কমলা ঢেউ হারিয়ে “চেক মেট” ডাচ! ইউরো থেকে ছিটকে গেলো নেদারল্যান্ডস

ফেভারিট হিসেবে ম্যাচ শুরু করেছিল নেদারল্যান্ডস (Netherlands)। অন্যদিকে গ্রুপ থেকে তৃতীয় হয়ে নক-আউটে এসে নেমেছিল চেক রিপাবলিক (Czech Republic)। সৌজন্যে প্যাট্রিক শিক (Patrick Shik)। অন্যদিকে, কমলা ঢেউ তুলতে নেদারল্যান্ডসের সুপার ইলেভেন ছিলেন ডিপাই, ডি ইয়ং, ভাইনালডাম, ডি লিখটের মতো রথী-মহারথীরা। কিন্তু দক্ষতা আর স্কিল হার মানলো অদম্য জেদ ও পরিশ্রমের কাছে। ফলস্বরূপ, ম্যাচ শেষে “চেক মেট” ডাচ। ফেভারিট নেদারল্যান্ডসকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেল আন্ডার ডগ চেক রিপাবলিক।

ম্যাচের শুরুটা নিঃসন্দেহে ছিল নেদারল্যান্ডসের। একের পর এক অরেঞ্জ সাইক্লোন আছড়ে পড়ছিল চেক ডি-বক্সে। টানা আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে টমাস ভাসিলিকের ত্রাহি ত্রাহি দশা। বেশ কয়েকবার অনেকটাই বেড়িয়ে এসে গোল বাঁচিয়েছেন চেক গোলকিপার। যেভাবেই হোক বিপর্যয় আটকানোই ছিল তাঁর লক্ষ্য। সে কাজে তিনি সফল। আবার প্রাথমিক ঝড়-ঝাপটা সামলে কালে-ভদ্রে আক্রমনে উঠে চেকও ডাচ রক্ষণের পরীক্ষা নিয়েছে। ২১ মিনিটে টমাস সুচেকের ডাইভিং হেড কিংবা ২৮ মিনিটে প্যাট্রিক শিকের গোলা একটু ডাচদের জাল কাঁপিয়ে দিতেই পারত।

কমলা ঢেউ আটকাতে চেক প্রজাতন্ত্র নিজেদের রক্ষণ জমাট করতে ফরমেশন বদলে ৫-৪-১ করে ফেলে। আবার বলের জোগান নিশ্চিত করতে নেদারল্যান্ডসের মেম্ফিস ডিপাইকে মাঝমাঠে নেমে আসতে হচ্ছিল। কিন্তু গোছানো ফুটবল নয়, চেকদের বিপাকে ফেলতে দ্রুত গতিতে আক্রমণ-এর রাস্তায় দৌড়ে ছিল ডাচরা। তবে প্রথমার্ধ গোলশূণ্য।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই কাঙ্খিত গোলটি পেতে পারত নেদারল্যান্ডস। কিন্তু ৪৯ মিনিটে ডনিয়েল মানেলের কাছে বল ঠেলতে পারেননি ডুমফ্রিজ। আর ৩ মিনিট পর মানেলকে ফাঁকায় বল দিয়েও গোল বের করতে পারেননি ডিপাই। গোলকিপারকে একা পেয়েও শট না নিয়ে কাটানোর চেষ্টা করতে গিয়ে বল এবং গোল, দুটোই হারাতে হয় মানেলকে।

এদিকে, সুযোগ বুঝে প্রতিআক্রমণে উঠছিল চেকরা। যা কখনও কখনও ডাচদের হৃদকম্প বাড়িয়ে দিচ্ছিল। প্যাট্রিক শিককে আটকাতে গিয়ে ম্যাচের সবচেয়ে বড় ভুলটি করে ফেলেন ডাচ রক্ষণের শেষ ভরসা হয়ে থাকা ডি লিখট। বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে হাত দিয়ে বল আটকালেন ডি লিখট। লাল কার্ড দেখলেন তিনি। ম্যাচের বাকি সময়টি ১০ জনে খেলতে হয় নেদারল্যান্ডসকে। এবং এটাই ছিল টার্নিং পয়েন্ট।

৬৪ মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি পাভেল কাদেরাবেক। কিন্তু একজন বাড়তি খেলোয়াড় নিয়ে খেলার সুবিধা ৩ মিনিট পরই বুঝে নিয়েছে চেক। ডাচ গোলকিপার স্টেকেলেনবার্গের ভুলে কর্নার পায় চেক প্রজাতন্ত্র। উড়ে আসা বল দূরের পোস্ট থেকে হেড করে কাছের পোস্টে পাঠান টমাস কালাস। তিনজন ডাচ খেলোয়াড় মিলেও টমাস হোলেসের হেড আটকাতে পারলেন না। এগিয়ে গেল চেক প্রজাতন্ত্র।

৮০ মিনিটে ম্যাচ জুড়ে পরিশ্রমের ফল মিলল শিকের। বাঁ পায়ের দারুণ শটে স্টেকেলেনবার্গকে ফাঁকি দিলেন। এ গোলের কৃতিত্ব অবশ্য হোলেসও নিতে পারেন। প্রায় একাই ডাচ রক্ষণে ঢুকে গিয়ে শিককে জায়গা করে দিয়েছেন প্রথম গোলদাতা।

ম্যাচের বাকিটা শুধু নিয়ম রক্ষার। ডাচদের আক্রমণে কোনও ঝাঁজ ছিল না। ডাচদের “চেক মেট” করে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর বাকি সময়টা আর বেশি পরিশ্রমের রাস্তায় হাঁটেনি প্যাট্রিক শিকরা।

Previous articleবিজেপির ভুয়ো পরিষদীয় সচিবকে নিয়ে নয়া বিতর্কে শুভেন্দু অধিকারী
Next articleআইএসএফ নিয়ে ভিন্ন সুর কংগ্রেসের অন্দরে, জোট-বার্তা দিতে ফুরফুরায় মান্নান