বলে দেয়, তাহলে তো তারা সুযোগ পাবেই”।

এদিকে এই ইস্যুতে আসরে নেমে তৃণমূলকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। আসানসোলের পুর প্রশাসকের চিঠি তুলে ধরে টুইটে রাজ্য সরকার ও তৃণমূলের উদ্দেশে শ্লেষ ছুঁড়ে দিয়েছেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা অমিত মালব্য। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘ভূতের মুখে রাম নাম। ভোট এসে গিয়েছে। মানুষের মুখোমুখি হতে হবে। ফলে পিঠ বাঁচাতেই এইসব করা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত,সোমবারই আসানসোলের মুখ্য পুরপ্রশাসক জিতেন্দ্র তিওয়ারির এই চিঠি প্রকাশ্যে আসে৷ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে লেখা এই চিঠিতে তিওয়ারির দাবি, রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের স্মার্ট সিটি প্রকল্পের(Smart City) ২,০০০ কোটি টাকা থেকে আসানসোলের নাগরিকদের বঞ্চিত করেছে রাজ্য সরকার। এই বাবদ যে ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম দিয়েছিলেন, সেই প্রতিশ্রুতি রাখেননি তিনি।

Previous articleউত্তরবঙ্গ সফরে জলপাইগুড়িতে মমতা
Next articleফিরহাদ-জিতেন্দ্রকে মঙ্গলবার বৈঠকে ডাকলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়