শিশির অধিকারী রবিবারের শাহি-মঞ্চেই পদ্ম-পতাকা হাতে নেবেন কি’না জল্পনা তুঙ্গে

গেরুয়া-মঞ্চে ওঠা ৩দিন এগিয়ে আনলেন তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী৷ তবে এখনও স্বচ্ছ নয়, শিশিরবাবু শুধুই ‘অতিথি’ হিসাবে মঞ্চে থাকবেন ? না’কি, সরাসরি হাতে তুলে নেবেন পদ্ম-পতাকা !

রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছিলোই যে, আগামী বুধবার, ২৪ মার্চ, কাঁথিতে মোদির সভামঞ্চে থাকবেন শিশিরবাবু। কিন্তু সম্ভবত ততদিন অপেক্ষা করতে রাজি হননি নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী ছেলে শুভেন্দু অধিকারী। যত তাড়াতাড়ি শিশিরবাবু গেরুয়া- মঞ্চে উঠবেন, তত তাড়াতাড়িই তিনি ছেলের হয়ে প্রচারে নামতে পারবেন৷ নন্দীগ্রামের ভোট ১ এপ্রিল, হাতে আর সময় কোথায় !

ফলে রাজনৈতিক মহলে ফের জল্পনা, ফের পদ্ম ফুটতে চলেছে কাঁথির ‘শান্তিকুঞ্জ’-এ৷ শুভেন্দু, সৌমেন্দুর পর এবার শিশির অধিকারী !

রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জনসভায় হাজির থাকার জন্য তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। শনিবার দুপুরে কাঁথির শান্তিকুঞ্জে পৌঁছে শিশিরবাবুর হাতে আমন্ত্রণপত্র তুলে দেন কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। বিজেপি সূত্রের খবর, রবিবারই না’কি গেরুয়া শিবিরে যোগ দিচ্ছেন তিনি।

ওদিকে আগেই শুভেন্দু জানিয়েছেন, আগামী ২৪ মার্চ কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী সভার মঞ্চে থাকবেন শিশির অধিকারী। শিশিরবাবুর গেরুয়া-যাত্রা দু-তিন এগিয়ে আনার পিছনে রহস্য একটাই, নন্দীগ্রামে প্রচারে শিশিরবাবুকে প্রয়োজন৷ পরিস্থিতি যেদিকে গড়াচ্ছে, তাতে মুখে যাই বলুন, একা নন্দীগ্রাম সামলাতে পারছেন না শুভেন্দু ৷ তৃণমূলের প্রচার এবং প্রভাব এই মুহুর্তে তুঙ্গে৷ এটা ঠিক, পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনীতিতে শিশিরবাবুর প্রভাব এখনও আছেন সেটাই এখন কাজে লাগাতে চাইছে বিজেপি তথা শুভেন্দু ৷

তবে এখনও বিভ্রান্তি রয়েছে, শিশিরবাবু রবিবারই পদ্ম-পতাকা হাতে তুলে নেবেন কি’না৷ তবে এটা ঠিক, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই যে ভোটে হতে চলেছে, সেই ভোটের মুখে তৃণমূলের সাংসদকে বিজেপির সভামঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেলে, আলাদা করে তাঁকে আর আর পদ্ম-পতাকা হাতে তুলে নিতে হয়না৷

শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল ত্যাগ করার পর একাধিক সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক পদ থেকে দলীয় সাংসদ শিশির অধিকারীকে তৃণমূল সরিয়ে দেয়। দায়িত্ব আনা হয় অধিকারী- পরিবারের বিরুদ্ধে থাকা তৃণমূল নেতাদের৷ ওদিকে, নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে শুভেন্দু অধিকারীকেই লড়তে পাঠায় বিজেপি। দলনেত্রীই প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও শিশিরবাবু এ প্রসঙ্গে প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, নন্দীগ্রামে তৃণমূলের পরাজয় একপ্রকার নিশ্চিত৷ দিন কয়েক আগে বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় কাঁথিতে শিশির অধিকারীর বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজন সারেন। সেখানেই বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদকে মোদির সভায় উপস্থিত থাকার মৌখিক আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন লকেট৷

আরও পড়ুন- নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর জখম হওয়ার ঘটনায় এবার CID তদন্ত

ওদিকে জল্পনা চলছে অধিকারী পরিবারের আর এক সাংসদ দিব্যেন্দুকে নিয়েও৷ দিন দুয়েক আগে বিজেপির সর্বোচ্চস্তর থেকে আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন দিব্যেন্দু নিজেই৷ ফলে রাজনৈতিক মহল নজর রাখছে, শিশির-দিব্যেন্দু একসঙ্গেই মোদি বা শাহের মঞ্চে হাজির থাকেন কি’না৷

প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল মোট ২২ আসনে জয়ী হয়৷ পক্ষান্তরে বিজেপির ঝুলিতে যায় ১৮ আসন৷ বর্ধমানের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল আগেই বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় দু’দলের সাংসদ সংখ্যা দাঁড়ায়, তৃণমূল ২১ এবং বিজেপি ১৯৷ শিশির- দিব্যেন্দু গেরুয়া পতাকা হাতে নিলে এই সমীকরণ দাঁড়াবে যথাক্রমে ১৯ এবং ২১ সাংসদে৷ যদিও লোকসভার নথিতে সুনীল মণ্ডল বা শিশির-দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূল সাংসদ হিসাবেই থাকবেন৷

আরও পড়ুন- নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর জখম হওয়ার ঘটনায় এবার CID তদন্ত

Advt

Previous articleঅল ইংল‍্যান্ড ওপেন থেকে বিদায় সিন্ধুর
Next articleগোকুলামের বিরুদ্ধে জয় চাইছেন শঙ্করলাল