Thursday, December 18, 2025

করোনার থাবা! ২০২০ সালে পোশাক রফতানি কমেছে ১৭ শতাংশ

Date:

Share post:

করোনার প্রথম ঢেউ ঠেকাতে গত বছর বিশ্বব্যাপী যখন লকডাউন চলছিল তখন ইউরোপের অনেক দেশেই একে একে বন্ধ হয়ে যায় প্রাইমার্কের (Primark) খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র। ব্যবসায় এমন আকস্মিক মন্দার কারণে পোশাক সরবরাহকারী কারখানাগুলিকে দেওয়া বিপুল পরিমাণ ওর্ডারও বাতিল করতে হয় আয়ারল্যান্ডভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানকে, যার ধাক্কা এসে পড়ে দেশের পোশাক রফতানিতে।

আগে থেকেই ব্যবসা খারাপ যাচ্ছিল যুক্তরাজ্যভিত্তিক ক্রেতাপ্রতিষ্ঠান ডেবেনহ্যামসের (Debenhams)। কোভিড এসে আরো নাজুক করে তোলে তাদের পরিস্থিতি। এখন ব্যবসা বিক্রি করে দিতে ক্রেতা খুঁজছে ডেবেনহ্যামস। সেই কারখানাগুলোকে দেওয়া পোশাকের অর্ডারও বাতিল করে তারা, যার মধ্যে বাংলাদেশের অনেক কারখানাও আছে।

কেবল প্রাইমার্ক বা ডেবেনহ্যামস নয়, মহামারীর কারণে ইউরোপ-আমেরিকার আরো অনেক প্রতিষ্ঠানকে দীর্ঘ সময় বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ রাখতে হয়েছে। এতে বিপুল পরিমাণ অর্ডার হারিয়েছে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাত। বিজিএমইএর হিসাব বলছে, কোভিডের প্রথম ঢেউয়ের প্রভাবে গত বছরের এপ্রিল নাগাদ প্রায় সোয়া তিন বিলিয়ন ডলারের অর্ডার বাতিল হয়েছে, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে পুরো বছরের রফতানিতে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ( NBR- National Board of Revenue) থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (EPB-Export Processing Bureau) ও বিজিএমইএর ( BGMEA) সংকলন করা পরিসংখ্যান বলছে, সদ্যসমাপ্ত বছরে বিশ্ববাজারে মোট ২ হাজার ৭৩১ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। যদিও ২০১৯ সালে রফতানি হয় ৩ হাজার ২৯৩ কোটি ডলারের পোশাক। সেই হিসাবে রফতানি কমেছে ১৭ শতাংশ বা ৫৬১ কোটি ডলারেরও বেশি। মূলত কভিডের প্রভাবেই রফতানি এত কমে যায় বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
পোশাক খাতের মালিকদের বিকেএমইএর ( BKMEA) নেতারা বলছেন, কভিড-১৯-এর ছোবলে সারা বিশ্বের অর্থনীতি এখন পর্যুদস্ত। স্থবির হয়ে যাওয়া অর্থনীতির চাকাকে চলমান রাখতে রীতিমতো সংগ্রাম করতে হচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও তার উদ্যোক্তাদের। সংকুচিত হয়ে পড়েছে কর্মক্ষেত্র। কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে তার কোনো পূর্বাভাস নেই। চরম প্রতিকূলতা ও অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে সিংহভাগ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সরকার ঘোষিত সহযোগিতা নিয়ে পোশাক শিল্প মালিকরা কোনোভাবে টিকে থাকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কারখানায় পর্যাপ্ত ক্রয়াদেশ নেই, নেই আগামী দিনগুলোতেও স্বাভাবিক কার্যাদেশ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রধান রফতানি গন্তব্য আমেরিকা ও ইউরোপের প্রতিটি দেশ এখনো কোভিড-১৯-এর ব্যাপক প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করছে। এ অবস্থায় একের পর এক অর্ডার বাতিল ও স্থগিত করেছে ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানগুলি। বিজিএমইএ বলছে, বাতিল-স্থগিত হওয়া অর্ডারের ৮০ শতাংশের বেশি পুনর্বহাল হলেও সেগুলোর সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। আর কারখানা মালিকরা বলছেন, বাতিল বা স্থগিত হওয়া অর্ডারগুলির কিছু ফিরে এসেছে। আবার নতুন বরাত পেতে শুরু করেছে কারখানাগুলো। কিন্তু তা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম।

আরও পড়ুন- মুকুল ঘনিষ্ঠ বিজেপির যুবনেতা কলকাতা জোন কমিটিতে, তাতেই নাকি গোঁসা বৈশাখীর!

Advt

spot_img

Related articles

নিউটাউনের ঝুপড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

উত্তর ২৪ পরগনার নিউটাউনে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার সন্ধ্যার পর...

বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ: বিনিয়োগের বার্তা নিয়ে শিল্পপতিদের সামনে মুখ্যমন্ত্রী

রাজ্যে শিল্প ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে আরও বিস্তৃত করতে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘বিজনেস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি কনক্লেভ’। ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে...

২২ জানুয়ারি থেকে শুরু ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা, ভার্চুয়ালেও মিলবে মেলার স্বাদ

আর দেড় মাসের অপেক্ষা। আগামী ২২ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে ৪৯তম আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। বইপ্রেমীদের জন্য এ...

যুবভারতীর বিশৃঙ্খলা-কাণ্ডে শোকজের জবাব জমা তিন শীর্ষ কর্তার

যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মেসির অনুষ্ঠান ঘিরে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার ঘটনায় শোকজের জবাব জমা দিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, ক্রীড়া...