Saturday, August 23, 2025
শরতের নীল আকাশ,শিউলির গন্ধ আর মিঠে রোদ্দুর-জানান দিচ্ছে পুজো আসছে। আকাশে বাতাসে এখন উৎসবের আমেজ।আর বাঙালির মনে পুজো পুজো গন্ধ। মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় ‘যা দেবী সর্বভূতেষু বিষ্ণুমায়েতি শব্দিতা।নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ শোনার অপেক্ষা। মহালয়ার ভোরের এই চণ্ডীপাঠ যেন বাঙালির পুজোর ঘণ্টা।
তবে ফ্ল্যাট বাড়িতে শিউলি গাছ নেই, আকাশ আর আগের মত নীল নয়, দূষণের কারনে অরুণ আলোও খানিকটা ফ্যাকাশে। চারপাশের শরতের আগমন বার্তাও খানিকটা ফিকে হয়েছে। তবে হ্যাঁ শপিং মলে, নিউমার্কেটে কেনাকাটা চলছে চুটিয়ে। তার সঙ্গে ডমিনোজ,পিজ্জা হাট আর কেএফসি-তে খাওয়াদাওয়াটাও নতুন যোগ দিয়েছে। হারিয়েছে মহালয়ার ভোরে শিউলি ফুল কুড়োনো আর রেডিও-তে বাণী কুমার রচিত,পঙ্কজ কুমার মল্লিকের সুরারোপিত এবং বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় পুজোর আগমনী শোনার আগ্রহ।
ব্যতিক্রম যদিও আছে। এই চণ্ডীপাঠকেই আয়ত্ত করেছেন নতুন প্রজন্মের কিছু তরুণ-তরুণী। বাঙালির এই চিরাচরিত সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার অদম্য ইচ্ছা ও আগ্রহকে সঙ্গে নিয়ে ১১জন মিলে বানিয়েছেন একটি টিম। যার মূল ভাবনায় রয়েছেন সায়ন্তন দে। তিনি নিজেই রপ্ত করেছেন বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের চণ্ডীপাঠ। সেইসঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশন,তবলা, পাখোয়াজ,কী-বোর্ড সবমিলিয়ে তাঁরা মহালয়ার দিন পরিবেশন করেন ‘‘মহিষাসুরমর্দিনী’-র ছায়া অবলম্বনে গানে মোর ইন্দ্রধনুর নিবেদন-“আগমনী আঙিনায়”।যা দেখতে ভিড় করে ৮ থেকে ৮০ সকলেই। শুধু তাই নয় পুজোর ক’টা দিন তাঁদের পুজো প্যান্ডাল থেকে শুরু করে ডাক পড়ে ভিন রাজ্যেও। ঠাকুর দেখতে গিয়ে অনেকেই স্তোত্র পাঠ শুনতে বসে পড়েন প্যান্ডালের সামনে রাখা চেয়ারে। যা স্বাভাবিকভাবেই “গানে মোর ইন্দ্রধনু”-টিমের সদস্যদের উৎসাহিত করে।
২০১৫ সাল থেকে “গানে মোর ইন্দ্রধনু” অনুষ্ঠান শুরু করে। প্রথম চলার পথ ততটা মসৃণ না হলেও শ্রোতা ও দর্শকদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়ে এখন তাঁরা বেশ সফল। পুজোর ক’টা দিন চরম ব্যস্ততার মধ্যে কাটে তাঁদের। কখনও এখানে কখনও ওখানে অনুষ্ঠানের ডাক পান তাঁরা। তবে গতবছর কোভিডের কারণে ছোট করে শুধুমাত্র মহালয়ার দিন বাড়িতেই অনুষ্ঠান সারতে হয়েছিল। এবছরও করোনা কাঁটা। তাই ঠিক টিমের সদস্যরা ঠিক করেছেন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেই অনুষ্ঠান করবেন। সেকারণেই নিজেদের ফেসবুক পেজে মহালয়ার দিন সকাল ৬টায় “গানে মোর ইন্দ্রধনু”-র অফিসিয়াল পেজেই লাইভ সম্প্রচার করবেন।
মহালয়ার ভোরে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের গলায় স্তোত্র পাঠ প্রায় অবলুপ্তির পথে হাঁটছে  সেইসময় তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে পাওয়া এধরণের অনুষ্ঠান আমাদের কাছে অনেকটাই বড় পাওনা।  তাঁদের এই গুণগত দিক রীতিমত প্রশংসনীয়। তাই এবারের মহালয়ায় আইপ্যাডে বা মুঠোফোনেই “গানে মোর ইন্দ্রধনু”-র ফেসবুক পেজে সায়ন্তন দে-র গলায় শুনুন ‘যা দেবী সর্বভূতেষু বিষ্ণুমায়েতি শব্দিতা ।নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমস্তস্যৈ নমো নমঃ’ ।

Related articles

বাংলা দখলে প্রধানমন্ত্রীর ‘হতাশার আর্তনাদ’! ভিডিও দেখিয়ে তোপ তৃণমূলের

বাংলার মানুষকে দিনের পর দিন বঞ্চিত রেখে বাঙালির কাছেই ভোট ভিক্ষা! বাঙালিকে একের পর এক রাজ্যে হেনস্থা করে...

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...
Exit mobile version