Sunday, November 9, 2025

খাচ্ছেন-দাচ্ছেন, টিভি দেখছেন, গল্প করছেন, বহাল তবিয়তে শোভন

Date:

Share post:

খাচ্ছেন-দাচ্ছেন, গল্প করছেন, টিভি দেখছেন, খবর পড়ছেন। গোল পার্কের বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের নরম বিছানায় বহাল তবিয়তে কলকাতার প্রাক্তন মহানাগরিক শোভন চট্টোপাধ্যায়। ২৪ ঘন্টার জন্য তাঁর পরিচর্যায় মেন্টর, বন্ধুনী, পরামর্শদাতা, দুঃসময়ের সঙ্গী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই জানাচ্ছেন, ডায়াবেটিকের ওষুধ ছাড়া কার্যত কোনও ওষুধই নিতে হচ্ছে না। যাকে বলে তন্দুরস্ত রয়েছেন বন্ধু।

নারদাকাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই শোভন বিতর্কে। নিন্দুকেরা বলছেন, সৌজন্যে অবশ্যই শোভন-বান্ধবী। নিজামে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে নাকি শোভন এমন কিছু আচরণ করেছিলেন, যা দেখে তদন্তকারী কর্তাদের চক্ষু ছানাবড়া, বিস্মিত। তাঁরা নাকি ঘনিষ্ঠ মহলে বলেছেন, ইয়ে আদমি কা ক্লার্ক বাননে কা আওকাত নেহি, ইয়ে ক্যায়সে মেয়র অউর মন্ত্রী বানা!

শোভন যেখানে শেষ করছেন, বৈশাখী সেখান থেকে শুরু করছেন। জেলে যাওয়ার পর বৈশাখী যেভাবে জেল গেটের দরজায় কার্যত মাথা কুটেছেন, তা দেখে এক বাংলা ফিল্মি তারকা হাসতে হাসতে বলেছেন, বিশ্বাস করুন, বাংলা তৃতীয় শ্রেণির ছবিতে শ্বাশুড়ি বাড়ি থেকে বৌমাকে বের করে দিলে যেভাবে মাথা কুটে কান্নায় ভেঙে পড়ে, আমার সেদিন শুধু সেই দৃশ্যের কথাই মনে পড়ছিল!

তারপর হাসপাতালে এসে আর এক কাণ্ড। শোভনের নাকি আবদার ছিল, বৈশাখীকেও তাঁর উডবার্ন ওয়ার্ডে একটা বেড দিতে হবে। তাতে কেউ কেউ ভ্রূকুঞ্চিত করলেও শোভন তাতে কিছু মনে করেননি। শুধু কি তাই! উডবার্নে শোভনকে যেমন অবাধে ঘুরতে দেখা গিয়েছে, তেমনি বৈশাখীকেও। রাতের পোশাকে শোভনকে দেখে কে বলবে তিনি বন্দি আসামি!

বন্ধু শোভনকে হাসপাতালে থেকে ছাড়াতে মরিয়া বৈশাখী রাজ্য সরকারকেও কাঠগড়ায় তোলেন। পালটা তাঁর দিকে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বক্রোক্তি, হাসপাতালটা কি মধুচক্র? আবদার করছেন, ঘুরে বেড়াচ্ছেন, ফাজলামি নাকি? সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্রকে বেকায়দায় ফেলছেন। রেগে গিয়ে বন্দিদশার সমস্ত নিয়মনীতি ভেঙে শোভন হাসপাতালের জানলা দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন। সাংবাদিক সম্মেলন কোথায়! ব্যক্তি আক্রমণ, আর বৈশাখী যে মহীয়সী, তা প্রমাণে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন।

স্ত্রী রত্নার ভাই অর্থাৎ শালাবাবুর নামে নাকি শোভনের গোলপার্কের ফ্ল্যাট। সেখানেই যশের ভয়াবহ ভ্রূকুটির মাঝেও পরম শান্তিতে শোভন। নেবুলাইজার, অক্সিজেন হাতের কাছে থাকলেও সেসব লাগছে না। খাচ্ছেন, গল্প করছেন, খবর দেখছেন, কাগজ পড়ছেন। হাসপাতালের দেওয়া ওষুধ খেলেও কোনও অস্বস্তি নেই। তবে বুকে একটা চিনচিনে ব্যথা আছে। ডাক্তারকে অবশ্য ফোন পর্যন্ত করতে হয়নি। বাড়ির পরিবেশ বোধহয় সেসব কাটিয়ে দেবে। দাদার মৃত্যুর কথা জেনেছেন। তবে আপাত গৃহসুখে কাঁটার মতো বিঁধে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে নারদ মামলা যাওয়ায়।

শোভন শুভানুধ্যায়ীরা শঙ্কায় বলছেন, সবই তো ঠিক আছে, কিন্তু কখন কী ঘটে যায়, কিচ্ছু বলা যায় না।

Advt

spot_img

Related articles

এপিকের সঙ্গে মোবাইল লিঙ্ক না থাকলে অনলাইনে ফর্ম নয়! কমিশনের নিয়মে ক্ষোভে ফুঁসলেন কল্যাণ 

নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকা ঘিরে ফের রাজনৈতিক বিতর্ক। রবিবার শ্রীরামপুর পুরসভার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট রক্ষা শিবিরে অংশ...

ফাইনাল ম্যাচে শাহরুখের মন্ত্রেই ছাত্রীদের তাতিয়ে ছিলেন? অকপট স্মৃতিদের কোচ

ভারতীয় মহিলা দল বিশ্বকাপ জেতার পরই চক দে ইন্ডিয়ার কবীর খান হয়ে উঠেছেন অমল মুজুমদার(Amol Muzumdar)। কী বলে...

এসআইআর আতঙ্কে মৃতদের পরিবারের পাশে তৃণমূল: রাজ্যজুড়ে শোকাহত পরিবারগুলির ঘরে দলের জনপ্রতিনিধিরা 

এসআইআর আতঙ্কে রাজ্যজুড়ে মৃত্যুর ঘটনা ক্রমশ বাড়ছে। কোথাও আত্মহত্যা, কোথাও আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু— ভয় ছড়িয়ে পড়েছে গ্রাম...

বাংলাভাষায় ১০ কোটিও খরচ নয়! বাঙালিবিদ্বেষী বিজেপির রবীন্দ্র-বঙ্কিম ভাগে তোপ গণমঞ্চের

বিজেপি আদতে বাঙালি বিদ্বেষী, তা সাম্প্রতিক সময়ে বারবার প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণিত। সেই বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে দেশ বাঁচাও...