রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হলেও এই বাংলার একজন মহিলা হিসেবে তিনি রত্না চট্টোপাধ্যায়কে (Ratna Chatterjee) খুব সম্মান করেন বলেই জানালেন বেহালা পূর্বে (Behala East) বিজেপির (BJP) সেলিব্রিটি প্রার্থী অভিনেত্রী পায়েল সরকার (Payel Sarkar)। শুধু তাই নয়, শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovon Chatterjee) কেন্দ্রে প্রার্থী হয়ে একটু টেনশনে থাকলেও বেজায় খুশি তিনি, গর্বিতও বটে!

এবার বিধানসভা ভোটে (Assembly Election) বেহালা পূর্ব কেন্দ্রে নজর রাজনৈতিক মহলের। এই কেন্দ্র থেকেই বিধায়ক হয়ে তৃণমূল সরকারের একাধিক দফতরের মন্ত্রী হয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু ব্যক্তিগত কেচ্ছা ও পারিবারিক কারণে প্রায় সাড়ে তিন বছর নিজের এলাকাতেই আসেননি শোভন। ঘরসংসার ছেড়ে এখন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকেন গোলপার্কের বিলাসবহুল আবাসনে। দলবদলে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর তাঁকে কলকাতা জোনের পর্যবেক্ষণ করে গেরুয়া শিবির। কিন্তু হারার আশঙ্কা থেকে নিজের কেন্দ্রেই টিকিট পাননি শোভন। তাঁর পরিবর্তে তারকা প্রার্থীর উপর ভরসা রেখেছে বিজেপি। আর তাতেই অপমানিত হয়ে দল ছাড়ার পরিকল্পনা করেছেন শোভন।

অন্যদিকে, মহিলাদের সম্মানরক্ষার জিগির তুলে বেহালা পূর্ব থেকে শোভনের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে দলীয় প্রার্থী করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা ছিল মাস্টার স্ট্রোক। এরপরই গত রবিবার তৃতীয় ও চতুর্থ দফার ভোটের প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেছে বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী পায়েল সরকারকে। কয়েকদিন আগেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন টলিপাড়ার জনপ্রিয় এই নাম।

বেহালা পূর্ব থেকে নির্বাচনে লড়াইয়ে নিয়ে বেশ আপ্লুত টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। ভারতীয় জনতা পার্টি এই কেন্দ্র থেকে তাঁকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করায় খুব খুশি তিনি। বেহালার মানুষের পাশে থাকতে চান। বেহালার সঙ্গে তাঁর দীর্ঘ যোগাযোগ বলেও দাবি করেছেন নায়িকা।


বেহালায় পায়েলের প্রতিপক্ষ দলের প্রার্থী গুরুত্বপূর্ণ। রত্না চট্টোপাধ্যায় বনাম পায়েল সরকার! ব্যাপারটা এভাবে এভাবে অবশ্য দেখছেন না অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, “আমার দল যখন এই কেন্দ্র থেকে আমাকে প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেছে, তার মানে তারা কিছু ভেবেই করেছে। তারা যে জায়াগা আমাকে দিয়েছে সেই সম্মান যেন রাখতে পারি। আশা করব, বেহালার মানুষও আমার উপর সেই ভরসা রাখবেন। সেই ভরসা রাখলে আমি তার সম্মান রাখার চেষ্টা করব।”

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথা কি কথা হয়েছে,কোনও সাজেশন নিয়েছেন? পায়েলের উত্তর, “এখনও কথা হয়নি। নিশ্চই কথা বলব। উনি অভিজ্ঞ একজন মানুষ। উনি অনেক কিছু জানেন। বেহালার মানুষ ওঁকে খুব ভালবাসেন। ওঁর সঙ্গে দেখা করে অনেক কিছু শিখতে চাই। ওনার কেন্দ্রে প্রার্থী হতে পেরে গর্বিত।”

সম্প্রতি টলিউড আড়াআড়ি বিভাজন। কেউ ঘাসফুলে তো কেউ পদ্ম শিবিরে। বিজেপিকে কেন বেছে নিলেন পায়েল? উত্তরে অভিনেত্রী বলছেন, “২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদিকে অনুসরণ করছি। বিজেপি সরকারের আমলে ভারতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এমন অনেক উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ বিজেপি সরকার নিয়েছে যা অন্য কোনও সরকার নিতে পারেনি। এমন ছোট ছোট অনেক কিছু জিনিস আমায় আকর্ষণ করেছে।”

সেলিব্রিটিদের ভোটে দাঁড়ানো নিয়ে একটা অংশের অভিযোগ, ভোট মিটলে তাঁদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না।

এ প্রসঙ্গে পায়েলের বক্তব্য, “হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয় না। সবাইকেই সুযোগ দিতে হয়। আর আমি ভোট পাখি নই। হারি-জিতি মানুষের সঙ্গে থাকবো।”
