বাদল অধিবেশনের প্রথম দিন থেকেই একের পর এক নানা বিষয়ে প্রশ্ন করে কেন্দ্রীয় সরকারকে নাজেহাল করে দিচ্ছেন তৃণমূল (Tmc) কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও লোকসভার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Bandyopadhyay) । পেগাসাস (Pegasus) এবং পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সংসদের সরব হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীদের কাছে প্রশ্ন তুলে ধরেছেন তিনি। শুক্রবার কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির (Smriti Irani) কাছে অভিষেক জানতে চান, মহিলাদের জন্য ডিজিটাল শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করতে কি কোন পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র? যেহেতু মহিলাদের মধ্যে ডিজিটাল (Digital) শিক্ষার হার কম, সেক্ষেত্রে তাদের কি বাধ্য হয়ে অন্যের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে? যে কারণে মহিলারা ডিজিটাল শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে তুলনামূলকভাবে পিছিয়ে পড়ছেন। এই অবস্থায় মহিলাদের অন্যের উপর নির্ভরতা কমাতে কোনও পরিকল্পনা নিয়েছে কেন্দ্র? মহিলারা যাতে সমস্ত তথ্য নিজেরাই পেতে পারেন সেজন্য কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? ডিজিটাল শিক্ষার ক্ষেত্রে গ্রামীণ এলাকার মহিলারাও যাতে পিছিয়ে না থাকেন সেজন্য বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথভাবে নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক যুগ্ম পরিকল্পনা নিয়েছে কি না, সে প্রশ্নও করেন তৃণমূল সাংসদ। যদি নিয়ে থাকে তবে সেই পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য কেন্দ্র নির্দিষ্ট কোনও সময়সীমা নির্ধারণ করেছে কি?
মহিলাদের ডিজিটাল শিক্ষার বিষয়ে তৃণমূল সাংসদের করা অতি প্রাসঙ্গিক এই লিখিত প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন স্মৃতি ইরানি। শুক্রবার, তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ ডিজিটাল সাক্ষরতা অভিযান প্রকল্পের অন্তর্গত ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পে গ্রামীণ এলাকার প্রতিটি বাড়িতে অন্ততপক্ষে একজনকে শিক্ষিত করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য গ্রামীণ এলাকার ছ কোটি বাড়ি বেছে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি বাড়ি থেকে একজনকে ডিজিটাল শিক্ষায় শিক্ষিত করা হচ্ছে। ২০২২ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করা হবে। এই কাজের জন্য গোটা দেশে দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতকে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতে ২০০ থেকে ৩০০ জনকে এইভাবে শিক্ষিত করে তোলা হবে। গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের, বিশেষত সমাজের প্রান্তিক শ্রেণীর মহিলাদের শিক্ষিত করে তোলা সরকারের উদ্দেশ্য। ডিজিটাল শিক্ষায় শিক্ষিতরা সহজেই কম্পিউটার, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন। তাঁরা ইন্টারনেটের ব্যবহার, ইমেল পাঠানো এবং ইমেল আসলে তা দেখতে শিখবেন। ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাঁরা সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা জানতে পারবেন। সরকারের যে সমস্ত প্রকল্প রয়েছে সে সম্পর্কে জানার পর তাঁরা দেশ গড়ার কাজেও হাত লাগাতে পারবেন।
কিন্তু যে ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়ার’ কথা মোদি সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বলছে, সেই ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় এখনও কেন মহিলাদের ডিজিটাল শিক্ষায় সম্পূর্ণ শিক্ষিত করে তোলা যায়নি তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।
আরও পড়ুন:আদিবাসী মহিলাদের ধন্যবাদ জানাতে ঝাড়গ্রাম সফরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী