Wednesday, November 12, 2025

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১৮টি আসন পেয়েছিল। ২০২১ এর বিধানসভা ভোটে সেই সমস্ত এলাকাতেই খুব খারাপ ফল হয়েছে। কিন্তু এর জন্য দায়ী কে? এক পক্ষ আঙ্গুল তুলেছে সাংসদদের দিকে। অপর পক্ষ বলছে, দায় দলের। কোনও একজন নয়, দায় সবাইকেই নিতে হবে।

কিন্তু কেন এমন হার? প্রাথমিক পর্যালোচনায় অনেক কারণই দেখছে রাজ্য বিজেপি। তার মধ্যে অন্যতম একটি কারণ মনে করা হচ্ছে সাংসদরা নিজের নিজের এলাকায় যথাযথ কাজ করেছেন কি? তাঁরা কি এলাকার সংগঠনে গুরুত্ব দিয়েছেন? এসব নিয়ে এখন চলছে চুলচেরা বিচার।

সমালোচক ও বিশ্লেষকদের মতে, সদ্য শেষ হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরকে হুগলি জেলা ডুবিয়েছে। যে সব জেলার উপরে বিজেপি-র রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতারা বেশি ভরসা করেছিলেন তার মধ্যে অন্যতম হুগলি জেলা। তিন লোকসভা আসনের হুগলিতে ১৮ আসনের মধ্যে মাত্র ৪টিতে জয় পেয়েছে বিজেপি। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে যদিও বিজেপি এগিয়ে ছিল ৮টি আসনে। কিন্তু রবিবারের ফল বলছে, গত লোকসভায় জেতা হুগলি লোকসভা এলাকার ৭টি আসনের একটিতেও জিততে পারেনি পদ্ম শিবির। স্থানীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বিধানসভা ভোটে প্রার্থী ছিলেন চুঁচুড়া কেন্দ্রে। ২০১৯ সালের হিসেবে চুঁচুড়ায় লকেট এগিয়েছিলেন প্রায় ২১ হাজার ভোটে। কিন্তু এবার তিনি পরাজিত প্রায় ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে। এই জেলায় বিজেপি যে ৪টি আসনে জিতেছে তার সবকটিই আরামবাগ লোকসভা এলাকার।

মুখ রক্ষা করেছেন কোচবিহারের নিশীথ প্রামাণিক এবং রানাঘাটের জগন্নাথ সরকার। দুজনেই জিতেছেন। যদিও নিশীথের জয়ের ব্যবধান খুবই কম। দুই অঙ্কের সংখ্যা। দিনহাটায় প্রায় ১৫ হাজারের ব্যবধান ছিল নিশীথের। যদিও কোচবিহার জেলার সার্বিক ফল খুব খারাপ নয় বিজেপি-র। মোট ৯ আসনের মধ্যে ৭টিতে জয় পেয়েছে দল। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথও জিতেছেন শান্তিপুর আসনে। কিন্তু গোটা জেলায় বিজেপি যেমনটা আশা করেছিল তার তুলনায় অনেক খারাপ ফল। ১৭-র মধ্যে ৯ আসনে জয় পেয়েছে বিজেপি। পাশাপাশি জগন্নাথের লোকসভা এলাকায় পদ্মের ফল ভালোই।

আরও এক সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কেও প্রার্থী করেছিল বিজেপি।যদি তিনি অবশ্য নিজের লোকসভা আসন আসানসোল থেকে প্রার্থী হননি। দল তাকে প্রার্থী করেছিল দক্ষিণ কোলকাতার টালিগঞ্জে কেন্দ্রে। বাবুল প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী অরূপ বিশ্বাসের কাছে হেরেছেন ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে। কিন্তু তাঁর লোকসভা এলাকার ৭টি বিধানসভার ফল মোটেই স্বস্তিদায়ক নয় । পশ্চিম বর্ধমানের ৯টি আসনের মধ্যে ৩টিতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। আসানসোল লোকসভা এলাকার ৭টির মধ্যে জয় এসেছে শুধু কুলটি আর আসানসোল দক্ষিণ কেন্দ্রে।

মেদিনীপুরের সাংসদ দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর লোকসভা এলাকার ৭টি আসনের মধ্যে খড়্গপুর সদর ছাড়া কোথাও হালে পানি পায়নি দল। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরেও বিজেপি জয় পেয়েছিল লোকসভা নির্বাচনে। অথচ বিধানসভা ভোটের ফল বলছে, সাংসদ কুনার হেমব্রম, জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো, সুভাষ সরকার, সৌমিত্র খাঁদের লোকসভা এলাকায় আশানুরূপ ফল হয়নি। সাংসদ সুরিন্দর সিংহ আহলুওয়ালিয়ার লোকসভা বর্ধমান-দুর্গাপুরের ৭ আসনের মধ্যে একমাত্র দুর্গাপুর পশ্চিমে জয় পেয়েছে বিজেপি। তবে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের দিকে সে ভাবে আঙুল তোলা যাবে না। তাঁর লোকসভা এলাকার মধ্যে একটি মাত্র আসন স্বরূপনগরেই হেরেছে বিজেপি।

Related articles

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কে স্বচ্ছতা আনতে চালু অনলাইন অডিট ব্যবস্থা

রাজ্যের সমবায় ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। এ বার থেকে সমস্ত সমবায় সমিতি...

সরকারি প্রকল্পে স্বচ্ছতা বাড়াতে চালু হচ্ছে জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা! নির্দেশিকা জারি নবান্নের 

সরকারি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও তদারকিতে আরও স্বচ্ছতা আনতে বড় পদক্ষেপ নিল রাজ্য সরকার। নবান্নের নির্দেশে এবার থেকে রাজ্যের...

মুখ্যমন্ত্রীকে কটূক্তি! ‘নারীবিদ্বেষী’ শান্তনু ঠাকুরের ইস্তফার দাবি তৃণমূলের

বিজেপি বাংলাকে সম্মান করে না। এই বিজেপি মহিলাদেরও সম্মান করে না, করতে জানেও না। সেটা আরও একবার প্রমাণ...

মৃত ভোটারের নামে ফর্ম জমা পড়লে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ কমিশনের

মৃত ভোটারের নামে এনুমারেশন ফর্ম জমা পড়লে এবার সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী,...
Exit mobile version