Thursday, November 6, 2025

ইতিহাদ এয়ারওয়েজে হয়রানি: মা-মেয়েকে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশের রায় বহাল হাইকোর্টে

Date:

খায়রুল আলম, ঢাকা:

দশ বছর আগে বাংলাদেশি দুই নাগরিককে হয়রানির অভিযোগে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষকে এক কোটি করে ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ বহাল রাখল হাইকোর্ট।

বুধবার এই তথ্য জানান রিট আবেদনের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোর্শেদ । গত বছরের ৮ অক্টোবর হাইকোর্ট ওই রায় দিয়েছিলেন।
বাংলাদেশি দু’জন নাগরিককে ২০১১ সালের ২৮ জুন আবুধাবি এয়ারপোর্টে হয়রানি/নির্যাতন/আটকের ঘটনায় ইতিহাদ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছিল ।
ওই বছরের ১৪ জুলাই হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ঘটনা তদন্ত করে একটি রিপোর্ট দাখিল করতে হবে।

দীর্ঘদিন শুনানি শেষে গত বছরের ৮ অক্টোবর রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে বাংলাদেশি যাত্রী তানজিন বৃষ্টি ও নাহিদ সুলতানা যুথীকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়।

বুধবার মনজিল মোর্শেদ জানান, ১৯২ পৃষ্ঠার ওই রায়ে আদালত অনেকগুলি নির্দেশ দিয়েছেন।

এক. বিশ্বব্যাপী মহামারি কোভিড-১৯ সংকটের কারণে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের অবস্থা বিবেচনায়
করে আবেদনকারী এবং তার মা প্রত্যেককে মাত্র ১ (এক) কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ইতিহাদ এয়ারওয়েজ এর বাংলাদেশ প্রতিনিধির মাধ্যমে ইতিহাদ এয়ারওয়েজকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

দুই. এই রায় ও আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পরবর্তী মাস থেকে ২০টি সমান মাসিক কিস্তিতে ক্ষতিপূরণের টাকা ইতিহাদ এয়ারওয়েজকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিন. নারী যাত্রীদের সঙ্গে অধিকতর সতর্কতায় সম্মানজনক আচরণ করার জন্য ইতিহাদ এয়ারওয়েজকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চার. বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী বাংলাদেশি নাগরিকরা আকাশপথে চলাচল করেন। এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের পণ্য প্রতিনিয়তই আকাশপথে পরিবহন করা হয়। তাই বাংলাদেশি প্রবাসি সব কর্মজীবী ও রপ্তানিকারদের স্বার্থ রক্ষার্থে এবং তাদের অধিকার আদায়ে বাংলাদেশের সব দূতাবাসে এই মামলার রায় অনুসারে সভা, সেমিনার আয়োজন করে বিমান সংস্থার দায়বদ্ধতার বিষয়ে তাদের ওয়াকিবহাল করতে হবে। যাতে আকাশপথে যাতায়াতের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হলে যথাযথ ক্ষতিপূরণ তারা আদায় করতে সক্ষম হন।

পাঁচ. আকাশপথে যাত্রী ও যাত্রীর লাগেজ, পণ্যের মালিকের অধিকতর নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য International Civil Aviation Organization (ICAO) কে আরও বেশি তৎপর হতে হবে। বর্তমান ICAO এর কার্যক্রম যতটা যাত্রীবান্ধব তার চেয়ে বেশি পরিবহন সংস্থাবান্ধব। যেহেতু বর্তমান বিশ্বে যাত্রী ও পণ্য দ্রুত পরিবহনের অন্যতম তথা প্রধান মাধ্যম আকাশপথ, সেহেতু আকাশ পরিবহন সংস্থা এবং যাত্রী সাধারণের মধ্যেকার দায় দায়িত্ব আরও বেশি সহজ-সরল, সুনির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট হওয়া উচিত। বিশেষ করে সাধারণ যাত্রী ও সাধারণ পণ্য মালিককে সুরক্ষা দেওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বড় ও নামী বিমান সংস্থার সামনে সাধারণ যাত্রী নিতান্তই অসহায়।

সেহেতু ICAO এর প্রধান উদ্দেশ্য এবং কাজ হবে সাধারণ যাত্রীরা যেন তার অধিকার আদায়ে কিংবা তার ক্ষতিপূরণ আদায়ে কোনওরকম বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন না হয় সেটি দেখা। আকাশ পরিবহন কার্যক্রম পরিবহন সংস্থার লাভের জন্য নয়। বরং এটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ভ্রমণকারীদের সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে পরিচালিত।

Related articles

বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় আজ বিহারে ১২১ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ

আজ থেকে শুরু হল বিহার বিধানসভা নির্বাচন। বৃহস্পতিবার প্রথম দফার ভোটগ্রহণ (Bihar Election 2026 First Phase)।এই পর্বে মোট...

KIFF: সিনেপার্বণের সূচনায় আজ শহরে নক্ষত্র সমাবেশ, বিকেলে ফিল্মোৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী

রুপোলি সিনেমা শহরে দিল পা, বছর ঘুরে আবার এল কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (31st Kolkata International Film Festival...

সুপ্রিম নির্দেশে রাজ্যে ফের শুরু ১০০ দিনের কাজ, নবান্নে তৎপরতা তুঙ্গে 

প্রায় তিন বছর পর ফের রাজ্যে শুরু হতে চলেছে কেন্দ্রীয় ১০০ দিনের কাজ (এমজিএনআরইজিএ) প্রকল্প। সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা...

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...
Exit mobile version