Friday, December 19, 2025

নিজের দলেই লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন রূপান্তরকামী প্রার্থী

Date:

Share post:

বদলেছে দিন কিন্তু বদলায়নি সমাজ। বদলায়নি চিন্তাভাবনা। চিকিৎসাবিজ্ঞান যতই উন্নত হোক না কেন,      রুপান্তরকামীদের  এখনো ‘ঘৃণার’ চোখেই দেখা হয়। অচ্ছুৎ বলেই মনে করা হয় ।  আর সেই দুর্বব্যহারের মাত্রা এতটাই সীমা ছাড়াল যে, কেরলের রূপান্তরকামী ভোটপ্রার্থী নির্বাচন থেকেই সরে দাঁড়ালেন। ২০২১ কেরল বিধানসভা নির্বাচনের ময়দান থেকে সরে দাড়ালেন রূপান্তরকামী ভোট প্রার্থী ডেমোক্রেটিক সোশ্যাল জাস্টিস পার্টির ( democratic social justice party)  অ্যালেক্স।  সম্প্রতি তিনি  জানিয়ে দিয়েছেন হুমকি এবং কুৎসার কারণে তিনি ভোট যুদ্ধ থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

কেরলের ( karala) প্রথম রেডিও জকি (RJ) ২৮ বছরের অনন্যা। বেতার শিল্পী হিসাবে বেশ নামডাক রয়েছে তাঁর। এছাড়াও নিউজ মিডিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। কিন্তু অন্যন্যা সিঁড়ি ভেঙে উপরের দিকে উঠতে থাকলেও বাধ সাধল সেই রাজনীতি। প্রতিনিয়ত তাঁর বিরুদ্ধে চলতে থাকে কুৎসা এবং অপপ্রচার। কুরুচিকর মন্তব্য এমনকী যৌন হেনস্থা তাঁকে করা হয়। তাঁর কথায় এক প্রকার পরিস্কার নানা লাঞ্ছনা, লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে নানা ভাবে তাঁকে বাঁধা দেওয়া হচ্ছিল। গোটা বিষয়টি নিয়ে তিনি অভিযোগ করেছেন নিজের রাজনৈতিক কর্মীরা, তাঁর নিজের দলের মধ্যেই কাজের বাধা সৃষ্টি করেছে। নানান সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকে। সম্পূর্ণ বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্য প্রাচারের আলোয় আসার জন্য তাঁকে নিয়ে নানা রকম রাজনৈতিক খেলা খেলছিল তাঁর দল । এই সকল বিষয় এবং কুরুচিকর মন্তব্য সহ্য করতে না পেরেই শেষ পর্যন্ত সরে দাঁড়ানোর অনড় সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি।

সাংবাদিকরা যখন তাঁকে প্রশ্ন করেন,তাকে সামনে রেখে ঠিক কী ধরনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল? তার উত্তরে অনন্যা জানিয়েছেন, “ওরা আমাকে অনবরত জোর করছিল বর্তমান সরকার সম্পর্কে খারাপ কথা বলতে। এছাড়াও আমি যে বিধানসভা থেকে লড়াই করছি সেখানে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী সম্পর্কে অশ্রাব্য কথা বলতে। এছাড়াও আমি যেহেতু অন্য লিঙ্গের, তাই প্রচারের সময় আমাকে বোরখা পড়ে মুখ ঢেকে প্রচার করতে বাধ্য করা হয়।  আমি এই সব করতে চাইনি। তাই আমার উপর নানাভাবে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল। এরপর আমাকে হুমকি দেওয়া হয়, আমার কেরিয়ার আমার দল শেষ করে দেবে। এই সম্পূর্ণ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নিজের দলের হয়ে রুখে দঁড়িয়েছেন। প্রথমে নিজের নাম প্রার্থী হিসাবে তুলে নেন তিনি। অন্যদিকে তিনি প্রচার করছেন ডেমোক্রেটিক সোশ্যাল জাস্টিস পার্টিকে যেন কেউ ভোট না দেন। প্রথমে যখন তিনি ডেমোক্রেটিক সোশ্যাল জাস্টিশ পার্টির হয়ে ময়দানে নেমেছিলেন তখন তিনি বলেন ভোটে জিতলে রূপান্তরকামীদের জন্য নানা উন্নয়নের কাজ করবেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতি থেকে গেল মুখেই। শেষ পর্যন্ত তিনি নিজে স্বীকার করতে বাধ্য হলেন রাজনীতির রঙ তিনি আর মাখবেন না।তাঁকে আর দেখা যাবে না রাজনৈতিক ময়দানে।

Advt

spot_img

Related articles

বাংলাদেশে ভারতীয় উপদূতাবাসে হামলা! চিন্তা বাড়ছে নয়াদিল্লির 

ফের উত্তপ্ত প্রতিবেশী রাষ্ট্র। বাংলাদেশের দুই সংবাদপত্রের দফতরে ভাঙচুর আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার পর হামলা চট্টগ্রামের ভারতীয় উপদূতাবাসে...

হিজাব বিতর্কে নয়া মোড় ,সরকারি চাকরিতে যোগ দিচ্ছেন না মহিলা চিকিৎসক!

বিহারের সরকারি অনুষ্ঠানে মহিলা চিকিত্‍সকের মুখ থেকে হিজাব টেনে নামিয়ে দিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ...

কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো-র সংবাদপত্রের দফতরে হামলা! 

বাংলা দৈনিক প্রথম আলো-র দফতরে হামলা! বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে একদল অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সংবাদপত্রটির দফতরে ঢুকে একাধিক তলায় ব্যাপক...

জলপাইগুড়ির আকাশে ভিনগ্রহীদের যান! রহস্যময় আলো ঘিরে বাড়ছে জল্পনা

বৃহস্পতিবার রাতের আকাশে হঠাৎ রহস্যময় আলো ঘিরে চাঞ্চল্য জলপাইগুড়ি জেলায় (Jalpaiguri District)। কেউ বলছেন উল্কা কেউ বলছেন ইউএফও...