বামফ্রন্টে বিদ্রোহ। বিদ্রোহ জোট নিয়ে। বামফ্রন্টের বৈঠকে সোমবার ফরোয়ার্ড ব্লক রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় সাফ জানিয়ে দিলেন, কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁরা কোনওরকম জোট চান না। সিপিএম যদি জোট নিয়ে বাড়াবাড়ি রকমের চাপ দেয়, তাহলে বামফ্রন্ট ভেঙে ফরোয়ার্ড ব্লক বেরিয়ে আসবে। ইতিমধ্যে সিপিএমের পক্ষে দলের বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু পুরভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ জোটের পক্ষে সওয়াল করে বসে আছেন। অন্যদিকে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী আর এক কদম এগিয়ে বলেছেন, আসন রফা নিয়ে দু’পক্ষের আলোচনা হওয়া প্রয়োজন। আরএসপিও ফরোয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে এই ইস্যুতে জোট বেঁধেছে। ফলে ফ্রন্টে শরিকি বিদ্রোহে কার্যত বেসামাল বড় শরিক সিপিএম।

আরও পড়ুন- Eden Garden: ভারত-নিউজিল্যান্ড ম্যাচে ইডেনে অভিনব আলোকসজ্জায় ‘বুর্জ খলিফা’র ছোঁয়া!
নরেন চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট বলেছেন, কংগ্রেস নিয়ে আমাদের আপত্তির কথা বলেছি। বামফ্রন্ট একা লড়াই করবে। তাতে বিধানসভার চাইতে তো আর খারাপ ফল হবে না! ঘুরিয়ে নাক দেখানোর ভঙ্গিতে সিপিএম রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তী কংগ্রেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ জোটের পক্ষে সওয়াল করেছেন। সুজনের বক্তব্য, পুরভোট বা পঞ্চায়েত ভোটে সাধারণত জেলা পার্টি বা জেলা বামফ্রন্ট সিদ্ধান্ত নেয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, বামফ্রন্টে নেই এমন দলের সঙ্গে সমঝোতা হয়। সেইসব জেলায় কংগ্রেসও অংশ নেবে। কোনও বিতর্ক তৈরি হলে রাজ্য পার্টি সেখানে অংশ নেয়। এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শরিক দলের দুই নেতা সোমবার বলেন, এটা আসলে চাপে পড়ে রাজ্য থেকে জোট না করে জেলায় জেলায় জেলায় কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করার কৌশল। সিপিএমের বক্তব্য হবে, জেলা চাইলে আমরা কী করব! জেলার কোর্টে বল ফেলে অযথা পরিস্থিতি জটিল করে বামফ্রন্ট ভাঙার রাস্তা তৈরি হচ্ছে।

ফলে কলকাতা ও হাওড়া পুরসভা ভোটে বেজায় মুশকিলে সিপিএম। এমনিতেই সিপিএম-কংগ্রেসের পুরভোটে ‘শূন্য হাতে ফিরি হে নাথ’ হওয়ার মতো পরিস্থিতি। বিধানসভার শেষ উপনির্বাচনে একা লড়ে সিপিএমের ভোট বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। অন্যদিকে কংগ্রেস নেমে গিয়ে এক শতাংশে। ফলে অধীর চৌধুরী মুখরক্ষা করতে জোটে মরিয়া। আর সিপিএম অন্তত গোটা পাঁচেক আসন জিতে মুখরক্ষায় মরিয়া। মাঝখানে বাধ সেধেছে শরিকরা। কিন্তু এতে বামফ্রন্ট ভেঙে যাওয়ার মুখে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাম-শরিকদের বিদ্রাহ আসলে ঘরের ছোট ছেলের জেদ। বাবার বকুনি খেলেই সিধে হয়ে যাবে।
