Wednesday, August 27, 2025

 

কণাদ দাশগুপ্ত

একাধিক বুথ ফেরত সমীক্ষা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, নবান্ন এবারও থাকবে তৃণমূলের দখলেই৷

একইসঙ্গে এক্সিট-পোলে এমন ইঙ্গিতও মিলেছে, বাংলায় এবার অনেকটাই বাড়বে বিজেপি৷ আর কংগ্রেস-বাম-আইএসএফের সংযুক্ত মোর্চা খুব বেশি হলে মোট আসনের ৫-৬ শতাংশ পেতে পারে৷ আর কয়েকঘন্টার অপেক্ষা, রবিবার দুপুরের মধ্যেই অবসান হবে সব জল্পনার৷ পরবর্তী ৫ বছরের জন্য ‘শাসক’ পেয়ে যাবেন বঙ্গবাসী ৷

এটা ঠিকই বুথ ফেরত সমীক্ষা কখনওই ভোটের প্রামাণ্য ফল নয়। অতীতে কিছু ক্ষেত্রে এ ধরনের সমীক্ষা যেমন মিলেছে, তেমনই অসংখ্যবার পূর্বাভাসের কাছাকাছিও থাকেনি চূড়ান্ত ফল৷ সেই কারনেই এক্সিট পোল-এর রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরেও তৃণমূল দাবি করেছে, চূড়ান্ত ফলে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা মিলবে শাসক দলের৷ ওদিকে বিজেপি বলেছে, ‘এক্সিট নয়, একজ্যাক্ট পোল-এ আমরা বিশ্বাসী’৷ তবে ভোটের সঙ্গেই যেহেতু সেঁটে রয়েছে এক্সিট পোল, তাই এ ধরনের সমীক্ষা নিশ্চিতভাবেই কৌতূহল বৃদ্ধি করে৷

◾এক্সিট-পোল-এ একটা বিষয় বেশ স্পষ্টভাবেই ধরা পড়েছে, যতই প্রচার হোক, ‘প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা’ এবার কাজ করেনি৷ Anti-Establishment তত্ত্ব কখনই এলাকা বা জেলা হিসাবে কাজ করেনা৷ রাজ্যজুড়েই সরকার বিরোধী হাওয়া ওঠে৷ বুথ ফেরত সমীক্ষা যত আসন তৃণমূলকে দিয়েছে, Anti- Establishment হাওয়া থাকলে, এই আসন কিছুতেই পেত না শাসক দল৷ চূড়ান্ত ফল যাই হোক, সমীক্ষা প্রমান করেছে বিরোধী-প্রচারে বোঝানোর চেষ্টা হলেও, বাস্তব বলছে একুশের ভোটে

প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ‘ওয়েভ’ বলে কিছুই ছিলো না৷ ফলে চূড়ান্ত ফলে তৃণমূলের আসনবৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রবল৷

◾ভোটের মুখে দলে দলে নেতা- বিধায়ক তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে পাড়ি দিয়েছিলেন৷ দলবদল করা এই নেতাদের বেশিরভাগই এবার পদ্ম-প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন৷ এক্সিট পোল বিজেপি’কে যে আসন দিয়েছে, তাতে অনুমান করা যায়, এই দলবদলে তৃণমূলের খুব একটা ক্ষতি হয়নি৷ সমীক্ষায় দলবদল করা নেতা বা বিধায়কদের প্রায় সবাইকে যদি ‘জয়ী’ বলে মনে করা হতো, তাহলে বিজেপির আসন সংখ্যা কমপক্ষে ২০-২৫টি বাড়তো৷ সেক্ষেত্রে অন্তত ৫০ শতাংশ বুথ-ফেরত সমীক্ষায় বিজেপি’কে তৃণমূলের আগে রাখা হতো৷ তা হয়নি৷ বিচ্ছিন্নভাবে দলবদল করা কয়েকজন জয়ী হতে পারেন অবশ্যই, কিন্তু এই ‘দলবদল’-এর সামগ্রিক ‘সুফল’ বিজেপি পায়নি৷

