Wednesday, December 17, 2025

৭০০ কোটির প্যাকেজে চিরতরে বন্ধ দুটি কাগজ কল , নেতা-পুত্রের স্বার্থ দেখছেন হিমন্ত: সুস্মিতা

Date:

দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত কাগজ কল চিরতরে বন্ধ করে দিতে কফিনে শেষ পেরেক পুঁতল অসম সরকার। বন্ধ হয়ে যাওয়া নগাঁও ও কাছাড় কাগজকলের কর্মীদের বকেয়া বেতন, গ্র্যাচুইটি ও অন্যান্য পাওনা বাবদ ৫৭০ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ বোর্ডের বকেয়া বিল ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে মোট ৭০০ কোটি টাকার প্যাকেজের অনুমোদন দিল অসম মন্ত্রিসভা।
শুক্রবার সব মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে রীতিমতো রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব৷ তার সাফ কথা, “আসলে বিজেপির এক প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় নেতার ছেলে কাছাড় কাগজ কলের জমিতে ইথানল প্রকল্প করতে চাইছেন৷ সরকারি অর্থে সব ব্যবস্থা করে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা৷”
ইতিমধ্যেই কর্মী সংগঠনের যৌথ মঞ্চের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তের দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। বকেয়া বেতনের প্যাকেজ ও অন্যান্য শর্তে সম্মত হয়েছে দুই পক্ষই।

আরও পড়ুন- কমিশনের নয়া উদ্যোগ, এবার থেকে সচিত্র ভোটার পরিচয়পত্র পৌঁছে যাবে বাড়িতেই

মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে হিমন্ত জানিয়েছেন, কর্মী ও লিকুইডেটরের বকেয়া মেটানোর পরে দু’টি কাগজকলের মোট ৪৭০০ বিঘা জমি অসম সরকারের হবে। কিন্তু কেন বন্ধ করে দেওয়া হল দুটি কাগজ কল?
সেই জমিতে ইথানল কারখানা তৈরি করতে চান কোন নেতার ছেলে? এর জবাবে সুস্মিতার বক্তব্য , তিনি এমন নেতা, যাঁকে তুষ্ট করলে পরের বারের জন্যও হিমন্তর মুখ্যমন্ত্রিত্ব পাকা৷ সব বিধায়ক আপত্তি জানালেও, তিনিই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী রেখে দিতে পারবেন৷ হিমন্তের মূল লক্ষ্য এখন ২০২৬।

সুস্মিতার দাবি, উত্তর কাছাড় পার্বত্য জেলার সঙ্গে কাগজ কলের বাঁশ উৎপাদন ও কেনার যে বহু পুরনো চুক্তি রয়েছে, সেটা ব্যবহার করে সস্তা দরে বাঁশ কিনতে চাইছেন ওই নেতা-পুত্র৷ বাঁশ দিয়েই এখানে ইথানল তৈরি করবেন তিনি৷ যাকে বলে মাছের তেলে মাছ ভাজা।

কর্মচারী-অফিসারদের যৌথ মঞ্চ ৫৭০ কোটি টাকার প্যাকেজে সন্তোষ প্রকাশ করলেও সুস্মিতার প্রশ্ন , সরকারি তহবিল থেকে যদি ৫৭০ কোটি টাকা দেওয়াই হবে, তা হলে আগে তা ঘোষণা হল না কেন? নিলামের আগে এই কথা জানলে তো অনেকে আসতেন কাগজ কল কিনতে৷ সে ক্ষেত্রে তাঁরা কাগজই উৎপাদন করতেন৷ কারও চাকরি যেত না৷ রাজ্যসভার সদস্য জানান, বিষয়টি তিনি সংসদে তুলবেন। কর্মচারীদের সঙ্গে চুক্তি করেছেন বলেই হিমন্তকে যা খুশি করতে দেওয়া হবে না৷ মোদি জনসভায় দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেছিলেন মিল দু’টি ফের খোলা হবে৷ আর হিমন্ত জানিয়ে দিলেন, মিলগুলি আর খোলা হবে না৷

অদ্ভুতভাবে বিজেপির এই দ্বিচারিতা ও ভাঁওতাবাজির বিরুদ্ধে সবাই মুখে কুলুপ এঁটেছেন। যেন ভাবখানা এমন, এটা তো হওয়ারই ছিল। শিলচরের বিজেপি সাংসদ রাজদীপ রায় অবশ্য সুস্মিতার এই সন্দেহকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়েছেন৷ তার দাবি, বিজেপি সরকার যা করে, স্বচ্ছতার সঙ্গে করে৷ দুর্নীতি, স্বজনপোষণের স্থান নেই৷

 

Related articles

ব্যবসায়ী সম্মেলন: ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী 

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোগী ও ব্যবসায়ীদের সুবিধা-অসুবিধা নিয়ে সরাসরি আলোচনায় বসতে চলেছে রাজ্য। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে,...

অস্ট্রেলিয়ায় ইহুদি উৎসবে হামলা চালানো ‘বাবা’ ভারতীয়! জানালো তেলেঙ্গানা পুলিশ

সিডনির বন্ডি বিচে (Bondi Beach) ইহুদিদের হানুক্কা উৎসবে এলোপাথাড়ি গুলিতে অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু। এরপরেই শুরু হয় বন্দুকবাজদের...

যুবভারতীর ঘটনার জন্য দায়ী মেসি! বিশৃঙ্খলা নিয়ে বিস্ফোরক গাভাসকর

গত শনিবার যুবভারতীতে মেসি ইভেন্টে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা নিয়ে নানা মুণির নানা মত। এবার বিষয়টি...

সেলিম হলেন ব্রাহ্মণ! ভোটার তালিকায় CPIM সম্পাদকের পরিচয়ে ভুল, কটাক্ষ তৃণমূলের

নির্বাচন কমিশন প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকায় হাজারো ভুল। সঠিক তালিকা প্রকাশের তাড়াহুড়োয় উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপিয়েই খালাস...
Exit mobile version