ভাগ্যের পরিহাস!! মেগা সিরিয়ালের অভিনেতা এখন কাজ হারিয়ে মাছের ফেরিওয়ালা

বিভীষিকার নাম করোনা(corona pandemic) আতঙ্কের নাম করোনা। বাংলা মেগা সিরিয়ালের (Bengali mega serial) পরিচিত মুখ অরিন্দম প্রামাণিক (Arindam pramanik)এখন অভিনয় ছেড়ে মাছের ব্যবসা করছেন।  কারণ করোনা (fish business)। করোনা কেড়েছে কাজ। কেড়েছে পেশা। কেড়ে নিয়েছে ভালোবাসা। পুর্ব বর্ধমানের মেমারির সোমেশ্বরতলার বাসিন্দা অরিন্দম প্রামানিক প্রায় দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে টালিগঞ্জে মেগা সিরিয়ালে অভিনয় করছিলেন। ২০১১ সালে সুবর্ণলতা মেগা ধারাবাহিকে খোকা চরিত্রে অরিন্দমের অভিনয় তাঁকে সিরিয়াল ইন্ডাস্ট্রিতে পরিচিত করে তোলে। তারপর একে একে রাশি, অগ্নিপরীক্ষার মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে কাজ করেছেন। ছোটপর্দার পাশাপাশি বড় পর্যাপ্ত সুযোগ পেয়েছিলেন। তোর নাম, হারকিউলিস প্রকৃতি সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন অরিন্দম।

কিন্তু গতবছর করোনার প্রথম সংক্রমণের সময়ে লকডাউন শুরু হতেই শুটিং বন্ধ হয়ে যায় । দীর্ঘদিন ধরে টানা কাজ নেই হাতে। টাকার যোগান কী ভাবে হবে। বাড়িতে বাবা-মা ছাড়াও রয়েছেন স্ত্রী। সংসারে রোজগেরে বলতে একমাত্র অরিন্দমই। তখন বাবার পরামর্শে টালিগঞ্জ ছেড়ে মেমারিতে বাড়িতে ফিরে আসেন অরিন্দম। বাবাই তাকে বোঝান রোজগারের বিকল্প পথ ভাবতে হবে। কিন্তু তার জন্য মনে কোন সংকোচ রাখলে চলবে না। অরিন্দম বলকেন, ” বাবা বলল মাছের ব্যবসা কর। আমিও দেখলাম সেটাই শ্রেয়। বাবার একটা সবজির দোকান ছিল। কিন্তু বিক্রি-বাট্টা হতো না সে রকম। সেরকম। মাছের ব্যবসা শুরু করলাম। আর সত্যি বলছি, আমি এখন বেশ স্টেবল। পেটের টান এমন একটা জিনিস, পকেটে যখন পয়সা নেই, তখন ইন্ডাস্ট্রিতে গিয়ে কাউকে পাঁচশো টাকা ধার চাইলেও কেউ দেবে না। তাই সব থেকে ভালো নিজের সম্মান নিজের কাছে রেখে রোজগারের ব্যবস্থা করা। কিন্তু যদি আবার সিরিয়ালে কাজ করার সুযোগ আসে?

অরিন্দমের কথায়, সে যে একদম আসেনি তা নয়। সুযোগ এসেছিল। এটাই আমার আয়ের একমাত্র উৎস। সেই সঙ্গে আমার গোটা পরিবারকে বাঁচানোর উপায়ও এটাই। স্বপ্নের পেশায় যাওয়ার ঝুঁকি নিতে পারিনি। সব অফার ফিরিয়ে দিয়েছি। এখন মনে হচ্ছে খুব ভুল কিছু করিনি। দেখলাম আবার বন্ধ হল। এখন তো শুনছি থার্ড স্টেজ আসছে। এখন এই মাছের ব্যবসাটাকে ছেড়ে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। অনেকটা সাজিয়ে নিয়েছি। এখন রোজ ভোর থেকে উঠে মেমারি স্টেশন বাজারের আড়তে মাছ বিক্রি করেন বছর চৌত্রিশের অরিন্দম প্রামানিক। বড় কাতলা ১৮০ টাকা কেজি, বড় কাতলা ১৮০ টাকা কেজি।

 

সত্যিই !! ভাগ্যের কী পরিহাস। নাট্যকার ও নির্দেশক চন্দন সেনের নাটকের দলে যার অভিনয়ে হাতেখড়ি সে এখন সংসার চালাচ্ছে রুই কাতলা মৃগেল বিক্রি করে।

Previous articleকরোনার গতি রুখতে সপ্তাহে একদিন বাজার বন্ধের সিদ্ধান্ত হাওড়া পুরসভার
Next articleত্রিপল চুরি মামলা: ভার্চুয়ালি হাজিরা দিয়ে আগাম জামিনের আর্জি শুভেন্দুর, খারিজ করল আদালত