মোদির সভা এড়িয়ে কোন কৌশলি বার্তা দিতে চাইলেন দিব্যেন্দু !

গেরুয়া-মঞ্চে উঠলেন না দিব্যেন্দু অধিকারী৷

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (PM Modi) কাঁথির মঞ্চের ত্রিসীমানায় দেখা গেল না তমলুকের তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে (Dibyendu Adhikary)৷ যদিও অধিকারী পরিবারের অন্য ৩ রাজনীতিক, শিশির, শুভেন্দু এবং সৌমেন্দু যথারীতি মঞ্চে ছিলেন৷ তবে দর্শকাসনে ছিলেন দিব্যেন্দুর স্ত্রী।

এরপরেই জল্পনা তুঙ্গে৷ প্রশ্নও উঠেছে একাধিক৷

( ১) তাহলে কি ঘাসফুলেই থাকছেন তমলুকের সাংসদ ?

( ২) তাহলে কী বাকি তিন অধিকারী-র অনুরোধ স্পষ্টভাবেই ফিরিয়ে দিলেন দিব্যেন্দু ? পরিবারে মতবিরোধ ?

( ৩) না’কি, সম্মিলিতভাবে তৈরি করা অধিকারীদের নতুন কোনও কৌশল এটা ?

গত ২১ মার্চ অমিত শাহের
এগরা’র জনসভার মঞ্চে হাজির ছিলেন কাঁথির তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী (Sisir Adhikary)। সেদিনই গুঞ্জন ছিলো, শিশিরবাবু একা আসবেন ? না’কি সঙ্গে থাকবেন পুত্র দিব্যেন্দুও ?

সেদিনও গরহাজির ছিলেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী ৷ রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়, তাহলে বোধহয় কাঁথির প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চেই পদ্মাসনে বসবেন অধিকারী পরিবারে এখনও ঘাসফুলে থাকা একমাত্র জনপ্রতিনিধি দিব্যেন্দু অধিকারী৷

দিব্যেন্দু এবিষয়ে সরাসরি মুখ খোলেননি। তবে সভার আগে জল্পনা বাড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সভা শুরুর পরই ছবিটা স্পষ্ট হয়ে যাবে’। কিন্তু মোদির সভামঞ্চে শিশির, শুভেন্দু ও সৌমেন্দু থাকলেও
ছিলেন না দিব্যেন্দু।

গত নভেম্বরে তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ানো শুরু করেছিলেন প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে। পরবর্তীতে সমস্ত পদ ও দল ছেড়ে পদ্মশিবিরে যোগ দেন তিনি। তাঁর পথে হেঁটে অধিকারী পরিবারের ছোটছেলে সৌমেন্দুও বিজেপিতে যোগ দেন। স্বাভাবিকভাবেই পরে একাধিকবার প্রাক্তন সহকর্মীরা নিশানা করেছিলেন তাঁকে। তারপরই শুভেন্দুর পক্ষে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছিল শিশিরকে। সেই থেকেই তাঁর সঙ্গেও দূরত্ব তৈরি হয়। পরবর্তীতে তিনিও গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন। আজ অর্থাৎ বুধবার মোদির পাশে হাজির থাকার কথা ছিল দিব্যেন্দু-সহ গোটা অধিকারী পরিবারের। কিন্তু কাঙ্খিত সেই দৃশ্য দেখা গেল না মোদির মঞ্চে। সভায় গেলেন না দিব্যেন্দু।

নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু৷ ওই কেন্দ্রে নির্বাচন আগামী ১ এপ্রিল৷ নন্দীগ্রামে শুভেন্দুকে লড়তে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে৷ এই কেন্দ্রের ভোটের ফলাফলের উপর গোটা অধিকারী-পরিবারের মান-সম্মান, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ তথা নিজেদের অস্তিত্ব নির্ভর করছে৷ সেই পরিস্থিতে দিব্যেন্দু একের পর এক শাহ এবং মোদির মঞ্চ এড়িয়ে কোন বার্তা দিতে চাইছেন ? তৃণমূলকে কি বোঝাতে চাইলেন যে পরিবারের বাকিরা যা’ই করুক, তিনি এখনও তৃণমূলেই ?

কিন্তু এতে আদৌ কি কোনও লাভ হবে ? তৃণমূল কংগ্রেস অধিকারী-পরিবারকে পুরোপুরি ‘ডিসকার্ড’ করেছে, বিশ্বাসের প্রশ্নই নেই৷ এর মধ্যে অস্বাভাবিক কিছুই নেই৷
একথা অধিকারীদের অজানা নয়৷ সেই পরিস্থিতিতে দিব্যেন্দু-র তৃণমূলে থেকে যাওয়া অথবা তৃণমূল ত্যাগ করার সিদ্ধান্তের মধ্যে তিলমাত্র ফারাক নেই! এখন যদি তৃণমূল দল দিব্যেন্দু অধিকারীকে নির্দেশ দেয়, নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে প্রচারে নামতে, দলীয় সাংসদ এতে রাজি হবেন?

সে কারনেই বোধহয় নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে, এটা কি অধিকারীদের নতুন কোনও কৌশল ?

Previous articleঅভিষেক ম‍্যাচে ক্রুনালের পাশাপাশি রেকর্ড গড়লেন প্রসিদ্ধ
Next articleখেজুরির ‘উপদ্রুত’ গ্রামে প্রার্থীকে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঢুকে গেলেন কুণাল