Friday, August 22, 2025

দুষ্কৃতীরাজ রুখতে একজোট পুলিশ-বাবসায়ী, সিসি ক্যামেরায় নজরবন্দি হরিশ্চন্দ্রপুর

Date:

অবস্থানটাই সুবিধেজনক। তাই নিজেদের অপারেশনে বারবার মালদহের (Maldah) হরিশ্চন্দ্রপুরকে বেছে নিয়েছে সমাজবিরোধীরা। দুষ্কর্ম করে একবার পাশের রাজ্যে ঢুকে পড়তে পারলেই হল। তাহলে এরাজ্যের পুলিশ (Police) আর তাদের নাগাল পাবে না। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে দুষ্কৃতীদের সফ্‌ট টার্গেট হরিশ্চন্দ্রপুর (Harishchandrapur)। এখানে যেমন অনেক বনেদি পরিবার রয়েছে, তেমনই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসাবে হরিশ্চন্দ্রপুরের নাম রয়েছে মালদহ থেকে শুরু করে প্রতিবেশী রাজ্যেও। করোনা আবহে দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বলে অভিযোগ। দুষ্কৃতীদের রুখতে এবার কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। যান্ত্রিক নজরদারিতে মুড়ে ফেলা হচ্ছে হরিশ্চন্দ্রপুরের জনবহুল এলাকা। এক্ষেত্রে পুলিশের তরফে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতিরও সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।এনিয়ে শনিবার রাতে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় দুপক্ষের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠক ফলপ্রসু হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।

মালদহে পশ্চিম প্রান্তে হরিশ্চন্দ্রপুর। পাশেই বিহার। এখান থেকে প্রতিবেশী রাজ্যে যাওয়ার একাধিক পথ রয়েছে। দীর্ঘদিন আগে থেকেই হরিশ্চন্দ্রপুর জেলার অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসাবে পরিচিত। জমিদার প্রথা বিলোপের পরেও তার গায়ে লেগে থাকা সেই সুনাম অক্ষুন্ন। তাই অনেক আগেই হরিশ্চন্দ্রপুরে ব্যবসার পত্তন করেছিলেন একাধিক ব্যবসায়ী। তাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে একাধিক ব্যাঙ্ক ও অর্থ আদানপ্রদানকারী সংস্থার দফতর। এভাবেই ধীরে ধীরে ব্যবসার প্রসার বাড়তে থাকে। কেন্দ্রীয় সরকার সোনালি চতুর্ভূজ সড়ক যোজনায় হরিশ্চন্দ্রপুরের কথা মাথায় রেখেছে বলেই মনে করেন জেলাবাসীর একাংশ। কিন্তু ব্যবসার পরিধি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হরিশ্চন্দ্রপুরের উপর নজর পড়ে দুষ্কৃতীদের। শুধু স্থানীয় নয়, বিহারের দুষ্কৃতীদেরও সফ্‌ট টার্গেট এই এলাকা। মাঝেমধ্যেই এখানে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এমনকী, গুলি চালাতেও দুষ্কৃতীরা পিছুপা হয় না। তারা জানে, দুষ্কর্ম করে একবার ভিন রাজ্যে ঢুকে পড়তে পারলে এরাজ্যের পুলিশ তাদের টিকি ছুঁতে পারবে না। দুই রাজ্যের প্রশাসনিক সমন্বয় তৈরির ক্ষেত্রেও অনেকটা সময় লেগে যাবে। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের কাজ সেরে দুষ্কৃতীরা প্রতিবেশী রাজ্যে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। তাই এবার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকাকে সিসি ক্যামেরায় (C C Camera) মুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ। এ নিয়েই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় এক বিশেষ বৈঠক হয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে।

বৈঠকের পর হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস বলেন, “হরিশ্চন্দ্রপুরের মূল এলাকায় দুষ্কৃতীদের রুখতে আমি সিসি ক্যামেরা লাগানোর জন্য ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছিলাম। এতে এই এলাকা সুরক্ষিত থাকবে। কোনও দুষ্কর্ম হলে আমরা দুষ্কৃতীদের চিহ্নিতও করতে পারব। আপাতত হরিশ্চন্দ্রপুর বাজার, বারোদুয়ারি, স্টেশন, ব্লক ও হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা এবং তুলসীহাটায় এমন ক্যামেরা লাগানো হবে। কারণ, এই এলাকাতেই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বেশি রয়েছে। আশা করছি, কয়েকদিনের মধ্যেই আমরা ক্যামেরা লাগাতে পারব”।

অন্যদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর ব্যবসায়ী সমিতির কোষাধ্যক্ষ প্রবীণ কেডিয়া বলেন, “এলাকার নিরাপত্তা বাড়াতে থানার আইসি আমাদের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। আমরা এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। আশা করা যাচ্ছে, দিন দশেকের মধ্যেই হরিশ্চন্দ্রপুরের প্রধান ব্যবসায়িক এলাকাগুলি সিসিটিভির নজরদারিতে চলে আসবে। পুলিশের এই সিদ্ধান্তে আমরাও দুষ্কৃতীদের নিশানা থেকে রক্ষা পাব বলে মনে করছি”।

 

Related articles

সোনা জয়ী অভিনবকে শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর

এশিয়ান শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপ জুনিয়র (Asian Shooting Championship) এয়ার রাইফেল বিভাগে বাংলার অভিনব সাউয়ের (Abhinaba Shaw)। তাঁর এই সাফল্যই...

পুজোর আগে রাজ্য পুলিশের শীর্ষস্তরে রদবদল! পরিবর্তন হল ৬ জেলার এসপি-ডিসি

পুজোর মুখে রাজ্য পুলিশের শীর্ষ পদে বড়সড় রদবদল করল নবান্ন। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, একাধিক জেলায় পুলিশ...

‘নোরা ফাতেহি’ হতে হবে! স্ত্রীকে জোর করে শরীরচর্চা করিয়ে গর্ভপাত শিক্ষকের

যোগীরাজ্যে স্কুলশিক্ষকের ফ্যান্টাসির চূড়ান্ত নমুনা! স্ত্রীকে হতে হবে রোগা ছিপছিপে চেহারার। আর সেই চেহারা বানাতে গিয়েই স্বামীর নির্মম...

গান-কবিতায় সংসদে সরব তৃণমূল! বয়কট রাজ্যসভার চা-চক্র

বৃহস্পতিবার অধিবেশনের শেষ দিনে সংসদ উত্তাল হল বাংলা গান, কবিতা, বিক্ষোভ, প্রতিবাদে। সংসদের অন্দরে যেমন কালাকানুন, এসআইআর, ভাষাসন্ত্রাসের...
Exit mobile version