সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে নির্বাচনী হলফনামায় মামলার তথ্য গোপন করেছেন সদ্য নির্বাচিত বিজেপি (bjp) বিধায়ক মুকুল রায় (mukul roy)। যদিও নারদের আরেক অভিযুক্ত তথা বর্তমান বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী এই তথ্য উল্লেখ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৃণমূল থেকে আসা দলবদলু দুই বিজেপি নেতা বিধানসভা নির্বাচনের হলফনামায় তাঁদের বিরুদ্ধে চলা নারদ দুর্নীতি মামলার (narada case) তথ্য গোপন করে গিয়েছেন। এই অভিযোগ সামনে আসার পর দেখা যায় শুভেন্দু এই তথ্য দিলেও মুকুল তথ্য গোপন করেছেন। প্রশ্ন উঠছে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ ও নির্বাচন কমিশনের বিধি অমান্য করে তথ্য গোপনের দায়ে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে এবার কি এই বিজেপি নেতার বিধায়ক পদ খারিজ হবে?

প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্ট ইতিমধ্যেই নির্বাচনী হলফনামায় তথ্য গোপন করাকে “দুর্নীতিমূলক কাজ” বলে চিহ্নিত করেছে। বলা হয়েছে, ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ( Representation of the People Act) ৮ এ ধারা অনুযায়ী, তথ্য গোপনের মত গুরুতর ভুল করলে জনপ্রতিনিধি পদও খারিজ হয়ে যেতে পারে।


নারদকাণ্ডে যখন রাজ্যের দুই মন্ত্রী ও এক বিধায়ক-সহ চার রাজনৈতিক নেতার গ্রেফতারিতে রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়, তখনই এই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। নারদ মামলায় আরও অনেকে অভিযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও আগে আইপিএস অফিসার মির্জা ও এখন চার রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। তাঁদের তিনজনই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা এবং একজন কিছুদিন আগেও বিজেপি নেতা হিসাবে ভোটের প্রচার চালিয়েছেন। চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের তিনজন ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখার্জি ও মদন মিত্র তাঁদের নির্বাচনী হলফনামায় নারদ মামলার তথ্য দিয়েছিলেন। কিন্তু রাজনৈতিক কারণে যাদের সিবিআই গ্রেফতার করেনি বলে শোরগোল উঠেছে, সেই মুকুল রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে বিজেপি নেতা মুকুল মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় নারদ মামলার কথাই উল্লেখ করেননি! বিজেপির টিকিটে নির্বাচনে লড়লেও নারদ মামলায় অভিযোগের তথ্য গোপন করেছেন হলফনামায়। নির্বাচনী হলফনামায় ফর্মের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় প্রার্থীকে নিজের বিরুদ্ধে কোনও মামলা হয়ে থাকলে তার তথ্য দিতে হয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র এবং সুব্রত মুখার্জি কিন্তু হলফনামায় নারদ মামলার তথ্য দিয়েছিলেন। ভারতীয় দণ্ডবিধির যে যে ধারায় তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সেগুলি তাঁরা উল্লেখ করেছিলেন। নারদের তথ্য উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু অধিকারীও। কিন্তু মুকুল রায় নিজের বিরুদ্ধে এই মামলার কোনও তথ্য দেননি হলফনামায়। নারদের এফআইআরে নাম থাকলেও কী ধরনের অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে, সে তথ্য গোপন করে গিয়েছেন কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। নারদ মামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত হলেও তিনি সে তথ্য হলফনামায় এড়িয়ে গিয়েছেন।









