সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অভিযোজিত হয়েছে সমাজের রীতি-নীতি। কুসংস্কার, প্রাচীন প্রথাকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে সময়ের সঙ্গে সভ্য হয়েছে মানুষ। তবে সভ্যতার বিবর্তন হলেও সমাজের রন্দ্রে রন্দ্রে এখনো এমন কিছু প্রাচীন সংস্কার থেকে গিয়েছে যা দেখলে বিস্মিত হতে হয়। তেমনই এক প্রাচীন প্রথা ‘নরভক্ষণ'(Endocannibalism)। হ্যাঁ ঠিকই পড়েছেন এখনো পৃথিবীতে এমন জনজাতি রয়েছে যারা ‘নর ভক্ষণ’ করে। সম্প্রতি মানুষের মাংস খাওয়া এমনই প্রাচীন এক জনজাতির খোঁজ পাওয়া গেল দক্ষিণ আমেরিকার (South America) ব্রাজিল(Brazil) ও ভেনেজুয়েলায়(Venezuela)। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ানে’ প্রকাশিত হয়েছে মানুষের মাংস খাওয়া এই জনজাতির অদ্ভুত রীতিনীতি সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন।

আরও পড়ুন:‘রাধে’ ছবির ভিলেন, সাংরে স্টিহেলট্রিমের আসলে কে জানেন

দা গার্জিয়ান সূত্রে খবর, ব্রাজিল ও ভেনেজুয়েলায় বসবাসকারী এই জাতি ইয়ানোমামি(Yanomami)নামে পরিচিত। সভ্য জগতের ছোঁয়া এদের পারিপার্শ্বিক সমাজকে উন্নত করলেও, আধুনিক সভ্যতা থেকে শত যোজন দূরে থাকতেই পছন্দ করে এই জনজাতি। শুধু তাই নয় কঠোরভাবে নিজেদের সংস্কৃতি ও প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে চলে তারা। জানা গিয়েছে, ইয়ানোমামি জনজাতির মানুষের মৃত্যুর পর মৃতদেহ সৎকারের রীতি বড় অদ্ভুত। পরিবারের কোন সদস্যের মৃত্যু হলে সেই মৃতদেহের মাংস পুড়িয়ে পরিবারের বাকি সদস্যের পাশাপাশি আত্মীয় পরিজন সকলে মিলে খাওয়া হয়। ইয়ানোমামি জনজাতির বিস্ময়কর এই রীতি দেখলে যে কারোরই চক্ষুচড়কগাছ হওয়ার জোগাড় হতে বাধ্য।
কিন্তু কেন এমন অদ্ভুত রীতি পালন করে ইয়ানোমামিরা? এর পেছনে আমাজন জঙ্গলে বসবাসকারী ওই প্রজাতির মানুষের যুক্তি, মৃত্যুর পর শরীরে বাস করা আত্মাকে সংরক্ষিত করাটা জরুরী। তাদের দাবি আত্মা তখনই শান্তি পায় যখন সেই মৃতদেহকে আগুনে পুড়িয়ে মৃতের পরিজন তা ভক্ষণ করে। আর ঠিক এই কারণেই এই জাতির মানুষ পরিবারের সদস্যের মৃত্যুর পর তার মৃতদেহ আগুনে পুড়িয়ে তারপর সকলে মিলে হাসিমুখে তা খেয়ে নেয়। শুধু তাই নয়, পরিবারের সদস্যের মৃত্যু হলে এরা মৃত ব্যক্তির স্মরণে গান করে শোক পালনও করে।
