৫ দিনের সফরে ৮ জেলার ২০০ নেতার সঙ্গে আলোচনা অভিষেকের, উদ্দীপ্ত উত্তরের তৃণমূল

কিশোর সাহা

কিশোর সাহার কলম: পাঁচদিনের সফরে প্রতিটি এলাকার নানা স্তরের নেতাদের ডেকে সামনে বসিয়ে মত বিনিময় করেছেন তৃণমূলের (Tmc) সর্বভারতীয় যুব সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ (Mp) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishesk Benarjee)। দলীয় সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে ৫ দিনে শতাধিক বৈঠকে ১ হাজার নেতা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলে মতের আদানপ্রদান করেছেন তিনি। তাতেই কিছুটা মুষড়ে পড়া সেই নেতারা রাতারাতি তরতাজা হয়ে উঠেছেন। রাতারাতি তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের (North Bengal) অনেক নেতা-কর্মীরই বডি ল্যাঙ্গোয়েজে ফের ‘জিততে চলেছি’ মনোভাবও যেন দেখা যাচ্ছে।

বস্তুত, গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে তৃণমূল একটিও আসন না পাওয়ায় দলের নেতা-কর্মীদের মনোবলে জবরদস্ত ধাক্কা লেগেছিল। অনেকে তা সামলে ওঠার উপায় কী হবে ভেবে পাচ্ছিলেন না। দু-চার জন জার্সি পাল্টে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় মনোবল ক্রমশ তলানিতে চলে যাচ্ছিল তৃণমূলের নেতাদের একাংশেরও। সূত্রের খবর, দলের কলকাতার নেতানেত্রীদের একাংশের দুর্ব্যবহার, উদ্ধত আচরণে বিরক্তিও বাড়ছিল উত্তরবঙ্গের নেতাদের কয়েকজনের মধ্যেও। উপরন্তু দলনেত্রীর পরে দলের অন্যতম মুখ হয়ে ওঠা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সেই নেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকলে মনের কথা কীভাবে বলা যাবে সেই প্রশ্নেই দোলাচলে ছিলেন তৃণমূলের উত্তরের অনেক নেতাই। দলের সমীক্ষা তথ্য-পরিসংখ্যান দিয়ে আগামী বিধানসভা তৃণমূল অন্তত ২০০ টি আসন পাচ্ছে জানিয়ে সেই সংশয় প্রায় উড়িয়ে দিয়েছেন অভিষেক ও পিকে (Prasant Kishor) জুটি।

এবার পাঁচদিনের সফরের তাৎপর্য কী সেই প্রশ্নে তৃণমূলের উত্তরবঙ্গের এক অন্যতম মুখপাত্র জানান, অভিষেক এতদিন তাঁদের ধরাছোঁয়ার বাইরেই ছিলেন। এবারই প্রথম নানা পর্যয়ের নেতাদের ডেকে মুখোমুখি বসিয়ে তাঁদের মন খুলে কথা বলার অনুরোধ করেছেন। কোথায় কীভাবে দলের সংগঠন আরও মজবুত করা জরুরি তা নিয়ে সকলের থেকে মত নিয়েছেন। এমনকী, কোথায় কী ত্রুটি রয়েছে, কোথায় দলের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে তা কীভাবে দূর করে একজোট হয়ে ঝাঁপানো যায় তাও জেনেছেন। যে সব নেতারা নিজেদের আদি তৃণমূল ভাবলেও ইদানীং ব্রাত্য বলে ক্ষুব্ধ তাঁদের নামের তালিকা নিয়ে যোগাযোগও শুরু করেছে অভিষেক ও পিকের টিম।

শুধু তাই নয়, অভিষেক যেভাবে সকাল থেকে গভীর রাত অবধি উত্তরবঙ্গের সব প্রান্তে ছুটে বেড়িয়েছেন তা দেখে অনেকেই তাঁর নেতৃত্বের ক্ষমতা ও দক্ষতা নিয়ে আর কোনও সংশয় তাঁদের নেই বলে একান্তে জানিয়ে দিয়েছেন। দলের এক প্রবীণ নেতা জানান, একজন প্রকৃত নেতার মতো অভিষেক সামনের থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেখে তাঁরা দলের ভবিষ্যৎ শক্ত হাতেই যাবে বলে নিশ্চিত হয়েছেন। দলের একাধিক নেতা জানান, বিরোধপক্ষ যাই বলুক না কেন, অভিষেকের সকলকে নিয়ে চলার যে ক্ষমতা রয়েছে তা এবারের সফরে তাঁদের কাছে দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন:রাজ্যপালের ভাষণে সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে তৎপর নবান্ন

তাতেই গা ঝাড়া দিয়ে আসরে নেমেছে উত্তরবঙ্গের তৃণমূল। গত লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ বিধানসভায় বিজেপি এগিয়ে থাকলেও অভিষেকের দীর্ঘ সফরের পরে সেই তৃণমূলই হাওয়ার ঘোরার বার্তায় উদ্দীপিত।

Advt

Previous articleরাজ্যপালের ভাষণে সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে তৎপর নবান্ন
Next articleমোদির নেতৃত্বে নেতাজি জন্মজয়ন্তী উদযাপন কমিটিতে মমতা, বুদ্ধ, সৌরভ