ত্রিপুরার গ্রাউন্ড রিপোর্টে ঘুম ছুটেছে বিজেপির, পুরভোটেও আসতে হচ্ছে অমিত শাহকে

জমি সামলাতে ত্রিপুরার পুরভোটেও আসতে হচ্ছে অমিত শাহকে। আগামী ২৫ নভেম্বর ত্রিপুরায় উপনির্বাচন। তেইশের বিধানসভার আগে এই নির্বাচন ত্রিপুরার প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার আগে ২১ নভেম্বর ত্রিপুরা আসছেন অমিত শাহ। আর অমিত শাহের সফর নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। বিরোধীরা বলছে, পুরনির্বাচনের আগে ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ত্রিপুরায় মাঠে নামতে হচ্ছে অমিত শাহকে।

সামান্য স্থানীয় নির্বাচনে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কেন ডাকতে হচ্ছে? যদিও অমিত শাহের ত্রিপুরা সফরকে বিজেপির তরফে অন্যভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। গেরুয়া শিবিরের বক্তব্য, পুর নির্বাচনের জন্য নয়। রাজ্যে ফরেন্সিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্যান্যাস করতে আসছেন অমিত শাহ। এই সফরের সঙ্গে পুরভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। এবং পুর এলাকার বাইরেই হবে এই শিলান্যাস।

কিন্তু শিলান্যাসের জন্য ত্রিপুরা ভোটের সময়টাকেই কেন বেছে নিলেন অমিত শাহ? জানা গিয়েছে, বাইরের জেলায় শিলান্যাস অনুষ্ঠান থাকলেও অমিত শাহ আগরতলার হোটেলে থাকবেন। সেভাবেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবে অমিত শাহের মত নেতার আগরতলায় দু’দিন থাকা মানে তা ঘুরিয়ে পুরভোটেরই প্রচার। এবং ত্রিপুরা বিজেপি নেতৃত্ব চাইছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে দিয়ে একটি অন্তত সভা করাতে।

কারণ, ওই সময় পুরভোটের প্রচারে ঝাঁজ বাড়াতে তৃণমূল সমস্ত শক্তি লাগিয়ে দেবে। স্থানীয় নেতৃত্বের পাশাপাশি কলকাতা থেকেও হেভিওয়েট নেতারা আসবেন পুরভোটের প্রচারে। ফলে পুরভোটে জৌলুস হারাবে বিজেপির প্রচার। সেক্ষেত্রে পুরভোট নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত বিজেপির হয়ে
প্রচার চালিয়ে দলকে উজ্জীবিত করতে পেতেন অমিত শাহ। এবং ঠিক পুরভোটের সময়ে সরকারি কর্মসূচি নিয়ে ত্রিপুরায় অমিত শাহের আসার কারণও সেটি বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন:স্বাস্থ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকেও আরজিকরের চিকিৎসক পড়ুয়াদের অনশন তোলার সমাধান সূত্র অধরা

একই সঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের গত কয়েক মাসে একের পর এক ত্রিপুরা সফরে চরম ব্যাকফুটে বিজেপি। পুরভোটের আগে তাই কেন্দ্রের একজন হেভিওয়েট নেতাকে পাশে চাইছে ত্রিপুরা বিজেপি নেতৃত্ব। এছাড়া ত্রিপুরার গ্রাউন্ড রিপোর্ট এবং গোয়েন্দা রিপোর্ট বলছে, আগরতলা-সহ পুর এলাকাগুলিতে যথেষ্ট চাপে রয়েছে বিজেপি। সেই খবর পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি নেতৃত্ব পর্যন্ত। তাই তেইশের হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুরভোটে যাতে বড়সড় কোনও বিপর্যয় না ঘটে যায়, সেই কারণেই সরকারি কর্মসূচির নামে আসলে ত্রিপুরায় ড্যামেজ কন্ট্রোলে আসছেন অমিত শাহ।

যদিও রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে আসা তৃণমূল অমিত শাহের এই সফরকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। ত্রিপুরা প্রদেশ তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে শুধু অমিত শাহ নয়, খোদ নরেন্দ্র মোদিও ডেইলি প্যাসেঞ্জারি করেও বাংলায় বিজেপিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি। ত্রিপুরাতেও সেই সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। নিঃশব্দ বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন ত্রিপুরাবাসী।

Previous articleরোনাল্ডোর দেখানো পথে হাঁটলেন ওয়ার্নার, সরিয়ে দিলেন ঠান্ডা পানীয়র বোতল
Next articleপ্রায় ৬ মাস পর চালু হচ্ছে লোকাল ট্রেন, সঙ্গে বেশ কিছু শিথিলতা