রাজ্যপালের ভাষণে সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে তৎপর নবান্ন

বড়সড় কৌশল তৃণমূলের (TMC)৷

ভোটের আগেই ‘শত্রু’ রাজ্যপালের মুখ থেকে সরকারের সাফল্যের খতিয়ান শোনানোর কৌশল নিয়েছে তৃণমূল এবং প্রশাসন৷ এই লক্ষ্যে নীরবে সলতে পাকানোর কাজেও নেমে পড়েছে নবান্ন।
গত দেড় বছর যাবৎ রাজ্যপালের (Dhankar) সঙ্গে রাজ্য সরকারের সম্পর্ক খারাপ থেকে আরও খারাপ হয়েছে৷ বস্তুত কেউ কাউকে সহ্য করতেই নারাজ৷ নানা ইস্যুতে বারবার দু’তরফ সংঘাতে জড়িয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজ্যপালের কিছু মন্তব্য যেমন আপত্তিকর, তেমনই রাজ্যপাল সম্পর্কে শাসক দলের জনাকয়েক সাংসদ এবং নেতার উক্তিও চরম অশোভনীয়৷ ফলে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের দূরত্ব বেড়েই চলেছে৷ রাষ্ট্রপতির কাছে এই রাজ্যপালকে ‘ফিরিয়ে নেওয়ার’ আর্জিও জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদীয় দল৷

ভোটের মুখে জগদীপ ধনকড়ের উপর চাপ আরও বৃদ্ধি করতে কৌশলি সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন তথা তৃণমূল৷ স্থির হয়েছে, রাজ্যপালকে দিয়েই সরকারের সাফল্যের কথা বলানো হবে৷
বিধানসভার চালু প্রথা, বাজেট অধিবেশনের সূচনা হয় রাজ্যপালের ভাষণের মাধ্যমে। প্রথানুযায়ী, রাজ্যপালের সেই ভাষণের খসড়া তৈরি করে প্রশাসন৷ ভোটের বছরে সেই ভাষণের খসড়াতেই রাজ্যপাল যাতে সরকারের সাফল্যের কথা পড়তে বাধ্য হন, স্বরাষ্ট্র দফতর এখন সেই কাজে ঝাঁপিয়েছে৷ তবে নবান্নের আশঙ্কা, এই ইস্যুতে রাজভবনের সঙ্গে সংঘাত চরমে উঠতে পারে৷ নবান্ন সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে স্বরাষ্ট্র দফতরের এক বিশেষ সচিব সব দফতরের প্রধান বা অতিরিক্ত মুখ্যসচিবদের কাছে এই ইস্যুতে চিঠি পাঠিয়েছেন৷ ওই চিঠিতে,সব দফতরকে তাদের চলতি আর্থিক বছরের সাফল্যের কথা বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে বলা হয়েছে, আগামী আর্থিক বছরে দফতরগুলি কোন কোন বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যকর চাইছে, সে সবও জানাতে হবে৷ এই রিপোর্ট তৈরি করতে গত আর্থিক বছরে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রর বাজেট ভাষণে যে সব তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়েছেন, সেদিকে বিশেষ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। প্রত্যেক দফতরকে বলা হয়েছে, তাদের সাফল্যের কথা ১ হাজার শব্দের মধ্যে লিখে পাঠাতে হবে৷

জানা গিয়েছে, সব দফতর থেকে পাওয়া রিপোর্ট থেকেই তৈরি হবে রাজ্যপালের ভাষণ৷ ওই খসড়া প্রথমে মুখ্যসচিব এবং পরে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে পেশ করা হবে৷ আর তার পরই অনুমোদনের জন্য খসড়া ভাষণ পাঠানো হবে রাজভবনে। তবে, নবান্নের আশঙ্কা, এই খসড়া- বক্তৃতা রাজভবনের সবুজ সংকেত আদৌ পাবেনা৷

প্রসঙ্গত,গত বছর যে খসড়া ভাষণ রাজভবনে পাঠানো হয়েছিলো, সেখানে কিছু বিষয় নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন রাজ্যপাল৷
তবে নিয়ম এটাই, নবান্নের তৈরি করা ভাষণই বিধানসভায় পড়তে বাধ্য রাজ্যপাল। কিন্তু নবান্ন-রাজভবনে সংঘাত যখন চরমে উঠেছে, তখন খুব সহজে রাজ্যপাল এবার নবান্নের বয়ান নাও মানতে পারেন৷

Previous articleআব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ মান্নানের, তবে কি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট?
Next article৫ দিনের সফরে ৮ জেলার ২০০ নেতার সঙ্গে আলোচনা অভিষেকের, উদ্দীপ্ত উত্তরের তৃণমূল