“বাংলার শাসনভার যদি কেন্দ্রীয় শাসকদের হাতে যায়,তাহলে নিশ্চিতভাবেই বিপাকে পড়বে রাজ্য”৷ সংবাদসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে একদম স্পষ্টভাবেই এ কথা জানিয়েছেন অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)৷ নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ” কেন্দ্রের শাসকরা বাংলায় ক্ষমতায় এলে এমন লোকজনের হাতে ক্ষমতা কুক্ষিগত হবে, যাদের সংখ্যালঘুদের অধিকার কতখানি, সে বিষয়ে জ্ঞান সীমিত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায়ের নীতি ত্রুটিযুক্ত৷” অমর্ত্য সেনের সতর্কবার্তা, “জাতীয় অবক্ষয় চলছে, বাংলা যেন তার অংশ হয়ে না ওঠে”৷

এই সাক্ষাতকারে আরও একধাপ এগিয়ে বিশ্ববন্দিত অর্থনীতিবিদ বলেছেন, “দরিদ্র তথা সংখ্যালঘুদের অবমাননা, আর্থিক অবক্ষয় থেকে শুরু করে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, বিজেপির শাসন কখনওই দেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়নি”৷

প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে এক ইংরাজি দৈনিকের সঙ্গে কথা বলার সময়ে অমর্ত্য সেন বলেছিলেন, “বাংলার শিকড়েই ধর্মনিরপেক্ষতা আছে৷ বাংলা এই শিকড়ের প্রতি দায়বদ্ধ৷ ওদিকে এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ধর্মীয় মেরুকরণের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে৷” অমর্ত্য সেন বলেছেন, ” স্থানীয় নেতাদের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় শাসকদের হাতে রাজ্যের ভার তুলে দেওয়া হলে, বাংলায় ঘনিয়ে আসবে দুর্যোগ”৷

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ( Mamata Banerjee) প্রশংসাও করেছেন তিনি৷ বলেছেন, “উনি যেভাবে একাধিক জনমুখী প্রকল্প, বিশেষত নারী উন্নয়ন প্রকল্প চালু করেছেন, তা প্রশংসাযোগ্য৷

নোবেলজয়ী অধ্যাপকের দাবি, “আইডেন্টিটি পলিটিক্স বা পরিচয় সত্তার নোংরা রাজনীতির সাক্ষী ভোটের বাংলা৷ এই পলিটিক্সকে ব্যবহার করছে হিন্দুত্বের তথাকথিত ধারক-বাহকরা৷ রবীন্দ্রনাথ, নেতাজির বাংলায় সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় শাসকরা৷ এদের হাতে বাংলা গেলে ভুগতেই হবে”৷
স্পষ্টভাবেই বঙ্গ- রাজনীতির বর্তমান পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে অর্থনীতিবিদ এই সাক্ষাতকারে বলেছেন, “সাম্প্রদায়িক বিভাজনকে এই মুহুর্তে যে ভাবে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে, ১৯৪৬-এর পর এমন বিপজ্জনক প্রচেষ্টা বাংলা দেখেনি৷ সেই সময়ে মহাত্মা গান্ধী যে সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তুলেছিলেন, তা বিনষ্ট করার সব ধরনের চেষ্টা এই ভোটে চলছে৷ আর সেই অশুভ চেষ্টা সফল হলে বাংলাকে বড় মূল্য চোকাতে হবে ৷”