এক্ষেত্রেও চূড়ান্ত ফলে তৃণমূলের আসন বৃদ্ধির সম্ভাবনা প্রবল৷

 

◾এই ব্যাখ্যায় অনেকে আপত্তি করতে পারেন৷ এই বিতর্কের আগে একটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে৷ যদি ধরে নেওয়া যায়, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে বিধানসভার ভোট হয়ে থাকে, তাহলে ধরে নেওয়া যায়, উত্তরবঙ্গে এবং জঙ্গলমহল অঞ্চলে বিজেপি ভালো আসন দখল করে ফেলেছে৷ তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার ঢেউ এবং দলবদলের এফেক্ট যদি বিজেপির পালে লাগতো, তাহলে সব ক’টি বুথ ফেরত সমীক্ষা রিপোর্ট জানাতে বাধ্য হতো, বিজেপির আসনসংখ্যা ২০০ অতিক্রম করার সম্ভাবনা পুরোমাত্রায়৷ তেমন প্রতিফলন হলো কোথায় ?

 

◾ তৃণমূলের আসনবৃদ্ধির আর একটি ক্ষেত্র মালদহ এবং মুর্শিদাবাদ জেলা৷ এই দুই জেলা মিলিয়ে মোট আসন ৩৪টি৷ এই ৩৪ আসনের মধ্যে এবার তৃণমূল পেতে পারে কমপক্ষে ১২-১৪ আসন৷ ফলে চূড়ান্ত ফলে এর প্রতিফলন দেখার সম্ভাবনা প্রবল৷

 

◾ বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে লড়াই এবার হাড্ডাহাড্ডি৷ ফলে এটা নিশ্চিত, সরকার যে দলই গঠন করুক, প্রায় পাঁচ দশক পর একটা

শক্তিশালী বিরোধী দলকে অপর দিকে দেখতে হবে৷ সংসদীয় গণতন্ত্রে এটা নিঃসন্দেহে বিশাল ব্যাপার৷ ইদানিংকালে ২০০১ সালে বিরোধী আসনে ছিলেন ৮৯ জন, ১৯৯৬ সালে ছিলেন ৮২ জন, ২০১৬ সালে সম্মিলিত বিরোধীর সংখ্যা ৭৩ জন৷ ২০০১ সালেই ছিলো সর্বোচ্চ ৷ এক্সিট পোল বলছে ২০২১-এ বিরোধী বেঞ্চে দেখা যেতে পারে শতাধিক বিধায়ককে৷ পাঁচ দশকে এটা রেকর্ড৷

Related articles

বিরক্ত মিঠুন? এড়াচ্ছেন বঙ্গ বিজেপির একাধিক কর্মসূচি

বারবার রং বদল করে আপাতত গেরুয়াতে ঠেকেছেন ডিস্কো ড্যান্সার মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। ভোটের আগে বা বিজেপির. (BJP)...

আরজি কর কাণ্ডে ভুয়ো প্রচারের অভিযোগ! নোটিশ চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামীকে

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পড়ুয়া অভয়ার মৃত্যুকে ঘিরে ভুয়ো প্রচার মামলায় নোটিশ ধরাল কলকাতা পুলিশ। পুলিশের...

দুর্গাপুজোর আগে রাজ্যে ডেঙ্গি-উদ্বেগ! টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে আশঙ্কা 

দুর্গোৎসবের মুখে একদিকে নিম্নচাপের জেরে টানা বৃষ্টি, অন্যদিকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রাজ্যবাসীর কপালে ভাঁজ বাড়াচ্ছে। জুলাইয়ের শেষ দিক থেকে...

মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রী! কিনলেন শাড়ি 

বর্ধমানে প্রশাসনিক সভায় এসে হঠাৎ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর স্টলে হাজির মুখ্যমন্ত্রী। শুধু মহিলাদের হাতের কাজই ঘুরে দেখলেন না, কেনাকাটাও...
Exit mobile version