উচ্চ আদালতে ফের অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার, নজরে বন দফতরের মেধাতালিকা

শিক্ষক নিয়োগের পর এবার আলোচনায় উঠে এলো বন দফতরের মেধাতালিকা। কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে চাওয়া হয়েছে বন সহায়ক নিয়োগের মেধাতালিকা। আদালতের এই নির্দেশে যেমন রাজ্য সরকার চাপে পড়েছে, তেমনই প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে প্রাক্তন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায়কেও। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনিই ছিলেন বাংলার বনমন্ত্রী। ফলে এই দফতর কোনও প্রশ্নের সম্মুখীন হলে সদ্য প্রাক্তন হওয়া মন্ত্রীও দায় এড়াতে পারেন না।

কিছু দিন আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রকাশ্যেই করেছিলেন বন দফতরে দুর্নীতির অভিযোগ। পাল্টা দিয়েছিলেন রাজীবও। তৃণমূলের বিরুদ্ধে আঙুল তুলে তিনি দাবি করেছেন, বীরভূমের কোনও এক নেতাকে নিয়োগের ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করেছিলেন। এমনকি সেই নেতা হুমকি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন রাজীব। এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলে বলেছিলেন কালীঘাট থেকেও এ ব্যাপারে নাড়ানো হয়েছে কলকাঠি। সব মিলিয়ে বন দফতরে যে বড় রকমের সমস্যা রয়েছে তা দাবি করেছে দু’পক্ষই।

মামলার বয়ান অনুযায়ী মামলাকারী সজল দে সহ ১২জন চাকরিপ্রার্থী পক্ষের আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী জানান, রাজ্যের বন দফতর এ পদের জন্য ২০০০ শূন্য পদের জন্য নিয়োগ করা হবে এই মর্মে গত ৮ অগাস্ট ২০২০ সালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের বন দফতর। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই দুর্নীতি রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আদালতে দ্বারস্থ হয়েছেন বিক্ষুব্ধ চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাদের দাবি, দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল মেধা তালিকা প্রকাশ না করে কাউকে নিয়োগ করা হবে না। কিন্তু আদপে তা হয়নি বলে বলছেন অভিযোগকারীরা। মেধা তালিকা প্রকাশ না করেই নিয়োগ করা হয়েছে বলে তারা জানিয়েছেন। রাজ্যের কাছে এ ব্যাপারে একাধিকবার জানিয়েও নাকি হয়নি কাজের কাজ, তাই তারা দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্যাট-এর।

রাজীব ব্যানার্জী প্রস্থানের পর মমতা বলেছিলেন, “বন সহায়তা স্কিমে আমাদের সঙ্গে থাকা এক নেতা কারসাজি করেছে। আমার কাছে অনেকে এই অভিযোগ করেছে।” দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে সম্মতি দিয়েছে রাজ্যসভাও। অন্য দিকে নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে রাজীব সরাসরি বলেছিলেন, “মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়ে দিতে চাই, কোন উচ্চ নেতৃত্ব সুপারিশ করেছেন, কালীঘাট থেকে কী সুপারিশ এসেছে, সব নথি তুলে রেখেছি।” রাজীবও তুলেছেন তদন্তের দাবি। দুই যুযুধানের লড়াইয়ে আপাতত নিয়োগের দিয়ে তাকিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা। ৪ মার্চের মধ্যে রাজ্য সরকারকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি রাজশেখর মান্থা।

Advt