সোমে হল না জামিনের ফয়সালা: আপাতত গৃহবন্দি ৪ নেতা-মন্ত্রী, শুনানি বুধে

0
1

সোমে হল না নারদ মামলায় রাজ্যের দুই মন্ত্রী-সহ চার অভিযুক্ত সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukharjee), ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), মদন মিত্র (Madan Mitra) এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sobhan Chatterjee) জামিনের আবেদনের ফয়সালা। কলকাতা হাইকোর্টের ৫ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে পরবর্তী শুনানি বুধবার, ২৬মে। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিচ্ছেন। তাই শুনানি হবে বুধবার। নতুন কোনও নির্দেশ জারি না হওয়ায় গৃহবন্দিই থাকতে হবে নারদ-কাণ্ডে ধৃত ৪ নেতা-মন্ত্রীকে।

এদিন আদালতে প্রথম থেকেই প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা। এদিন মামলা হাইকোর্টে শুনানি শুরুর আগেই বৃহত্তর বেঞ্চে মামলা পাঠানোর বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। শুনানি শুরুর আগে হাইকোর্টে সেই কথা জানিয়ে আপাতত শুনানি মুলতবি রাখা আর্জি জানানো হয়। কিন্তু বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, “সুপ্রিম কোর্ট এখনও মামলা গ্রহণ করেনি, আমরা শুনানি শুরু করলে কীভাবে সিবিআইয়ের অধিকার খর্ব হবে?”

ঘূর্ণিঝড় আসার পূর্বাভাস এর কথা উল্লেখ করে বিচারপতিরা বলেন, বুধবার, প্রযুক্তিগত কারণে পরিষেবা ব্যাহত হতে পারে। এরপর মামলার শুনানি শুরু হয়।
আদালতকে আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা জানান, নেতা-মন্ত্রীদের যে আইন মেনে গ্রেফতার করা হয়নি, তা তদন্তকারী সংস্থাটি সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাচ্ছে। এর উত্তরে সলিসিটর জেনারেল ১৭ মে ঘটনাক্রম আদালতে তুলে ধরে। তার বিরোধিতা করে অভিযুক্তদের পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি জানান, সিবিআই (CBI) ডিভিশন বেঞ্চে অনেক তথ্য গোপন করেছে। ১৭ মে নিম্ন আদালতের রায় না দেখেই ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ জারি করেছিলেন।

জামিনের মামলার শুনানির সময় ধৃতদের বক্তব্য শোনা হল না কেন? প্রশ্ন তুললেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা।

সলিসিটর জেনারেল জানান, সিবিআই শুধু জামিন বাতিল করতে চাইছে না। নিজাম প্যালেসে ঘটনার দিন বিক্ষোভ দেখানো হয়েছিল। এই পরিস্থিতির উদাহরণ দেখে মামলাটি অন্যত্র সরানোর আর্জিও জানিয়েছে। নারদ- মামলায় এখন মেগা ইস্যু ১৭ মে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের জামিন৷ বাকি সব পরে হবে, বলেন মনু সিংভি। বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় জানান, আদালত স্থানান্তরের মামলা শোনার এক্তিয়ার হাইকোর্টের নেই।

বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায় জানতে চান, তদন্তের সময় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছিল কি না? জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, তাঁদের কখনওই গ্রেফতার করা হয়নি। ২০১৩ সালে এই মামলা শুরু হয়, ৭ বছর কেন গ্রেফতারির প্রয়োজন হল না? আর এখন হঠাৎ চার্জশিট জমা দেওয়ার পরই বা গ্রেফতার করার প্রয়োজন পড়ল কেন? প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। এই প্রশ্নের কোন জবাব দিতে পারেননি তুষার মেহেতা।

অভিষেক মনু সিংভি বলেন, নেতা-মন্ত্রীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। কেবল রাজ্যপালের অনুমতি নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্পিকারের অনুমতি নেওয়া হয়নি। তুষার মেহেতা বলেন, ‘‘আমরা মনে হয় মূল বিষয় থেকে সরে যাচ্ছি। আমি আর এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’’

দু’পক্ষের সওয়াল জবাবের পরে সোমবারের মত এই মামলার শুনানি শেষ হয়। পরবর্তী শুনানি বুধবার। কিন্তু অন্য কোনো নির্দেশ না আসায় গৃহবন্দি থাকতে হচ্ছে ৪ হেভিওয়েট নেতাকে।

Advt