রয়েল বেঙ্গল টাইগার’কে আটকাতে মরিয়া বিপ্লব, মিছিল না হলেও ত্রিপুরা যাচ্ছেন অভিষেক 

বাংলার ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’কে আটকাতে প্রশাসনিক ক্ষমতা ব্যবহার করল বিপ্লব দেব সরকার। কোভিড (Covid) পরিস্থিতি ও পুজোর অজুহাতে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে কোনও রাজনৈতিক মিছিল বা সভা করা যাবে না বলে হাইকোর্টে হলফনামা দেয় ত্রিপুরা সরকার। সরকারি সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়ে দেয় ত্রিপুরা হাইকোর্ট (Tripura High Court)। এই পরিস্থিতিতে বুধবার আগরতলায় বাতিল হল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নেতৃত্বে পদযাত্রা।

 

তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে আটকাতে নির্লজ্জতার সব সীমা পার করে আচমকা ৪ নভেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করে ত্রিপুরা সরকার। সঙ্গে মহামারী আইন। কোভিড পরিস্থিতির ধুঁয়ো তুলে ঠিক ২১ সেপ্টেম্বর তারিখ সকাল ছটা থেকে ৪ নভেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফলে, মিটিং-মিছিল নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। অথচ ১৫ সেপ্টেম্বর যখন মিছিলের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, তখন পুলিশের তরফ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে জানানো হয়, অন্য রাজনৈতিক দলের মিছিল রয়েছে। তাহলে হঠাৎ করে কোভিড পরিস্থিতির কী এমন অবনতি ঘটল যে ঠিক ২১ তারিখ সকাল ছটা থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করল ত্রিপুরা সরকার? এটা যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বে মহামিছিল আটকানোর ষড়যন্ত্র এখন তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার।

 

মূল বিষয় হল, আদালতের মঙ্গলবারের সিদ্ধান্তে বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিল হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল ছিল। কারণ, ত্রিপুরা হাইকোর্টের (Tripura High Court) তরফে সোমবার ত্রিপুরা সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিলের অনুমতি নিয়ে সরকার নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক। আদালতের হস্তক্ষেপে ২২ তারিখ মিছিল করার সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূলের বলে ইঙ্গিত মেলে। তৃণমূলের পক্ষের আইনজীবী বিশ্বজিৎ দেব জানান, যেখানে ১৫ তারিখ একটি মিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে আর্টিকাল 14-এর অধীন সমান অধিকারে তৃণমূলকেও মিছিল অনুমতি দেওয়া হোক এই আবেদন করতেন তাঁরা। সেক্ষেত্রে অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল প্রবল। বিপ্লব দেবের সরকার বুঝতে পেরেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে পদযাত্রার অনুমতি দিলে, ত্রিপুরার বুকে এক ঐতিহাসিক পদযাত্রা হবে। কারণ মানুষের সমর্থন তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে। ভয় পেয়েই সেই পদযাত্রায় বাধা দিতে মঙ্গলবার আদালতে নিজেদের অবস্থানের কথা জানায় তারা।

 

তবে, মিছিল না হলেও বুধবার সকালে ত্রিপুরা যাচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর আগরতলার জিঞ্জার হোটেলে তিনি সাংবাদিক বৈঠক করবেন। এরপর কী কর্মসূচি সেখান থেকেই জানিয়ে দেওয়া হবে।

 

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম মিছিল করার কথা ছিল ১৫ সেপ্টেম্বর আগরতলায়। সেই পদযাত্রা বাতিলের কারণ হিসেবে পুলিশ বলে, ওই একই দিনে, একই রুটে, একই সময়ে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি থাকায় তৃণমূলের মিছিল বাতিল করা হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, সেই সময় কোভিড ছিল না। অথচ ২২ তারিখ থেকে কোভিড ছড়িয়ে পড়বে? আর ৪ নভেম্বর পর্যন্ত সেটা সক্রিয় থাকবে! এটা যে তৃণমূলের মিছিলে আটকানোর ফন্দি তা একেবারেই স্পষ্ট বলে জানান তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডা: শান্তনু সেন বলেন, একজনকে আটকানোর জন্য সর্বশক্তি দিয়ে নেমে পড়েছে ত্রিপুরার বিজেপি সরকার। কারণ, তারা বুঝতে পেরেছে তাদের পায়ের তলার মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে। ত্রিপুরার মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন। ২২ তারিখের মহামিছিলের অনুমতি দিলে, তা ত্রিপুরার বুকে একটি ঐতিহাসিক মিছিল হবে। সেই আঁচ করতে পেরেই প্রশাসনিক ক্ষমতাকে কাজে লাগালেন বিপ্লব দেব। নিচের বাতিল হলেও, ত্রিপুরা যাবেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

advt 19

 

 

 

Previous articleপুজোর মুখে চন্দননগরে ভরদুপুরে ডাকাতি, পাকড়াও ৩
Next articleমহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে রাখী সাওয়ান্তের তুলনা, বিতর্কে যোগীরাজ্যের বিধানসভার স্পিকার