Saturday, August 23, 2025

কোচবিহারে রাজ্যপালকে কালো পতাকা, ধনকড়কে ‘অতৃপ্ত বৃদ্ধ’ বলে কটাক্ষ কুণালের

Date:

Share post:

সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের তৃতীয় দফার দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দেখা করতে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (Jagdeep Dhankar)। যাওয়ার পথে তাঁকে কালো পতাকা নিয়ে “গো ব্যাক” স্লোগান (Slogan) দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ-প্রশাসনকে।

আমজনতার ক্ষোভের মুখে পড়া রাজ্যপালকে আড়াল করে রাখতে হিমশিম খায় পুলিশ-প্রশাসন। ক্ষুব্ধ জনতার বক্তব্য, প্রায় এক মাস আগে ঘটনা ঘটলেও রাজ্যপালের এলাকায় আসতে এত দেরি হল কেন সেটা প্রকাশ্যে জানাতে হবে। কোচবিহারের মাথাভাঙার জোড়পাটকি নাগরিক মঞ্চের তরফে ওই প্রশ্ন তোলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্যানার, পোস্টারে রাজ্যপালকে ‘অপদার্থ’ বলেও কটাক্ষ করেছে মঞ্চ।

আরও পড়ুন:দেশে অক্সিজেনের জোগান দিতে ফ্রান্স থেকে অক্সিজেন প্ল্যান্ট আনছেন সোনু সুদ

বিক্ষোভ প্রসঙ্গে কোনও সরাসরি মন্তব্য করেননি রাজ্যপাল। তবে, তিনি জানান, সংবিধানের নিয়ম মেনেই তিনি কোচবিহারে নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চান। সে জন্যই কোচবিহার সফরের সিদ্ধান্ত নেন বলেও দাবি করেছেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে আরও এক ধাপ এগিয়ে রাজ্য থেকে অসমে (Assam) গিয়েছেন তাঁদের দেখতে সেখানে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু, কবে যাবেন তা স্পষ্ট নয়। যে হেতু এক রাজ্যের রাজ্যপাল অন্য রাজে যেতে হলে কিছু সাংবিধানিক নিয়ম মানা বাধ্যতামূলক, সেটা মেনেই ধনকড়কে অসমে যেতে হবে।

রাজ্যপালের এই সফরের কড়া সমালোচনা করেন তৃণমূল (Tmc) মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তিনি বলেন, রাজ্যপাল ‘অতৃপ্ত বৃদ্ধ’। রাজ্যে বিপুল সংখ্যারগিষ্টতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। ক্ষমতায় এসেই শীতলকুচির নিহতদের পরিবারকে সাহায্য ও চাকরি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট-পরবর্তী হিংসায় নিহতদেরও পরিবারকেও আর্থিক সাহায্য করছেন। কিন্তু জগদীপ ধনকড় এই পরিস্থিতিতেও শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে চাইছেন।

এদিন দুপুরে রাজ্যপাল কোচবিহারে পৌঁছন হেলিকপ্টারে। কোচবিহার জেলা সদর থেকে তিনি যান মাথাভাঙার (Matahbhanga) শীতলখুচিতে। সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটের সময়ে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়। সেখানে পুর্নিবাচন হয়। ওই বিধানসভায় অবশ্য বিজেপি জিতেছে। কিন্তু, গোটা রাজ্যে তৃণমূল ২১৩টি আসন পেয়ে ফের ক্ষমতাসীন হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, তার পরেই তৃণমূলের আক্রমণের জেরে মাথাভাঙা সহ কোচবিহারের নানা এলাকার অনেক বাসিন্দা লাগোয়া রাজ্য অসমে গিয়ে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন। যদিও রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল তা মানতে নারাজও। যদিও তৃণমূল তৃতীয়বার ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে রাজ্য সরকার শীতলখুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে নিহত ৪ টি পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। প্রতিটি পরিবারের একজনকে রাজ্য সরকার স্পেশাল হোমগার্ডের চাকরিও দিয়েছে। শুধু ওই চারজন নয়, ভোটের দিন নিহত বিজেপি সমর্থক আনন্দ বর্মণের পরিবারকেও সাহায্য করবে রাজ্য সরকার।

রাজ্যপাল কোচবিহার সফরের সিদ্ধান্ত নিলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া সমালোচনা করেন। কিন্তু রাজ্যপাল সে সব উপেক্ষা করে এদিন কোচবিহারে যান। সেখানে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়েন। তার পরেও তিনি জানিয়ে দেন, এবার তাঁর গন্তব্য, অসমে আশ্রয় নেওয়া কোচবিহারের বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবির। অর্থাৎ রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত যে রাজ্যপাল বাড়াতে চান সেই বার্তাই যেন স্পষ্ট করেছেন তিনি।

Advt

spot_img

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...