রাজ্যের দায়িত্ব নিয়ে আসার পর থেকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের (Jagdeep Dhankar) সঙ্গে নবান্নের সংঘাত লেগেই আছে। তৃতীয়বার তৃণমূল (Tmc) সরকার গঠন করার পর সেই সংঘাত আরও বেড়েছে। রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী এবং পরে মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেওয়ার পরেই সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন ধনকড়। এবার ফের রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে টুইট (Tweet) করেন জগদীপ ধনকড়। একইসঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি। রাজভবনের গেটে বিক্ষোভ নিয়ে রাজ্য সরকার ও পুলিশ প্রশাসনকে আক্রমণ রাজ্যপালের। বুধবার বিকেল ৫টায় পুলিশ কমিশনারকে ডেকে পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল।

State of law and order @MamataOfficial even at the main entry gate of Raj Bhawan worrisome with stance police @KolkataPolice leaving all to be desired.
And all this when the area is subject to 144 CrPC prohibitory orders.
Constrained to seek an update on it. pic.twitter.com/HIiD7bTf67
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) May 19, 2021
টুইটে রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও রাজভবনের প্রধান ফটকের সামনে যে ইচ্ছে চলে আসছে। পুলিশের ভূমিকা উদ্বেগজনক। এই বিষয়ে মঙ্গলবার রাজভবনের নর্থ গেটের সামনে একপাল ভেড়া নিয়ে এক ব্যক্তির পৌঁছে যাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করেন রাজ্যপাল। কটাক্ষ করে লেখেন, “পুলিশ দাঁড়িয়ে নাটক দেখছিল। ওই ব্যক্তিকে সরানোর কোনও চেষ্টা করা হয়নি। তার কাছে কোনও অস্ত্র আছে কি না তাও জানার চেষ্টা হয়নি”। এইসমস্ত ঘটনায় রাজ্যপাল ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে বলেও মন্তব্য করেন ধনকড়। “এই ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে আজ বিকেল ৫টায় কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে রিপোর্ট (Report) তলব করেছি”।
বুধবার, রাজভবনের সামনে এক ব্যক্তি একপাল ভেড়া নিয়ে প্রতিবাদ করেন। সেই ভিডিও নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে (Tweeter Handle) পোস্ট করেছেন ধনকড়। সেখানে তিনি লেখেন, “কলকাতা পুলিশের ভূমিকা হাস্যকর। একজন রাজভবনকে পিছনে রেখে ছবি তুলতে এসেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি”।

টুইটে আরও একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। ভিডিওতে শোনা যাচ্ছে তিনি বলছেন, রাজ্যপালের অফিস ভাঙচুর হবে। সেই ভিডিও পোস্ট করে ধনকড় লেখেন, “রাজভবনের বাইরে এই ধরনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না”।

নির্বাচনের আগের থেকে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রবল ক্ষোভ উগরে দেন রাজ্যপাল। তাকে সরাসরি ‘বিজেপির ধামাধারী’ বলে কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ নেওয়ার অনুষ্ঠানে যথেষ্ট আন্তরিকভাবে দেখা যায় রাজ্যপালকে। মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণের দিনও তিনি সবার সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তারপরেই সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্য প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তার শীতলকুচি, নন্দীগ্রামে যাওয়া নিয়ে রাজ্য সরকারের তথা শাসকদলের সঙ্গে সংঘাত বাড়ে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের এই টুইট নবান্ন এবং রাজভবনে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দিল বলে মত রাজনৈতিক মহলের।
