সুপ্রিম কোর্টের কমিটিতে কৃষি আইনের সমর্থকরাই! কৃষকরা ন্যায্য বিচার পাবে তো প্রশ্ন তুলে সরব মহুয়া

টানা ৪৭ দিন ধরে দিল্লির বুকে চলছে কৃষক আন্দোলন। তাঁদের দাবি, কৃষি আইন কেন্দ্রকে প্রত্যাহার করে নিতেই হবে। নচেৎ তাঁরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের নয়া কৃষি আইন (Farm Laws) কার্যকর হওয়ার উপর সুপ্রিম কোর্ট সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছে। কিন্তু তাতে একেবারেই খুশি নন দিল্লি সীমান্তে আন্দোলনরত কৃষকরা। তাঁরা সাফ জানাচ্ছেন, যতদিন না আইন প্রত্যাহার হচ্ছে, ততদিন তাঁরা নিজেদের আন্দোলন থেকে এক পাও পিছিয়ে আসবেন না। কেন্দ্রীয় সরকার ও আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে অচলাবস্থা কাটানোর জন্য সোমবার শীর্ষ আদালত কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করেছিল।

এই কমিটির সদস্যরা হলেন কৃষি অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাটি, ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের সভাপতি ভুপিন্দর সিং মান, শ্বেতক্ষারি সংঠনের সভাপতি অনিল ঘানওয়াত, এবং আন্তর্জাতিক খাদ্যনীতি বিশেষজ্ঞ প্রমোদ কুমার যোশী। এই কমিটিকে দু’মাসের মধ্যে নিজেদের রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়েছে। আগামী দশদিনের মধ্যেই কমিটির প্রথম বৈঠক ডাকতে হবে। বস্তুত, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশিত কমিটির এই চার সদস্যই আগে কৃষি আইনের সমর্থনে কথা বলেছেন। ফলে, আদৌ এঁরা নিরপেক্ষভাবে সবদিক খতিয়ে দেখবেন কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান আন্দোলনরত কৃষকরা। সম্ভবত, সেকারণেই কমিটির সঙ্গে সহযোগিতা না করে আন্দোলন জারি রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

সোমবার শীর্ষ আদালত কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করতেই টুইটারে সরব হন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া। তিনি লেখেন, ‘কৃষকদের ন্যায্য বিচার পাইয়ে দেওয়ার যে ভান চলছে, সুপ্রিম কোর্ট ৪ সদস্যের কমিটি গঠন করার পরই তা নিয়ে যাবতীয় বিভ্রান্তি ভেঙে গিয়েছে। ওই চার জনের রেকর্ড দেখুন। এটা পক্ষপাতিত্ব নয় তো কী’! মহুয়া আরও লেখেন, “আমার ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে যা বুঝলাম, ২ মাস অতিরিক্ত সময় পাওয়া গেল, কৃষকদের বাড়ি পাঠানোর ফন্দি, যাতে কোণঠাসা অবস্থা থেকে সরকারকে ফিরিয়ে আনা যায় এবং শেষ মেষ কমিটির রিপোর্ট এগিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেবে। তত দিনে আন্দোলনের গতিই হারিয়ে যাবে।”

 

এই কমিটির সদস্য বাছাইকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে শুধুমাত্র মহুয়াই সবরব নন। প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে সব মহল থেকেই। কৃষকদের অধিকার রক্ষা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন রমনদীপ সিংহ মান। তার বক্তব্য, “কৃষি আইনের কমিটিতে অশোক গুলাটিকে রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। উনি তো কৃষি আইনের সমর্থক হিসেবেই পরিচিত! তার উপর আবার ভূপিন্দর সিংহ মান। একেবারে ভুল সিদ্ধান্ত। কৃষকদের সমস্যা তুলে ধরারই তো কেউ নেই! আমরা এই সিদ্ধান্ত মানছি না। আইন প্রত্যাহার করলেই আন্দোলন উঠবে।”

এই কমটি প্রসঙ্গে যুব কংগ্রেসের নেতা শ্রীবাস্তব টুইটারে লেখেন, “সুপ্রিম কোর্টের কমিটিতে নিযুক্ত ৪ সদস্য প্রকাশ্যে কৃষি বিলকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। এই ধরনের কমিটি গড়ার দরকারই বা কী? কেন্দ্র কি সুপ্রিম কোর্টকে সদস্যদের নামও ধরিয়ে দিয়েছিল? গোটা ম্যাচটাই ফিক্সড।”

আরও পড়ুন-কয়লা পাচারকাণ্ড: সকাল থেকে দুর্গাপুর, রানিগঞ্জ, আসানসোল-সহ ১০ জায়গায় CBI তল্লাশি

Advt

 

Previous articleরোহিত, রাহানেদের চাঙ্গা রাখতে বিশেষ পদ্ধতি টিম ম‍্যানেজমেন্টের
Next articleতৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কেডি সিংকে আজই আদালতে পেশ করছে ইডি